তরুণ ভোটাররা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭জার্মানিতে কে সরকার গঠন করবে তা নির্ধারণের ক্ষমতা মূলত প্রবীণ প্রজন্মের হাতে রয়েছে৷ আর ত্রিশ বছরের চেয়ে কম বয়সি ভোটারদের ভূমিকা অনেকটা ছোট বিরোধী দলের মতো৷নির্বাচনে প্রভাব ফেলার মতো ক্ষমতা তাদের নেই৷ কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জার্মানিতে ষাট বছরের বেশি বয়সি ভোটারের হার ৩৬ শতাংশ, আর ত্রিশের কম বয়সি ভোটার মাত্র ১৫ শতাংশ৷
জার্মানির ভোটারদের এই পরিসংখ্যান দেখে বিশেষজ্ঞরা দেশটির গণতন্ত্রকে ‘অবসরভোগীদের গণতন্ত্র' হিসেবেও আখ্যা দিচ্ছেন৷ গত নির্বাচনের সময় দেখা গেছে ভোটারদের অর্ধেকের বেশির বয়স পঞ্চাশ বছরের বেশি৷ অথচ ১৯৮০ সাল অবধি নবীন এবং প্রবীণ ভোটারদের সংখ্যা প্রায় সমান ছিল৷
ভবিষ্যতে প্রবীণ ভোটারের সংখ্যা বেড়ে গেলে জার্মান রাজনীতি যে প্রবীণ বান্ধব হয়ে উঠবে তা আগেই আঁচ করেছিলেন সাবেক জার্মান প্রেসিডেন্ট রোমান হ্যারৎসগ৷ ২০০৮ সালে অবসরভাতা হঠাৎ করে বাড়ানো হলে তিনি জার্মানির রাজনীতিকে ‘অবসরভোগীদের গণতন্ত্র' আখ্যা দিয়ে জানান যে, রাজনৈতিক দলগুলো সামঞ্জস্যহীনভাবে বৃদ্ধ ভোটারদের নিয়ে খেলছেন৷
বিভিন্ন গবেষণায় অবশ্য দেখা গেছে যে, প্রবীণ ভোটাররা ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে বর্তমানের চেয়ে ভবিষ্যতের কথাই বেশি চিন্তা করেন৷ ফলে তারা ভোট দেয়ায় নবীনদের একেবারেই স্বার্থরক্ষা হচ্ছে না, এমন যারা মনে করেন তাঁরা ভুল করছেন৷ বরং পরিবার এবং নবীন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ কীভাবে সুন্দর হবে সে চিন্তা প্রবীণ ভোটারদেরও রয়েছে৷
প্রবীণ ভোটারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় সামাজিক গণতন্ত্রী দল এসপিডি, বিরোধী দল সবুজ দল এবং বাম দল এক নতুন পন্থার কথা ভাবছে৷ তারা চাচ্ছেন ভোটারদের সর্বনিম্ন বয়স আঠারো থেকে কমিয়ে ষোল করা হোক৷ দলগুলোর যুক্তি হচ্ছে, জার্মান সংসদে অনেক সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যা তরুণদের জীবনে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে৷ ফলে ষোল বছরে ভোট দেয়ার অধিকার পেলে তাদের জন্য তা ইতিবাচক হবে৷
কেউ কেউ অবশ্য শিশু-কিশোরদেরকেও ভোট দেয়ার অধিকার দেয়ার পক্ষে৷ তাদের একজন লেখক ভল্ফগাং গ্রুনডিগারের মতে, প্রত্যেক শিশু কিশোরের তারা যখন চাইবে তখন ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া উচিত৷ তাঁর কথা হচ্ছে, যেহেতু প্রবীণ ভোটারদের কোনো বয়স সীমা নেই, নবীন ভোটারদেরও থাকা উচিত নয়৷
সান্দ্রো শ্র্যোডার/এআই