জামায়াত সম্পর্কিত বক্তব্য
১০ জানুয়ারি ২০১৪এর প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপিকে কাজের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করতে হবে জামায়াতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক স্থায়ী নয়৷ আর বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, একসময় আওয়ামী লীগের সঙ্গেও জামায়াতের সম্পর্ক ছিল৷
গত ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে যুদ্ধাপরাধী ও সন্ত্রাসী জামায়াতে ইমলামীর সঙ্গ ত্যাগ করে আলোচনা এবং সমঝোতায় আসার আহ্বান জানান৷ এরপর খালেদা জিয়া তাঁর বিবৃতিতে নির্বাচন বাতিল ও পদত্যাগ করে সরকারকে সমঝোতায় আসার আহ্বান জানালেও জামায়াত নিয়ে কথা বলেননি৷
কিন্তু খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রভাবশালী পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ‘‘জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোট কোনো স্থায়ী জোট নয়৷'' তাহলে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ছে কিনা – এমন প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমি কিছু বলতে পারছি না৷ তবে যখন সময় আসবে তখন দেখব৷'' বিএনপির আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিলে তাঁর দল সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছাতে প্রস্তুত বলেও জানান খালেদা জিয়া৷
এর প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, খালেদা জিয়ার এই বক্তব্য ভাওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই না৷ কারণ জামায়াতকে রক্ষা করতে বিএনপি সবকিছুই করছে৷ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্ত এবং যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের বাঁচাতে বিএনপি সবধরণের উদ্যোগ নিয়েছে৷ আর জামায়াতের সহযোগিতায় তারা আন্দোলনের নামে হত্যা এবং সন্ত্রাস চালাচ্ছে৷ তিনি বলেন বিএনপি এবং জামায়াত এখন একাকার হয়ে গেছে৷ জামায়াত ছাড়া বিএনপি অচল হয়ে পড়েছে৷
হানিফ বলেন, বিএনপিকে কথা নয়, কাজে প্রমাণ করতে হবে যে জামায়াতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক স্থায়ী নয়৷ আলোচনায় আসতে হলে তাদের জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তেই হবে৷ এধরণের ‘কৌশলী কথা' বলে লাভ নেই৷
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির আদর্শিক কোনো মিল নেই৷ এটা কোনো আদর্শিক জোটও নয়, নির্বাচনি জোট৷ তাই জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক স্থায়ী কোনো বিষয় নয়৷ দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সেই বিষয়টি আবারো স্পষ্ট করেছেন৷ এই জোট কতদিন থাকবে তাও নিশ্চিত করে বলা যায় না৷
তিনি বলেন জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগেরও সম্পর্ক ছিল৷ আওয়ামী লীগ, জামায়াত একসঙ্গে এরশাদের অধীনে নির্বাচনে গেছে ১৯৮৬ সালে৷ এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তখনকার ক্ষমতাসীন বিএনপির বিরুদ্ধে একসঙ্গে আন্দোলন করেছে৷ আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী জামায়াত নেতা গোলাম আযমের কাছে দোয়া নিতে গিয়েছিলেন৷ আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকলে ভাল আর বিএনপির সঙ্গে থাকলে যুদ্ধাপরাধী, এটাতো হতে পারে না৷
আহমেদ আজম খান দাবি করেন বিএনপিও যুদ্ধাপরাধের বিচারের পক্ষে৷ তবে তা হতে হবে স্বচ্ছতার সঙ্গে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নয়৷
তিনি বলেন জামায়াত যদি সন্ত্রাসী সংগঠন হয় তাহলে সরকারই তাদের নিষিদ্ধ করতে পারে৷ তাহলে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক এমনিতেই থাকবে না৷ কিন্তু তাঁর মতে আওয়ামী লীগ সরকার তা করবে না৷ কারণ তারা জামায়াতকে নিয়ে রাজনীতি করবে৷ নিষিদ্ধ করলে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের কোনো সুযোগ থাকবে না৷