ইউনেস্কো ছাড়লো ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র
১ জানুয়ারি ২০১৯২০১৮ সাল শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউনেস্কোর সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কও শেষ হয়ে গেল৷ তাদের সঙ্গে ইসরায়েল বিরোধিতার অভিযোগ তুলে ইউনেস্কো ছাড়লো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও৷
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বৈষম্যের নীতি গ্রহণ করেছে ইউনেস্কো৷ ইসরায়েল রাষ্ট্র ও ইহুদিদের ঘৃণা করে, এমন লোকরা ইতিহাস বিকৃতিতে সংস্থাটিকে কাজে লাগাচ্ছে৷''
২০১৭ সালে ঘোষণা দিলেও ইউনেস্কোর নিয়ম অনুযায়ী, কোনো সদস্য পদ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিলে সে ঘোষণা কার্যকর হয় পরের বছরের শেষে৷ ফলে, না চাইলেও আরো এক বছর ইউনেস্কোর সদস্য থাকতে হয় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রকে৷
১৯৪৯ সালে ইউনেস্কোতে যোগ দেয় ইসরায়েল৷ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ প্রকল্পের জন্য বিশ্বজুড়ে সমাদৃত সংস্থাটি৷ বিভিন্ন দেশে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ঘোষণা ও ঐতিহ্য রক্ষায় সংস্থাটির ভূমিকা অনস্বীকার্য৷ তবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, নারীর শিক্ষা এবং জঙ্গিবাদ ও ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধেও কাজ করে থাকে সংস্থাটি৷
ইসরায়েলে নয়টি বিশ্ব ঐতিহ্য রয়েছে৷ এর মধ্যে হাইফা অঞ্চলের বাহাই গার্ডেন, মৃত সাগরের পাশে মাসাদার বিবলিক্যাল নিদর্শন এবং তেল আবিবের হোয়াইট সিটি উল্লেখযোগ্য৷
তবে ঝামেলা বাঁধে যখন পূর্ব জেরুসালেমের পুরোনো শহরকে কোনো রাষ্ট্রের অধীনে না দেখিয়ে অন্তর্ভূক্ত করা হয় বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায়৷ এছাড়া, ফিলিস্তিনি সীমানার মধ্যে থাকা তিনটি নিদর্শনকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে৷
তবে ইসরায়েলের সদস্যপদ থাকা না থাকায় সংরক্ষিত নিদর্শনগুলোর ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না৷ ঐতিহ্যগুলোর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার দায়িত্ব স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ওপর ন্যস্ত৷ ইউনেস্কোতে না থাকলেও বিশ্ব ঐতিহ্য কনভেশনের সদস্য ঠিকই থাকছে ইসরায়েল৷
ইসরায়েলের কিছু সংরক্ষণবিদ অবশ্য দেশটির এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিমত জানিয়েছেন৷ সম্প্রতি ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সংরক্ষণের আবেদন করা স্থপতি জিরোয়া সোলার বলছেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক৷ আমি ইউনেস্কোর অনেক সিদ্ধান্তের সাথে একমত হই না৷ কিন্তু এই সংস্থা ত্যাগ করায় অন্য কাউকে না, আমরা নিজেদেরকেই শাস্তি দিচ্ছি৷ ইউনেস্কো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে না, যেসব দেশ ভোট দেয়, তাঁরা দেশটির বিপক্ষে৷''
তানিয়া ক্র্যামার/এডিকে