কাজলের ফিরে আসা এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব
৩ মে ২০২০সাংবাদিক প্রভাষ আমিনকে উদ্ধৃত করি৷ উনি তার ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘গত ১০ মার্চ পুরান ঢাকা থেকে হারিয়ে গিয়েছিলেন ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল৷ ৫৪ দিন পর ভারত থেকে অনুপ্রবেশের সময় বেনাপোলের সাদিপুর সীমান্তে বিজিবি তাকে আটক করেছে৷ তিনি কি নিজে থেকেই হারিয়ে গিয়েছিলেন, নাকি কেউ তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল, এই ৫৪ দিন তিনি কোথায় ছিলেন, কেমন ছিলেন, কীভাবে তিনি পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া ভারতে গেলেন, এই লকডাউনের মধ্যে ফিরে আসতে গেলেন কেন, বাংলাদেশের লোকজন পালিয়ে ভারতেই যায় কেন?’
আপনাকে আরেকটু মনে করিয়ে দেই, সাংবাদিক কাজল গুম হওয়ার আগে পাপিয়ার খদ্দেরদের বিষয়ে খোঁজ খবর করছিলেন বলে শুনেছি৷ ১৬ এপ্রিল ২০১৪ ব্যবসায়ী আবু বকর সিদ্দিক কে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ ওনার আরেকটা পরিচয় উনি পরিবেশবাদী আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের হাজবেন্ড৷ গবেষক এবং শিক্ষক মোবাশ্বের হাসান সিজার নিঁখোজ হন ২০১৭ তে, তিন মাস পর ফিরে আসেন৷ একই বছর সাংবাদিক উতপল এবং ব্যবসায়ী অনরিুদ্ধ কুমার নিখোঁজ হন নারায়ণগঞ্জ থেকে, তিন মাস পর ফিরে আসেন৷ এইসব নিখোঁজ বা প্রাপ্তি সংবাদ কি আপনার জানা মাননীয়?
আপনি সরকার কীভাবে চালাবেন, তা নিশ্চয় আপনারই সিদ্ধান্ত৷ আমাদের কৌতূহল এই লুকোচুরি খেলার জন্যও কি কর্তাব্যক্তিরা আপনার অনুমোদন নেন? তাদের জন্য কী ফাইল তৈরি হয়? সেই ফাইল সই হতে হতে উপরে উঠে আবার নিচে নামে? নাকি এসব বিষয় আপনাকে জানানো হয় না? আপনি পরে সাফল্য ব্যর্থতা দেখে পুরস্কার দেন শুধু? কারা ঠিক করে তবে এইসব? অনেক ক্ষমতা কি তাদের? তারা চাইলে কি যে কাউকে গুম করতে পারে? আড়ি পাততে পারে যে কোনো ফোনে? এসব কাজ করার নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা রয়েছে তাদের? কে তাদের বস?
অথবা আপনি বা আপনার সরকার বলবে, এইসব ঘটনার সঙ্গে রাষ্ট্রব্যবস্থা বা সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই৷ কিন্তু আপনি কী কাকতাল খেয়াল করেন, যারা সরকার বা ক্ষমতাবানদের বিব্রত করতে পারে তাদের কপালেই এমনটা ঘটে?
একটি প্রস্তাব দিয়ে শেষ করি, কী করলে হারিয়ে যেতে হয় বা কী করলে হারিয়ে গেলে আবার ফিরে আসা যায় তা আমাদের জানানো যেতে পারে৷ আমরা তো আপনার সব কিছুই মেনে নিয়েছি, এটাও না হয় মেনে নিবো৷ শুধু জানবো এটা করলে হারিয়ে যাব বা হারিয়ে ফিরবো৷