আফ্রিকা-চীন
১০ জুন ২০১২ইসমাইল ম্রিশো দীর্ঘদিন ধরে চীনাদের সঙ্গে কাজ করছেন৷ তার অভিজ্ঞতা বেশ ইতিবাচক৷ তানজানিয়ার এই ভদ্রলোক বেশ কয়েক বছর ধরে একটি চীনা কোম্পানিতে কাজ করছেন৷ কোম্পানিটি চীন থেকে রসুন আমদানি করে এবং আফ্রিকার অন্যান্য দেশে তা রপ্তানি করে৷ ৩৫ বছর বয়সী ম্রিশো যখন তার বন্ধুদের তার কাজের বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তখন তাকে সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়৷ তাকে বেশ কয়েকবার শুনতে হয়েছে, ‘‘আমাদের দেশের রসুন বাদ দিয়ে চীন থেকে রসুন কেন আনতে হবে?'' কিন্তু ম্রিশোর কাছে পুরো বিষয়টি দেখা দিয়েছে অন্যভাবে৷ চীনের রসুনগুলো আকারে বড় আর ঠিক এ কারণেই এর চাহিদা আফ্রিকার দেশগুলোতে বেশি৷ ক্রেতারা রসুন কিনতে আসলেই চীনা রসুন আছে কিনা জিজ্ঞাস করে৷
চীনাদের সঙ্গে কাজ করা প্রসঙ্গে ম্রিশো জানান, ‘‘আমার বস খুবই খোলামেলা ধাঁচের মানুষ৷ আমরা বেশ কয়েকবার একসঙ্গে বাইরে খেতে গিয়েছি, কফির আড্ডা দিয়েছি৷ আমার যখনই কোন সমস্যা হয় তখনই আমি তাকে বুঝিয়ে বলি৷ আমার বস সবয়মই আমাকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছে৷ আমার সমস্যা বোঝার চেষ্টা করেছে৷''
তবে অনেকেই পুরোপুরি অন্য ধরণের কথা বলেছে৷ অনেকেরই রয়েছে চীনাদের সঙ্গে কাজ করার তিক্ত অভিজ্ঞতা৷ অনেকেই মনে করে যে চীনারা আফ্রিকায় এসেছে শুধু ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে৷ যখন তারা ব্যবসায় অত্যন্ত সফল হবে তখন সবকিছু গুটিয়ে ফিরে যাবে চীনে৷
চীনাদের বিরুদ্ধে এক ধরণের মনোভাব তৈরি হয়েছে আফ্রিকার মানুষের মধ্যে৷ কথাগুলো জানান সুইজারল্যান্ডের লোসান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক কেটি লাম৷ তিনি জানান,‘‘অনেকেই মনে করে যে এসব চীনাকে জোর করে তাদের সরকার আফ্রিকায় পাঠিয়েছে৷ অথচ তা মোটেই সত্যি নয়৷'' দীর্ঘদিন ধরে ঘানা এবং বেনিনে কাজ করেছেন কেটি লাম, ঘুরে বেড়িয়েছেন, সেসব দেশের মানুষের সঙ্গে মিশেছেন, তাদের মতামত জেনেছেন৷ কথা বলেছেন চীনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও৷ তিনি জানান, এসব চীনা নিজ খরচে, দায়িত্বে এবং নিজ ঝুঁকিতে এসেছে আফ্রিকায় ব্যবসা করতে৷ তাদের সরকার কখনোই তাদের সাহায্য বা সহযোগিতা করেনি৷
তবে ভাষা না জানা এবং সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় না থাকায় অনেক চীনাই শেষ পর্যন্ত আফ্রিকায় ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারেনি৷ কয়েক বছর চেষ্টা করার পর তারা সত্যিই ফিরে গেছে নিজ দেশে৷
প্রতিবেদন: আজ্রিয়ান ক্রিশ/মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন