‘কওমির পরীক্ষা পদ্ধতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে’
২৫ এপ্রিল ২০১৭এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার পর, ১৩ই এপ্রিল কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদকে সাধারণ শিক্ষার স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দিয়ে আদেশ জারি করেছে সরকার৷ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এই গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে৷ গেজেটে বলা হয়েছে, ‘‘কওমি মাদ্রাসার বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে ও দারুল উলুম দেওবন্দের মূলনীতিসমূহকে ভিত্তি ধরে কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্স-এর (ইসলামিক স্টাডিজ এবং আরবি) সমমান প্রদান করা হলো৷''
দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্সের সমমান দেওয়ার লক্ষ্যে কওমি মাদ্রাসা বোর্ডগুলো কর্তৃক গঠিত মান বাস্তবায়ন কমিটির উপর ‘আস্থাভাজনপূর্বক' কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহ আহমদ শফীকে চেয়ারম্যান করে একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছে সরকার৷ আদেশে বলা হয়েছে, ‘‘এ কমিটি সনদ বিষয়ক যাবতীয় কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী বলে বিচেচিত হবে৷'' এই কমিটির অধীনে ও তত্ত্বাবধানে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা হবে বলে বলা হয়েছে সরকারি আদেশে৷ এই কমিটিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে উল্লিখিত বিষয়ে অবহিত করার নির্দেশনা দিয়ে আদেশে বলা হয়েছে, ‘এ কমিটি দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকবে৷'
এ প্রসঙ্গে হেফাজত ইসলামের মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীর সাথে কথা বলেছেন ডয়চে ভেলের প্রতিবেদক৷
ডয়চে ভেলে: কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ সনদকে সাধারণ শিক্ষার স্নাতকোত্তর ডিগ্রির স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে – এটাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
জুনাইদ বাবুনগরী: আমাদের বড় হুজুর আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেবের সাথে আছি আমরা৷ তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমি তো তার বাইরে না৷
আমরা যতদূর শুনেছি, ৯০-এর দশক থেকে আল্লামা শফী যে আন্দোলন করছিলেন, তা ছিল কওমি মাদ্রাসাগুলোকে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনার বিরুদ্ধে৷ তাহলে এখন আপনারা সরকারি স্বীকৃতি কেন চাইছেন?
না, উনি তো এই স্বীকৃতি চাননি৷ চেয়েছেন শর্ত সাপেক্ষে৷ সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত স্বীকৃতি চেয়েছেন তিনি৷
সাধারণ মাস্টার্স-এর যে পাঠ্যসূচি, তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে কি আপনাদের নতুন কোনো পাঠ্যসূচি তৈরি হবে? আপনাদের পরীক্ষা ব্যবস্থা বা পাঠ্যসূচিতে কি কোনো পরিবর্তন আনা হবে?
এ সব বিষয়ের জন্য একটি কমিটি গঠন হয়েছে৷ কিন্তু আমি সেই কমিটিতে নাই৷ যে মিটিং হয়েছে, সেখানেও আমি যাই নাই৷ তবে আহমদ শফী সাহেব তো বলেছেন, আমাদের সিলেবাসে কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না সরকার৷ এ সব বিষয় নিয়ে আমাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে তাঁর৷ তিনি বরাবরই বলেছেন যে, সিলেবাসে কোনো পরিবর্তন যেন না আসে৷
যারা সাধারণ মাস্টার্স পাস করে আসবে আর যাঁরা কওমি মাদ্রাসা থেকে মাস্টার্স-এর সনদ পাবেন, চাকরির ক্ষেত্রে তাঁদের মধ্যে প্রতিযোগিতাটা কেমন হবে? কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা কি বৈষম্যের শিকার হবেন? আপনার কী মনে হয়?
আমি তো কমিটিতে নাই৷ মানে স্বীকৃতি নেওয়া হয়েছে যে কমিটির ব্যানারে, আমি সেই কমিটিতে নাই৷ তাছাড়া আমি কোনো দায়িত্বেও নাই৷ তাই যাঁরা দায়িত্বশীল, আপনি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন৷
কিন্তু আপনার তো একটা ধারণা আছে এ বিষয়ে?
না! ওরা বৈঠক করছে, করবে৷ আপনি কমিটির মহাসচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷