এবার স্বাধীন কুর্দিস্তান?
২ সেপ্টেম্বর ২০১৪চরমপন্থি ইসলামি আইসিস (ইসলামিক স্টেট বা আইএস) জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে কুর্দিদের সাহায্য করতে জার্মানি শেষ পর্যন্ত সামরিক সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ সাহায্যের তালিকায় রয়েছে ট্যাংক বিধ্বংসী ‘মিলান' রকেট, মেশিন গান, হ্যান্ড গ্রেনেড ইত্যাদি৷ জঙ্গিরা ইরাকি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে যে সব ট্যাংক দখল করেছে, তাদের মোকাবিলা করতেই এমন রকেট প্রয়োজন৷ প্রায় ৪,০০০ কুর্দি যোদ্ধার জন্য প্রায় ৭ কোটি ইউরো মূল্যের এই অস্ত্র পাঠানো হবে৷
সম্ভবত দুই সপ্তাহের মধ্যেই প্রথম কিস্তির অস্ত্রশস্ত্র বাগদাদের মাধ্যমে এরবিল শহরে পাঠানো হবে৷ বাকিটা নির্ভর করবে পরিস্থিতির উপর৷ সেইসঙ্গে থাকবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও৷ বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দিতে কিছু কুর্দি প্রশিক্ষককে জার্মানিতে এনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে৷ সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, এই সামরিক সহায়তার জন্য জার্মান সংসদের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগ-এর সম্মতির প্রয়োজন পড়বে না৷ মহাজোট সরকারের দুই শরিক অবশ্য সহজেই সেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যেত৷ সংসদের দুই বিরোধী দল সরকারের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে৷ তবে সংখ্যায় তারা নগণ্য৷
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উর্সুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন বলেন, আইসিস জঙ্গিরা নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে৷ মানবিক দিক থেকে তো বটেই, জার্মানির নিজস্ব নিরাপত্তার স্বার্থেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযানে সহায়তা করতে হচ্ছে৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ভাল্টার স্টাইনমায়ার বলেন, জার্মান সরকারের জন্য এই সিদ্ধান্ত মোটেই সহজ ছিল না৷ কিন্তু আইসিস জঙ্গিদের তৎপরতা শুধু অভাবনীয় মাত্রার মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে না, ইরাকের উত্তরাঞ্চলের অস্তিত্বও বিপন্ন হয়ে উঠছে৷ সে দেশের দুর্বল কেন্দ্রীয় সরকারের কারণে ঐক্য ও অখণ্ডতাও হুমকির মুখে পড়েছে৷ স্টাইনমায়ার এই প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দেন, জার্মানি গত কয়েক সপ্তাহে ইরাকের উত্তরে ১৭০ টন ত্রাণসাহায্যও পাঠিয়েছে৷
আইসিস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে জার্মান হাতিয়ার ব্যবহারের এই পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই৷ শেষ পর্যন্ত এই অস্ত্র কার হাতে গিয়ে পড়বে, কী ভাবে তার প্রয়োগ করা হবে, সে বিষয়ে অনেকের মনে সন্দেহ রয়েছে৷
শুধু অস্ত্রের অপব্যবহার নয়, কুর্দিরা ইরাকের উত্তরে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করলেও গোটা অঞ্চলের জন্য বিপদের আশঙ্কা করছেন স্টাইনমায়ার৷ এর জের ধরে ইরাকে আরও বিভাজন ঘটতে পারে বলে তিনি মনে করেন৷ তখন সীমানা নিয়ে নতুন করে সংকট ও সংঘাত দেখা দিতে পারে৷ একবার সীমানা নিয়ে এমন প্রশ্ন উঠলে তার আগুন গোটা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে স্টাইনমায়ার আশঙ্কা করছেন৷
এসবি/ডিজি (রয়টার্স, ডিপিএ)