সরকার গড়ার উদ্যোগ
৮ ডিসেম্বর ২০১৭সেপ্টেম্বরের শেষে জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে জার্মানিতে সরকার গঠনের চেষ্টা চলছে৷ তিন শিবিরের ‘জামাইকা' জোট গড়ার উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার পর চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের ইউনিয়ন শিবির এসপিডি দলের সঙ্গে আবার মহাজোট সরকার গঠন করতে আগ্রহী৷ এসপিডি প্রথমে এই সম্ভাবনা পুরোপুরি নাকচ করার পর জার্মান প্রেসিডেন্টের অনুরোধে নমনীয়তা দেখাতে শুরু করে৷ দলের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ফলের পর শীর্ষ নেতা মার্টিন শুলৎস অবশ্য একা এই দায়িত্ব কাঁধে নিতে চাননি৷ তিনি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দলের সদস্যদের রায় নিয়ে প্রতিটি পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন৷ বৃহস্পতিবার দলীয় সম্মেলনে তিনি মহাজোটের দিকে অগ্রসর হবার সায় পেলেন৷
মার্চ মাসে ১০০ শতাংশ ভোট পেয়ে দলের সভাপতি ও চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হবার পর মার্টিন শুলৎস নির্বাচনে এসপিডি দলকে উদ্ধার করতে পারেননি৷ উলটে বিপর্যয় নেমে এসেছে৷ ‘ডেয়ার স্পিগেল' পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই কঠিন অবস্থা সম্পর্কে বক্তব্য রেখেছেন৷
বৃহস্পতিবার শুলৎস আবার সভাপতি নির্বাচিত হলেন, তবে ৮১ শতাংশের মতো ভোট পেয়ে৷ নিজের অবস্থান আপাতত কিছুটা শক্ত করার পর তিনি দলের সদস্যদের কাছে ইউনিয়ন শিবিরের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনার জন্য সম্মতি চেয়েছিলেন৷ তবে শুলৎস স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, আলোচনা মানেই কিন্তু মহাজোট নয়৷ এই উদ্যোগের কোনো ‘স্বয়ংক্রিয়' পরিণতি নেই৷ অর্থাৎ মহাজোট ছাড়া বাইরে থেকে সংখ্যালঘু সরকারের প্রতি সমর্থন নিয়েও আলোচনা হতে পারে৷ অথবা ঐকমত্য না হলে নতুন নির্বাচনও সম্ভব৷ শেষ পর্যন্ত মহাজোটের বোঝাপড়া হলেও আবার দলের সদস্যদের রায় নেওয়া হবে৷ মোটকথা, এসপিডি দলের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি অভিন্ন কর্মসূচিতে স্থান পেলে তবেই সরকারে অংশ নেবার কথা ভাববে এসপিডি৷ মার্টিন শুলৎস ইউরোপীয় সমন্বয় প্রক্রিয়া আরও এগিয়ে নিয়ে যাবার পক্ষে জোরালো সওয়াল করেন৷
এসপিডি দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা এই অবস্থানের পক্ষে সমর্থন জানালেও বিশেষ করে দলের মধ্যে তরুণদের গোষ্ঠী মহাজোটের ঘোরতর বিরোধী৷ তাঁদের মতে, আবার মহাজোটে যোগ দিলে এসপিডি দলের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে৷
আগামী সপ্তাহে বুধবার এসিপিডি ও ম্যার্কেলের ইউনিয়ন শিবির প্রথম আলোচনায় বসছে৷ এসিপিডি নেতা মার্টিন শুলৎস, সিডিইউ নেতা আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও বাভেরিয়ার সিএসইউ নেতা হর্স্ট সেহোফার ছাড়াও তিন পক্ষের সংসদীয় দলের শীর্ষ নেতারাও তাতে অংশ নেবেন৷ তাঁরা ভবিষ্যৎ আলোচনার সময়সূচি স্থির করবেন৷ তারপর দুই শিবির অভ্যন্তরীণ আলোচনার পর স্থির করবে, জানুয়ারি মাসে প্রাথমিক আলোচনা শুরু করা যায় কিনা৷ মহাজোট সরকার গঠনের লক্ষ্যে দুই পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছালে তবেই জোট গঠন নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হবে৷ উল্লেখ্য, জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, বর্তমান পরিস্থিতিতে মহাজোট সরকার গড়ার পক্ষে জনসমর্থন বেড়ে চলেছে৷