এমএইচ১৭-এর পরিণতি
১৭ জুলাই ২০১৫উত্তরটা গত এক বছরেও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি৷ ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ২৯৮ জন যাত্রী নিয়ে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি ছিন্নবিচ্ছিন্ন হওয়ার পর থেকেই ইউক্রেন সরকার এবং তাদের পশ্চিমা মিত্ররা দাবি করে আসছে যে, এর জন্য ইউক্রেনের রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দায়ী৷ অভিযোগ – তারাই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ধ্বংস করেছে বিমানটি৷ এর পেছনে রুশ সরকারের হাত আছে বলেও ইউক্রেন এবং তাদের মিত্রদের ধারণা৷
কিন্তু রুশ সরকার এবং ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে৷ বরং ‘দুর্ঘটনার' চারদিন পর বিচ্ছিন্নতাবাদীরাই মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের কাছে বিমানটির ‘ব্ল্যাকবক্স' হস্তান্তর করেছে৷ জানা গেছে, ব্ল্যাকবক্সে কোনো কারসাজির প্রমান পাওয়া যায়নি, অর্থাৎ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা তদন্তকে ভুল পথে চালিত করার জন্য কোনো বাঁকা পথ ধরেনি৷
২৯৮ জন বিমানযাত্রীর অধিকাংশই ছিলেন নেদারল্যান্ডসের৷ নেদারল্যান্ডসের গোয়েন্দারা তাই দুর্ঘটনার কারণ অন্বেষণ করেছেন, অনুসন্ধানে যা পেয়েছেন তার আলোকে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদনও তৈরি করেছেন৷ কিন্তু সেই প্রতিবেদনটি এখনো প্রকাশ করা হয়নি৷
কী আছে সেই প্রতিবেদনে? রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীরাই বিমানটিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ধ্বংস করেছে? কেন? বলা হয়ে থাকে, হয়ত ইউক্রেন বিমানবাহিনীর বিমান ভেবে ভুল করেছিল তারা৷ তখন ইউক্রেনের সেই এলাকায় বিমান চলাচল খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল৷ ইউক্রেনের সেনাবাহিনী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জোর যুদ্ধ চলছিল তখন৷ ইউক্রেন সরকার সেই অঞ্চলের আকাশসীমায় বিমান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল৷ তারপরও সেদিন সেই আকাশপথ ধরেই যাচ্ছিল এমএইচ১৭৷ বিমানটি যে একটা কিছুর আঘাতে ধ্বংস হয়েছে তা মোটামুটি ধরেই নেয়া যায়৷ ককপিটে বড় একটা গর্ত দেখা গেছে৷ আরো কিছু আলামতও বলছে কোনো কিছুর সঙ্গে সংঘর্ষ বা কোনো বস্তুর আঘাতের কারণেই বিমানটি ধ্বংস হয়েছে৷ কিন্তু কে করেছে আঘাত? রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীরাই যদি দায়ী হয়ে থাকে, তাহলে প্রতিবেদন প্রকাশে এত বিলম্ব কেন?
আগামী অক্টোবরেই নেদারল্যান্ডসের তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করার কথা৷ তা প্রকাশিত হলেই হয়ত জানা যাবে, কে আসলে দায়ী৷ মালয়েশিয়া অবশ্য তার আগেই জাতিসংঘের বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দুর্ঘটনার তদন্ত দাবি করেছে৷ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ আর্জি রেখেছে তারা৷ ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস এবং ইউক্রেন এ প্রস্তাব সমর্থন করেছে৷
এদিকে বিমানের নিহত যাত্রীদের আত্মীয়রা যুক্তরাষ্ট্রে একটি মামলা করেছেন৷ মামলার প্রধান আসামি রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নেতা ইগর গিরকিন৷ তাঁর নির্দেশেই নাকি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল৷ আসলেই কি তাই?