নতুন সরকার গঠন করবেন টেরেসা মে
৯ জুন ২০১৭বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, কনজারভেটিভ দল পেয়েছে ৩১৮টি আসন৷ ৬৫০ আসনের ব্রিটিশ সংসদের একটিমাত্র আসনের ফল ঘোষণা এখনও বাকি৷ ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে দলটি যে ৩২৬ আসন পাচ্ছে না তা নিশ্চিত৷
সরকার গঠনের লক্ষ্যে কনজারভেটিভ পার্টি উত্তর আয়ারল্যান্ডের ‘ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি’র (ডিইউপি) সঙ্গে আলোচনা করেছে৷ দলটি আসন পেয়েছে ১০টি৷ সরকার গঠনের অনুমতি নিতে বাকিংহ্যাম প্যালেসে গিয়েছিলেন টেরেসা মে৷ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়ার পর ডাউনিং স্ট্রিটে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন৷ এই সময় তিনি দেশে নিশ্চয়তা ফিরিয়ে আনার অঙ্গীকারের কথা জানান৷ ডিইউপি’কে সঙ্গে নিয়ে তাঁর দল ব্রেক্সিটের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ ব্রেক্সিটের নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে চলার কথাও জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী৷
গত এপ্রিলে টেরেসা মে মধ্যবর্তী নির্বাচনের ডাক দিয়েছিলেন৷ তখনকার জরিপ অনুযায়ী, কনজারভেটিভ দলের অবস্থান বিরোধী লেবার পার্টির চেয়ে বেশ ভালো ছিল৷ কিন্তু নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে এসেছে দুই দলের মধ্যকার ব্যবধানও কমেছে৷
ব্রেক্সিট আলোচনা শুরু নিয়ে সংশয়
টেরেসা মে’র কনজারভেটিভ দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর ব্রিটেন সময়মত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রেক্সিট আলোচনা শুরু করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ইইউ নেতারা৷
তবে তাঁরা ব্রিটেনকে সময় নষ্ট না করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ ১৯ জুন দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা৷
ইইউ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক টুইটারে লিখেছেন, ‘‘আমরা জানি না কব ব্রেক্সিট আলোচনা শুরু হবে৷ তবে কবে সেটি শেষ করতে হবে তা জানি৷ ‘নো ডিল’ এড়াতে আপনাদের সেরা চেষ্টাটা করুন৷’’
ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জ্য-ক্লঁদ ইয়ুংকারও ব্রিটেনকে আলোচনা শুরু করতে দেরি না করার আহ্বান জানিয়েছেন৷
এর আগে শুক্রবার সকালে ইউকে ফেডারেশন অফ স্মল বিজনেস (এফএসবি) ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রেক্সিট আলোচনা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে৷ তবে জার্মানির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ব্রেক্সিট আলোচনা শুরু নিয়ে সময় অপচয় করা সম্ভব নয়৷ জার্মানির প্রচারমাধ্যম জেডডিএফকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্রেক্সিট বিষয়ক প্রধান আলোচক মিশেল বার্নিয়ে অবশ্য বলেছেন, ব্রেক্সিট আলোচনা তখনই শুরু করা উচিত যখন যুক্তরাজ্য এর জন্য প্রস্তুত হবে৷
স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন কমেছে
স্কটল্যান্ডে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি, এসএনপির আসনসংখ্যা প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমেছে৷ ৫৯টি আসনের মধ্যে গত সংসদে এসএনপির ৫৬টি আসন ছিল৷ এবার সেটা হয়েছে ৩৫৷ ফলে ফার্স্ট মিনিস্টার এসএনপি পার্টির নিকোলা স্টার্জন স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার জন্য আরেকটি গণভোট আয়োজনের যে পরিকল্পনা করেছিলেন তা থেকে হয়ত তাঁকে সরে আসতে হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ গত বছর অনুষ্ঠিত ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের পর স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো গণভোট অনুষ্ঠানের জোর দাবি উঠেছিল৷ কারণ স্কটল্যান্ডের অধিকাংশ ভোটারই ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন৷ উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম গণভোটে ৫৫ শতাংশ ভোটার স্বাধীনতার বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন৷
তিন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কন্যার জয়
ব্রিটেনের নির্বাচনে এবার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ১৪ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন৷ এর মধ্যে জয় পাওয়া তিনজন সবশেষ সংসদেও সদস্য ছিলেন৷ তিনজন হলেন টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক, রুশনারা আলী ও রূপা হক৷ এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ এবার তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীকে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন৷ গতবার ব্যবধান ছিল দেড় হাজার৷
রেকর্ড নারী সাংসদ
এদিকে, ব্রিটেনে এবার অন্তত ২০০ জন নারী সাংসদ নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন, যা একটি রেকর্ড৷ সবশেষ সংসদে ১৯৬ জন নারী সাংসদ ছিলেন৷
আপনার কোন মতামত থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷
জেডএইচ/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ)