আবার হরতাল
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল৷ ট্রাইবুনাল ২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইবুনাল এ রায় ঘোষণা করে৷
ট্রাইবুনালের আদেশে বলা হয়, ৬টি অভিযোগের মধ্যে দুটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হলেও তার সম্পৃক্ততা ছিল বলে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে৷ আর তিনটি অভিযোগে তাকে ১৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং একটি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সেটি থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে৷
রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহাবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ে তারা সন্তুষ্ট হতে পারেন নি৷ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথাও বলেন তিনি৷
মামলাটির প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী বলেন, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ তারা হাজির করেছেন৷ তারপরও এই রায়ে তারা হতাশ হয়েছেন৷
কাদের মোল্লার পক্ষে আদালতে কোনো সিনিয়র আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না৷ তবে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷ তিনি শুধু বলেন, এ রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন৷
এদিকে, কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা উপলক্ষ্যে আজ সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করেছে জামায়াত-শিবির৷ কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার প্রতিবাদে বুধবার আবারও সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াত৷ জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খানের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়৷
হরতালে বিশৃঙ্খলা এড়াতে ভোর থেকেই রাজধানীর প্রতিটি সড়কে অবস্থান নেয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্য৷ ট্রাইবুনাল এলাকাতেও আগের দিন থেকেই নেয়া হয় কঠোর নিরাপত্তা৷ এর মধ্যেই পুরান ঢাকা, ধানমন্ডি, জুরাইন, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ঝটিকা মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়৷
হরতাল চলাকালে বেলা দেড়টার দিকে চট্টগ্রামের অলঙ্কার মোড়ে জামায়াত-শিবিরের কর্মী ও সমর্থকেরা পুলিশ বক্সে হামলা চালায়৷ তারা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন লাগায়৷ এ সময় পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে৷ এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় এবং তাতে একজনের মৃত্যু হয়৷ শিবিরের দাবি, নিহত ব্যক্তি তাদেরই কর্মী৷