ইইউ নাগরিকরা ব্রিটেনেই থাকবেন?
২৩ জুন ২০১৭নির্বাচনের আগের ঔদ্ধত্য, কড়া মনোভাব, কঠিন মুখচ্ছবি ছেড়ে একেবারে অন্য এক রূপে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে৷ ব্রেক্সিট গণভোটের প্রায় এক বছর পর অনেক কিছু বদলে গেছে৷ ‘হার্ড ব্রেক্সিট' বা ইইউ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছেদের অঙ্গীকার করার মতো ক্ষমতা তিনি হারিয়েছেন৷ বাকিদের উপর ব্রিটেনের একার আবদার চাপিয়ে দেওয়ার শক্তিও তাঁর নেই৷ বিভিন্ন মহলের চাপের মুখে তিনি সুর নরম করতে বাধ্য হয়েছেন৷
ইইউ-র সঙ্গে বিচ্ছেদের পাশাপাশি দুই পক্ষের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে সমান্তরাল আলোচনার দাবি করে আসছিলেন টেরেসা মে৷ কিন্তু ইইউ সবার আগে বিচ্ছেদের বিষয়টি চূড়ান্ত করার বিষয়ে অটল৷ বিশেষ করে ব্রিটেনে বসবাসরত প্রায় ৩০ লক্ষ ইইউ নাগরিক ও ইইউ দেশগুলিতে বসবাসরত প্রায় ১০ লক্ষ ব্রিটিশ নাগরিকের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে স্পষ্ট অবস্থান চাইছিল ব্রাসেলস৷ এই অবস্থায় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব, ইইউ নাগরিকরা স্বচ্ছন্দে ব্রিটেনে বসবাস করতে পারেন, ব্রিটিশ নাগরিকরাও যেন ইউরোপে একই অধিকার পান৷ এমনকি ইইউ নাগরিকরা চাইলে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেতে পারেন৷ তবে কিছু বিষয় নিয়ে জটিলতা থেকে যেতে পারে৷
ইউরোপীয় কমিশন এখনো এই প্রস্তাব সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি৷ তবে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, সূচনা ভালোই হয়েছে৷ তবে আরও অনেক কাজ বাকি রয়েছে৷ যেমন ব্রিটেনের বকেয়া অর্থ হিসাব করতে হবে৷ আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্তের বিষয়টিরও বোঝাপড়া করতে হবে৷
লন্ডনে অবস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের দুটি দপ্তরকে সরিয়ে আনার বিষয়টিও বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে৷ ভোটাভুটির মাধ্যমে এই দুই দপ্তরের নতুন অবস্থান স্থির করা হবে৷
চ্যান্সেলর ম্যার্কেল এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, ব্রেক্সিট আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ হলেও ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে আরও অনেক জরুরি বিষয় রয়েছে৷ ২৭টি সদস্য দেশের মধ্যে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাসহ অন্যান্য বিষয়ে আরও সমন্বয়ের উদ্যোগ বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে৷
উল্লেখ্য, এতকাল ব্রিটেন প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে সমন্বয়ে বাধা সৃষ্টি করে আসছিল৷ সন্ত্রাসবাদ দমন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা, মুক্ত বাণিজ্য, কর্মসংস্থান, শরণার্থী সংকট ইত্যাদি বিষয়ও এবারের সম্মেলনে আলোচিত হচ্ছে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)