চেরি ফুলের সৌরভে বসন্তোৎসব
১৩ এপ্রিল ২০১৩বসন্ত এসেছে৷ জাপানের মানুষ এ বার্তা পায় চেরি গাছের দিকে তাকিয়ে৷ শীতে কাহিল মানুষগুলো নিস্তার চায় বসন্তের কাছে৷ ঝলমলে আকাশ, সবুজ ঘাসে নিশ্চিন্ত বিশ্রাম – শীত বিদায় না নিলে এসব কি সম্ভব? বাংলাদেশ, ভারত এবং আশপাশের দেশগুলোতে বসন্তের আগমনী বার্তা শোনায় কোকিলের কুহু কুহু ডাক৷ কিন্তু জাপানে সেই দায়িত্ব হালকা গোলাপি রংয়ের চেরি ফুলের৷ সব বাগান ছেয়ে যায় চেরি ফুলে৷ পার্কে সব বয়সের মানুষ গিয়ে সবুজ ঘাস দখল করেন টেবিল ক্লথ বিছিয়ে৷ আপনি এদিক-ওদিক যাবেন, সমস্যা নেই, টেবিল ঢাকার কাপড়টা তো রইলো, অন্য কেউ বসবেনা৷ কিন্তু টেবিল ক্লথ বিছিয়ে না রাখলেই সেই জায়গায় বসে পড়বে অন্য কেউ৷ ‘হামানা' উৎসবের আনন্দে সবাই ছুটে আসে, বসে বসে গল্প করে, সদ্য ফোটা চেরি ফুলের হাসি দেখে হাসিয়ে নেয় নিজেদের মনটাকেও৷ তাই সব বাগানেই খুব ভিড়৷ চাইলেই যখন তখন কেউ বসার জায়গা পায়না৷
কথাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের মানুষদের নতুন করে জানালেন ইয়োশিউকি ইয়ামাদা৷ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে কূটনীতিক হিসেবে কাজ শুরু করেছেন মাস ছয়েক হলো৷ তাঁর নতুন কর্মস্থলেও চেরি ফুলের উৎসব হয় খুব ঘটা করে৷ এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও আছে৷ ইতিহাসটা একশ বছর আগের৷ ১৯১২ সালের ২৭ মার্চ দু দেশের বন্ধুত্বের সম্পর্কে আরো জোরদার করতে ওয়াশিংটনের মেয়রকে চেরি গাছ উপহার দিয়েছিলেন জাপানের রাজধানী টোকিওর মেয়র৷ উপহারের অমর্যাদা করেনি যুক্তরাষ্ট্র৷ তাই ওয়াশিংটন ডিসি জুড়েও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য চেরি গাছ৷ বসন্তে সেখানেও ফোটে হাজার হাজার চেরি ফুল৷ সেই আনন্দে উৎসবে মাতে ওয়াশিংটন ডিসি৷
এবার জাপানের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও শীত যাই যাই করেও যাচ্ছেনা৷ বসন্তের অপেক্ষা তাই দীর্ঘ হয়েছে৷ ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল চেরি ব্লসম ফেস্টিভ্যাল নিয়ম মেনে মার্চে শুরু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু চেরি ফোটেনি বলে উৎসবও ঠিক জমছেনা৷ তবে অপেক্ষার পালা শেষ হতে চলেছে৷ এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে উৎসব৷ সময় ফুরোতে তো বেশি বাকি নেই৷ তবে আশার কথা, বাতাসে বসন্তের গন্ধ লেগেছে৷ তাই জাপানের মতো যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতেও লেগেছে আনন্দের ঢেউ৷ চেরি ফুল ফোটার উৎসবকে ঘিরে আগত পর্যটক এবং ওয়াশিংটনবাসীদের আনন্দের ষোলকলা পূর্ণ হবে হরেক রকমের নাচ-গান, ঘুরে বেড়ানো আর বনভোজনের আমেজে৷
এসিবি/এসবি (এএফপি)