1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ইউক্রেনের ক্ষত এখনো সারেনি'

ব্যার্ন্ড ইয়োহান/এসি২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

এক বছর আগে কিয়েভের ‘ময়দানে' যে অপরাধ ঘটেছিল, আজও তার বিচার হয়নি৷ ইউক্রেনীয়রা একটি দুর্নীতিপরায়ণ প্রশাসনকে বিতাড়ন করেছে, কিন্তু আজও সুন্দর জীবনের অপেক্ষায় – বলে ব্যার্ন্ড ইয়োহান-এর অভিমত৷

https://p.dw.com/p/1Efzb
Gedenkmarsch für die Opfer des Aufstands auf dem Maidan in Kiew
ছবি: S. Gallup/Getty Images

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের মানুষ একটি স্বেচ্ছাচারী, দুর্নীতিপরায়ণ সরকারকে পরাজিত করে৷ তারা গণতন্ত্র এবং স্বদেশের জন্য একটি ইউরোপীয় ভবিষ্যৎ বেছে নেয়৷ কিন্তু আজ এক বছর পরে, মানবমর্যাদা এবং আত্মনির্ধারণের জন্য তাদের সংগ্রাম এক নতুন ও আরো বেশি শক্তিশালী শত্রুর সম্মুখীন: রাশিয়া৷

ইউক্রেন গণতন্ত্রের দিকে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় ক্রেমলিন ইউরোপের বুকে যুদ্ধের অবতারণা ঘটিয়েছে৷ ইউক্রেন যে একটি ইউরোপীয় দেশ হয়ে উঠুক, তার নাগরিকরা যে গণতন্ত্র, সমৃদ্ধি এবং সবচেয়ে বড় কথা, শান্তিতে বাস করুক, মস্কো সেটা যে কোনো মূল্যে রুখতে চায়৷

মাসের পর মাস ধরে লক্ষ লক্ষ ইউক্রেনীয় প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ-এর স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায় – চরম শীত ও সরকারি তরফে নির্মম নিপীড়ন সহ্য করে৷ শেষমেষ পরিবর্তন আসে৷ কর্তৃপক্ষ হার স্বীকার করে রাশিয়ায় পলায়ন করে৷ রাশিয়া আজ পর্যন্ত সেই প্রতিবাদ আন্দোলনকে একটি ‘কু' বা সামরিক অভ্যুত্থান বলে মিথ্যাচার করে আসছে৷

Deutsche Welle REGIONEN Osteuropa Ukrainisch Bernd Johann
ডয়েচে ভেলের ব্যার্ন্ড ইয়োহানছবি: DW/P. Henriksen

কিন্তু বাস্তবে সেই শাসনপদ্ধতি ভিতর থেকেই ভেঙে পড়ে৷ অন্তে ইয়ানুকোভিচ-এর নিরাপত্তা বাহিনী আদেশ মানতে অস্বীকার করে, যার ফলে কাপুরুষ স্বৈরাচারী পলায়ন করতে বাধ্য হয়৷ অভ্যুত্থান নয়, ইয়ানুকোভিচ-এর পলায়নের অনেক পরে সংসদ তাকে ক্ষমতাচ্যুত বলে ঘোষণা করে৷

বিষাদ ও ক্রোধ, যুদ্ধ ও হিংসা

ইউক্রেনের ঘটনাবলীর প্রতি মস্কোর প্রতিক্রিয়া ছিল আগ্রাসন এবং সহিংসতা৷ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘণ করে রাশিয়া গত বছরের মার্চ মাসে ক্রাইমিয়া উপদ্বীপ দখল করে এবং পূর্ব ইউক্রেনে যুদ্ধের অবতারণা ঘটায়৷

ইয়ানুকোভিচ-এর পর রাশিয়া ইউক্রেনীয়দের মর্যাদা এবং আত্মনির্ধারণের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে৷ এই পটভূমিতে ইউক্রেনীয়রা তথা আন্তর্জাতিক নেতৃবর্গ গত রবিবার মিছিল করে এক বছর আগের ময়দান আন্দোলনের কথা স্মরণ করেন, যখন স্বাধীনতার দুয়ার উন্মুক্ত করা হয়েছিল৷

ইউক্রেনীয়রা বিশেষ করে সেই শতাধিক মানুষের কথা স্মরণ করেন, যারা ময়দান প্রতিবাদ আন্দোলন চলাকালীন স্নাইপারের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন৷ কিন্তু তাদের বিষাদের সঙ্গে মিশেছে ক্রোধ৷ সেই ক্রোধের লক্ষ্য প্রধানত তাদের নিজেদের সরকার৷

আজ পর্যন্ত স্পষ্ট নয়, কারা জনতা এবং পুলিশের দিকে গুলি চালিয়েছিল৷ কারা ছিল সেই অপরাধীরা? কারা তাদের ময়দানে রক্তস্রোত বওয়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল? নিহতদের স্বজন-পরিবার আজও উত্তরের অপেক্ষায়৷ ইউক্রেনের আইন ব্যবস্থা তদন্তে ব্যর্থ হয়েছে – পড়ে রয়েছে শুধু উন্মুক্ত ক্ষত৷

মর্যাদার জন্য সংগ্রামে এখনও বিজয় আসেনি

গত বছরের প্রতিবাদ আন্দোলনের পর দেশ আজ পূর্ব ইউক্রেনের যুদ্ধে যে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, তাদের জন্য শোক করছে৷ দশ লক্ষের বেশি মানুষ গৃহহারা হয়ে সাময়িক আশ্রয়ে মাথা গুঁজেছে৷ তাদের স্বদেশ আজ যুদ্ধবিধ্বস্ত৷

মাঝখান থেকে ইউক্রেন সরকার এবং প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেঙ্কো ক্রমেই আরো বেশি চাপের মুখে পড়ছেন৷ মস্কোর দ্বারা পরিচালিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী পরাজয়ের পর পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে৷ সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি এবং ভারী অস্ত্রশস্ত্র অপসারণের চুক্তি শেষমেষ সফল হবে কিনা, তা-ও কেউ জানে না৷

বহু ইউক্রেনীয় এখনও পোরোশেঙ্কো ও তাঁর সরকারের বিজয় প্রত্যাশা করছেন – কিন্তু দুঃখজনক সত্য হলো, রাশিয়া এমন এক বলশালী প্রতিপক্ষ, যাকে পরাজিত করার আশা ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর পক্ষে অলীক৷ ময়দানো যেমন দেখা গেছে: ইউক্রেনের শক্তি হলো তার জনসাধারণ, যারা সংগঠিত হয়ে রাজনৈতিক মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারে৷ জনতার এই সাহসকেই ভয় করবে রাশিয়া৷ সুশীল সমাজ এমন একটি শক্তি, যা একদিন শুধু ইউক্রেনে নয়, রাশিয়াতেও জয়ী হবে৷

ময়দানের বিক্ষোভকারীদের বহু দাবি আজও পূর্ণ হয়নি: অর্থনৈতিক সংস্কারের দাবি; নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ সৃষ্টির দাবি; দুর্নীতির অবসান৷ ইউক্রেনের ক্ষমতাশীল ব্যক্তিরা আজও দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি কবজাগত করে রাখতে পেরেছেন৷ এক বছর আগে ময়দানে এর বিরুদ্ধেও মাথা তুলেছিল ক্ষুব্ধ জনতা – দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেনীয়দের সংগ্রাম আজও অসমাপ্ত৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য