1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আস্থাহীনতার ইঙ্গিত

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২১ এপ্রিল ২০২০

করোনা সংক্রান্ত সব কিছু মনিটর করবেন সচিবরা৷ আর সমন্বয় করবেন ডেপুটি কমিশনাররা (ডিসি)৷ তাহলে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা কী হবে? তাদের প্রতি কি প্রধানমন্ত্রী আস্থা হারিয়েছেন?

https://p.dw.com/p/3bDfV
ছবি: bdnews24.com

এর জবাবে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি বলেন, ‘‘সরকারের কাজ প্রশাসনের মাধ্যমে হয়৷ এটাই নিয়ম৷ প্রধানমন্ত্রী নিয়ম মেনেই আদেশ দিয়েছেন৷ এটা জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আস্থাহীনতার কোনো বিষয় নয়৷ জনপ্রতিনিধিরাও সব কাজে থাকছেন৷’’

তবে একাধিক দায়িত্বশীল পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, করোনায় খাদ্য সাহায্য ও ত্রাণ বিতরণে জন প্রতিনিধি বিশেষ করে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বারদের ওপর আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে৷ আর সেই জায়গা থেকেই প্রধানমন্ত্রীর নতুন এই নির্দেশনা৷

সারাদেশে ওএমএস ও ত্রাণের চাল চুরির ঘটনায় খাদ্যমন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি এরই মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে৷ ১৭ এপ্রিল জমা দেয়া ওই রিপোর্টে খাদ্য সহায়তা ও ত্রাণ বিতরণে বেশ কিছু অনিয়ম ও ফাঁক খুঁজে পাওয়ার কথা বলা হয়েছে৷ তার মধ্যে তালিকা তৈরিতে অনিয়ম, ওজনে কম দেয়া, তালিকা অনুযায়ী বিতরণ না কারার মতো অনিয়ম পেয়েছে কমিটি৷ বিশেষ করে তালিকা তৈরিতে অস্বচ্ছতা এবং বিতরণের সময় দায়িত্ব প্রাপ্তরা না থাকায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷ তদন্ত কমিটির প্রধান খাদ্যমন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘‘সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ের এইসব খাদ্য সহায়তা কমিটির উপদেষ্টা হলেন সংসদ সদসরা৷ এছাড়া আছেন উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান৷ ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যানরা কমিটির সভাপতি৷ তাদের সঙ্গে থাকেন ইউপি মেম্বাররা৷’’

মজিবর রহমান

জানা গেছে, জনপ্রতিনিধিরাই তালিকা ও বিতরণের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত৷ সাথে একজন সরকারি কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) থাকার কথা৷ মজিবর রহমান বলেন, ‘‘আমাদের মনে হয়েছে, যাদের সরাসরি তদারকি করার কথা ছিল, তারা হয়ত করোনার কারণে তদারকি করেননি, সশরীরে থাকেননি৷ তালিকার লোক চাল পেলো কিনা, কারা পেলো, চাল কোথায় গেল তারা এসব কিছুই দেখেননি বা তদারকি করেননি৷ ফলে বাইরে চাল বিক্রির খবর আমার জানতে পারি৷’’ কী পরিমাণ চাল বাইরে বিক্রি হয়েছে বা কতগুলো মামলা হয়েছে তা তারা হিসাব করেননি৷ তারা কিছু ঘটনা ধরে তদন্ত করেছেন৷

তবে খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম জানান, এখন পর্যন্ত চাল বাইরে বিক্রি বা চুরির ঘটনায় সারাদেশে ৩৯টি মামলা হয়েছে৷ আরো মামলা হচ্ছে৷ তবে এসব মামলার ঘটনায় কী পরিমাণ চাল উদ্ধার করা হয়েছে তা তিনি জানাতে পারেননি৷ তিনি বলেন, ‘‘বিশেষ ক্ষমতা আইনের এইসব মামলা তদন্ত করে চার্জশিট হবে, বিচার হবে৷ আর আমরা এরই মধ্যে দায়ী অনেকের ডিলারশিপ বাতিল করেছি৷ তবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বাইরেও আরো অনেক সংস্থা এই চালের সঙ্গে যুক্ত৷ তদন্তে তাদের বিষয়ও বেরিয়ে আসবে৷’’ 

আর খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সারোয়ার মামুদ জানান, ‘‘সারাদেশ থেকে আমরা এখনো চাল বাইরে বিক্রি বা চুরির তথ্য পাচ্ছি৷ এটা নানা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হতে পারে৷ এখনো কত চাল উদ্ধার বা চুরি হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রস্তুত করিনি৷’’ 

ডা. এনামুর রহমান

তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গত সপ্তাহের তথ্য অনুযায়ী, তাদের অভিযানে সরকারের বরাদ্দের চুরি হওয়া দুই হাজার ১৭৪ বস্তা চাল উদ্ধার হয়েছে৷ প্রতি বস্তায় সাধারণত ৫০ কেজি করে চাল থাকে৷ এইসব ঘটনায় পুলিশ ও র‌্যাব আওয়ামী লীগ নেতা ও চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে৷ পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, এখন উদ্ধার হওয়া চালের পরিমাণ ও গ্রেপ্তারের সংখ্যা আরো বেড়েছে৷ 

এসব প্রসঙ্গে নিয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ‘‘ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম, দুর্নীতি এটা তো জনপ্রতিনিধিদেরই দেখতে হবে৷ তারা যদি এটা না দেখেন তাহলে তো তারা দায়িত্ব পালন করছেন না৷ তবে এই কারণে তাদের এইসব কাজ থেকে বাদ দেয়া হয়নি৷ তারা তালিকা করবেন, বিতরণের সময় থাকবেন৷ এগুলো তাদের কাজ৷’’

এই কাজ সঠিকভাবে করার জন্য, ৬৪ জেলার করোনা সংক্রান্ত সব কাজ সুপারভাইজ করার জন্য ৬৪ জন সচিবকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷ ডেপুটি কমিশনাররা সমন্বয় করবেন বলে জানান ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধিরা ত্রাণসহ নানা বিষয়ে তালিকা করবেন৷ সরেজমিন বিতরণ করবেন৷ পুরো কাজ যাতে সঠিকভাবে হয়, সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন৷’’ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য