ইয়েমেনে এগিয়েই চলেছে হুতি বিদ্রোহীরা
৬ এপ্রিল ২০১৫পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ আগে থেকেই বলে আসছেন, সৌদি আরবের সার্বভৌমত্বের প্রতি কোনো রকমের হুমকি দেখা দিলে তা প্রতিহত করায় সক্রিয় সহযোগিতা দেবে পাকিস্তান৷ চলমান ইয়েমন সংকটে পাকিস্তানকে পাশে চেয়েছে সৌদি আরব৷ পাকিস্তানে এমনিতেই শিয়া-সুন্নি বিরোধ লেগেই আছে৷ সংখ্যাগুরু সুন্নিদের হামলায় শিয়াদের নিহত হওয়ার খবর প্রায়ই স্থান পায় সংবাদ মাধ্যমে৷ বর্তমান সরকারের আশঙ্কা, ইয়েমেনে শিয়াদের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব জোটের বিমান হামলায় অংশ নিলে পাকিস্তানে জাতিগত বিরোধ আরো বাড়বে৷ এছাড়া সুন্নি প্রধান দেশ সৌদি আরবের পাশে দাঁড়ালে প্রতিবেশী, শিয়া প্রধান দেশ ইরান ক্ষুব্ধ হতে পারে- এই আশঙ্কাকেও অগ্রাহ্য করতে পারছেনা নওয়াজ শরিফ সরকার৷ সৌদি আরবের চাহিদা অনুযায়ী যত দ্রুত সম্ভব আরব জোটের বিমান বাহিনীর জন্য যুদ্ধবিমান, যু্দ্ধ সরঞ্জাম এবং সৈন্য পাঠানো ঠিক হবে কিনা, এ নিয়ে সোমবার পাকিস্তানের সংসদে বিতর্ক চলছে৷
এদিকে গত ১১ দিন ধরে মিত্র দেশগুলোকে নিয়ে সৌদি আরব হুতি বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা শুরু করলেও হামলায় তেমন কোনো কাজ হয়নি৷ হুতিরা ঠিকই এগিয়ে চলেছে এডেনের দিকে৷ সোমবার সেখানে হুতিদের সঙ্গে দেশত্যাগী প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মনসুর হাদির অনুগত বাহিনীর যুদ্ধে ৫৩ জন মারা গেছে বলে জানা গেছে৷
ইয়েমেনে নিজেদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকলেও অবশ্য প্রেসিডেন্ট হাদির সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি আছে হুতিরা৷ সোমবার হুতিদের পলিটব্যুরোর সদস্য মোহাম্মদ আল-বুখালতি এ কথা জানান৷ তবে তিনি জানিয়েছেন, আরব জোট বিমান হামলা বন্ধ করলেই কেবল আলোচনা সম্ভব৷
২০১২ সালে প্রচণ্ড বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন ইয়েমেনের তখনকার প্রেসিডেন্ট আলি আব্দুল্লাহ সালেহ৷ তারপরও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার মুসলিম প্রধান দেশটিতে শান্তি ফেরেনি৷ নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মনসুর হাদি হুতি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে দেশ ছাড়ার পর থেকে সে দেশে নতুন করে দেখা দেয় সংকট৷ রাজধানী সানাসহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলই এখন শিয়া হুতি বিদ্রোহীদের দখলে৷ সাবেক প্রেসিডেন্ট আলি আব্দুল্লাহ সালেহর অনুগত সেনা সদস্যদের বড় একটি অংশ হুতিদের হয়ে লড়ছে৷ তাদের হামলার মুখেই দেশ ছেড়ে সৌদি আরবে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট হাদি৷
এসিবি/জেডএইচ (এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)