আশ্রয়নীতিতে বদল চায় জার্মানি
৩০ জুন ২০২০জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে ৮ কোটি মানুষ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে শরণার্থী হিসাবে রয়েছেন৷ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এইসব শরণার্থী পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট নিয়মনীতি মেনে চলে৷ ডাবলিন চুক্তি অনুযায়ী, শরণার্থীরা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের যে দেশে প্রথম পা রাখেন, সেই দেশেই রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করতে পারেন তারা৷ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সেই দেশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হয় ইটালি বা গ্রিস৷ কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে এই নীতির কারণে নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে৷
জার্মানির অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সম্প্রতি বলেন, ‘‘বর্তমান যে আশ্রয় ব্যবস্থা রয়েছে তা আর কার্যকরী হচ্ছে না৷ এটা শুধরোতে আমাদের ছোটখাট ব্যবস্থা নিলে চলবে না৷ নতুন করে ভাবনা শুরু করতে হবে আমাদের৷’’
জার্মানি কী চাইছে?
শরণার্থী পরিচালনার দায়ভার নৈতিকভাবে সমান করে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলিতে ভাগ করে দেবার পক্ষে রয়েছে জার্মানি৷ ২০১৬ সালে এমন একটি প্রস্তাব করা হলে তা পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্র ও স্লোভাকিয়া নাকচ করে দেয়৷
খুব শিগগিরই, ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সভাপতিত্ব পেতে চলেছে জার্মানি৷ এবং তখনই নতুন করে এই প্রস্তাব আনা হবে, জানাচ্ছে জার্মান নেতৃত্ব৷ জার্মানির অভিবাসন দপ্তরের চেয়ারম্যান মেমেট কিলিচ বলেন, ‘‘আমরা জার্মান সরকারকে অনুরোধ করছি, এই সভাপতিত্বের সময়টি যাতে ইউরোপে শরণার্থী পরিচালনায় সামূহিক দায়ভারগ্রহণের কাজে লাগানো হয়৷’’
এবিষয়ে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফারও জানিয়েছেন যে তিনি ইউরোপের সীমান্তে শরণার্থী সেন্টার নির্মাণের পক্ষে৷ তাঁর মতে, কেবল যাদের কাছে আশ্রয় পাবার জোরালো কোনো কারণ থাকবে, তাদেরই যাতে ইউরোপে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়৷
কিন্তু বিভিন্ন বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যারা শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করেন, তারা এই প্রস্তাবে অখুশি৷ ভিবকে ইউডিথ প্রো আজিউর সংগঠনে কর্মরত৷ তিনি মনে করেন যে এই নীতি সব আশ্রয়প্রার্থীকে সমান মাপকাঠিতে রাখতে অক্ষম হবে৷ পাশাপাশি, এই নীতি আশ্রয় প্রক্রিয়াকে অপ্রয়োজনীয় দীর্ঘ ও সময়সাপেক্ষ করে তুলতে পারে৷
দেশের ভেতরেও এবিষয়ে রয়েছে মতানৈক্য৷ অন্য দিকে রয়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চাপ৷ সব মিলিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে জার্মান প্রতিনিধি মাইকেল ক্লাউজের বক্তব্য,‘‘আমাদের এতদিনের পরিকল্পনা অনুসারে হয়ত চলবে না৷’’
ক্রিস্টফ হাসেলবাখ/এসএস