1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কৃষিকাজেও আসছে হাইটেক ড্রোন, ট্র্যাক্টর

মার্টিন রিবে/এসবি১৯ এপ্রিল ২০১৪

খেতের উপর চাষি বলদ নিয়ে লাঙল চালাচ্ছে – বাংলার গ্রামে এই দৃশ্য এখনো হারিয়ে যায়নি৷ এসে গেছে ট্র্যাক্টরও৷ কিন্তু স্বয়ংক্রীয় বিশাল কম্বাইন হারভেস্টার বা ড্রোনের আগমন কৃষিকাজের চরিত্রকেই আমূল বদলে দিতে চলেছে৷

https://p.dw.com/p/1BkdK
কম্বাইন হারভেস্টারছবি: Fotolia/versh

জার্মানিতে ট্র্যাক্টর জাতীয় যানগুলি আরও বড় ও ভারি হয়ে উঠছে৷ কম্বাইন হারভেস্টার, ট্র্যাক্টর, লাঙল ও অন্যান্য যন্ত্রগুলি আরও বুদ্ধিমান ও নিখুঁতভাবে কাজ করছে৷ কৃষিমেলায় সর্বাধুনিক প্রবণতা দেখানো হয়৷ এমন প্রযুক্তি, যা কৃষকদের কাজে লাগে, পরিবেশ সংরক্ষণ করে এবং আয় বাড়ায়৷ তাছাড়া আধুনিক যন্ত্রগুলি আরও নিখুঁতভাবে লাঙল চালানো, বীজ রোপণ ও শস্য তোলার কাজ করতে পারে৷ কার যন্ত্র কতটা নিখুঁতভাবে কাজ করে, তার খতিয়ান শোনান কোম্পানিগুলির প্রতিনিধিরা৷

শস্য তোলার কাজ খুবই সহজ করা যেতে পারে৷ বিশ্বের অন্যতম সেরা কম্বাইন হারভেস্টার থাকলেই হলো৷ দ্রুত কাজ চাই, না জ্বালানির সাশ্রয় বেশি জরুরি – চালককে শুধু সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ বাকিটা কম্পিউটার সামলে নেবে৷ ১২ মিটার চওড়া ও প্রায় ৬০০ হর্স পাওয়ার ক্ষমতা এক যন্ত্রের৷ এমনকি স্যাটেলাইট সিগনালের দৌলতে চালকের কাজও সে করতে পারে৷

Ernte in Argentinien Sojabohnen
ছবি: Getty Images

ক্লাস কোম্পানির রোবার্ট বেক বলেন, ‘‘এই কম্বাইন হারভেস্টার-এর বিশেষত্ব হলো সেমোস অটোম্যাটিক প্রযুক্তি৷ অর্থাৎ গাড়ি নিজেই নিজের সেটিং করে নেয়, ফলে চালকের মাথাব্যথা অনেক কমে যায়৷ ভবিষ্যতে একে একে এমন অনেক কাজ যন্ত্র নিজেই করে নেবে৷ মাঠের উপরেই যন্ত্রদের মধ্যে কথা হবে৷ অর্থাৎ হারভেস্টার ঠিক সময় ট্রাককে খবর দেবে, যাতে শস্য তোলার পর একেবারে সঠিক সময়ে তা পাশের ট্রাকে ঢেলে দেওয়া যায়৷''

কৃষিকাজের জন্য বড় আকারের এমন বু্দ্ধিমান যন্ত্র কতটা কার্বন নির্গমন করে, কৃষকের কাজ কতটা সহজ হয় – কেটিবিএল নামের এক কোম্পানি তার মূল্যায়ন করে দেখিয়ে দিচ্ছে৷ বড় আকারের যন্ত্র বিশাল জমিতে অনেক বেশি নিপুণভাবে চাষের কাজ করতে পারে৷ খেত যত বড়, কৃষক ততই দ্রুত কাজ শেষ করতে পারেন৷ ট্র্যাক্টর অনেক কম তেল খায়৷ ফলে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন কমে যায়৷ এখন সামরিক ক্ষেত্রের জন্য পরিকল্পিত প্রযুক্তিও কৃষিকাজে লাগানো হচ্ছে৷ কেটিবিএল-এর মার্গিট শেলার বলেন, ‘‘প্রবণতা দেখে মনে হচ্ছে, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে যেমন ড্রোন প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়বে৷ এ ভাবে আমরা প্রায় কোনো মানুষ ছাড়াই জানতে পারবো খেত ও তার উপর শস্যের কী অবস্থা এবং তখন কোন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত৷''

ট্র্যাক্টরের বিশাল উন্নতি ঘটে চলেছে৷ এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ট্র্যাক্টরের ক্ষমতা ৭০০ হর্স পাওয়ার, ওজন ২৫ টন৷ তার চারটি ট্র্যাক রোলার ওজনের ভারসাম্য বজায় রাখে৷ এমনকি পিচ্ছিল জমিতেও তা নির্ভরযোগ্যভাবে কাজ করে৷ অথচ সাধারণ ট্র্যাক্টরের টায়ারের তুলনায় এই যন্ত্র জমির উপর অর্ধেক চাপ সৃষ্টি করে৷ কেস আইএইচ কোম্পানির মিশায়েল হ্যারৎস বলেন, ‘‘আমাদের যন্ত্রের বিশেষত্ব হলো, জমির প্রায় কোনো ক্ষতি না করেই তা চলতে পারে৷ আমাদের ৪টি আলাদা রানিং গিয়ারের মাধ্যমেই এটা সম্ভব হয়৷ তাদের মোট আয়তন ৫ দশমিক ৬ বর্গমিটার৷''

ট্র্যাক রোলার যেহেতু ডান দিকের জমির উপর কম চাপ সৃষ্টি করে, চাকার আশেপাশে গাছ অনেক ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে৷ ফলে আরও বেশি শস্য তোলা সম্ভব হয়৷

বিভিন্ন যন্ত্রের মধ্যে নেটওয়ার্কিং-এর প্রবণতা বাড়ছে৷ এমনকি লাঙলেরও নিজস্ব স্যাটেলাইট অ্যান্টিনা রয়েছে, যার সাহায্যে একেবারে নিখুঁতভাবে তা চালানো যায়৷ এই স্বয়ংক্রীয় যন্ত্র এমনকি অন্ধকারের মধ্যেও খেতের উপর একেবারে সোজা এগিয়ে যেতে পারে৷ ডিসপ্লে-র মাধ্যমে তাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়৷ যেমন লাঙলের অ্যাঙ্গল বদলানো যায়৷ এই লাঙলের মধ্যে আবার আলাদা হাইড্রলিক ক্যারিয়িং হুইল রয়েছে৷ সবই পুরোপুরি স্বয়ংক্রীয়৷

কৃষিকাজে ব্যবহৃত যন্ত্র আরও বুদ্ধিমান ও পরিবেশ বান্ধব হয়ে উঠলে, কৃষকের মাথাব্যথা কমলে এই উদ্যোগ সার্থক হবে ঠিকই৷ কিন্তু এর ফলে কর্মসংস্থান কমে যাবে৷ সেটা কতটা কাম্য, তা বলা কঠিন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য