1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে বড়দিন মানেই কেক, কুকিজ আর চকলেটের ঘটা

২৩ ডিসেম্বর ২০১১

আমাদের দেশে ঈদে, পূজা-পার্বনে, বিয়েতে, জন্মদিনে মিষ্টি খাওয়ার যেমন চল আছে, ঠিক তেমনই জার্মানিতে বড়দিনের কথা বললেই বলতে হয় চকলেটের কথা৷ বাচ্চা থেকে শুরু করে বড়রা – প্রায় সকলেই ভালোবাসে চকলেট খেতে৷

https://p.dw.com/p/13XzT
ARCHIV - ILLUSTRATION - Eine Frau beißt in eine Tafel Schokolade (Archivfoto vom 30.01.2009). Deutsche Wissenschaftler haben erstmals in den Geschmacksknospen der menschlichen Zunge einen Fettrezeptor nachgewiesen. Bislang sind fünf Grundgeschmacksqualitäten bekannt: süß, sauer, bitter, salzig und umami (herzhaft-fleischig). Die Geschmackswahrnehmung spiele eine wesentliche Rolle bei der Entscheidung, welche Nahrung dem Körper Energie liefert und welche eher gemieden werden sollte, schreiben die Forscher. Die Ergebnisse wurden nun in der Fachzeitschrift «Chemical Senses» veröffentlicht. Foto: Oliver Berg dpa/lbn (zu dpa 1484 vom 25.08.2011) +++(c) dpa - Bildfunk+++
আহ! জিভে পানি না এসে পারে নাছবি: picture alliance/dpa

চকলেটের মজাটা আসলে লুকোনো আছে চকলেট বানানোর মধ্যেই৷ মানে চকলেট বানাতে এমন কিছু উপাদান মেশানো হয়, যা চকলেটকে স্বাদে, গন্ধে একেবারে মজাদার করে তোলে৷ আর তা একবার খেলে বার বার খেতে ইচ্ছে করে৷ চকলেটে সাধারণত চিনি এবং থিওব্রোমিন থাকে৷ যা কিনা কোকো গাছের বীজে পাওয়া যায়৷ এছাড়া ট্রিপটোফেন, ফিনেথাইলামিন ও কফিইন থাকে চকলেটে৷ সারা বিশ্বে নানা কোম্পানি আছে যারা ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের চকলেট বানায়৷ উপমহাদেশে যেমন মিল্ক চকলেট সবচাইতে জনপ্রিয়, জার্মানি তেমনি বিখ্যাত ডার্ক চকলেটের জন্য৷ এছাড়ও এখানে পাওয়া যায় হোয়াইট চকলেট৷

মিল্ক চকলেটে কতোটা দুধ আর কতোটা চকলেট থাকবে – তা কিন্তু, আপনার বা আমার ইচ্ছের উপর নির্ভর করে না৷ যুক্তরাষ্ট্রের মিল্ক চকলেটে শতকরা ১০ ভাগ কোকো এবং ইংল্যান্ডের মিল্ক চকলেটের মধ্যে কমপক্ষে শতকরা ২৫ ভাগ কোকো থাকার নিয়ম৷ অন্যদিকে, ডার্ক চকলেটের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ ভাগ কোকো এবং ইংল্যান্ডে ৩৫ ভাগ কোকো থাকার নিয়ম৷ তবে অনেক সময়, চকলেটের স্বাদ আরো আকর্ষণীয় করার জন্য পুদিনা, কমলা অথবা স্ট্র-বেরির ব্যবহার করা হয়৷ কখনও কখনও নানা ধরণের বাদাম, ফল, ক্যারামেল, শস্য, এমনকি গোলমরিচ, আদা আর লঙ্কার ব্যবহারও করা হয়ে থাকে চকলেটে৷

প্রথমেই বলেছি চকলেটের মূল উপাদান হল থিওব্রোমিন, যা পাওয়া যায় কোকো গাছের বীজে৷ গাছটির বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘থিওব্রামা কাকাও'৷ এই গ্রিক শব্দ ‘থিওব্রামা'-র অর্থ হলো ‘দেবতার খাদ্য'৷ তাই এই দেবতার খাদ্য দিয়ে তৈরি জিনিস সুস্বাদু না হয়ে যায় কোথায়?

Stand: Pralinen-Manufactur Große-Bölting Josef Große-Bölting, Halle: 11.2.
নানা আকার আকৃতির চকলেটছবি: Koelnmesse Bilddatenbank

৯০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে দক্ষিণ আমেরিকার প্রাচীন ‘আজটেক' জাতি কোকো গাছকে গভীরভাবে ভক্তি করতো এবং তার বীজ মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করতো৷ প্রথমদিকে, এই গাছকে তারা ক্ষমতা ও সম্পদের উৎস বলে মনে করত৷ পরে অবশ্য তারা আবিষ্কার করে যে কোকো বীজ গুঁড়ো করে তার সঙ্গে মসলা মিশিয়ে চমৎকার এক সুস্বাদু পানীয় বানানো যায়৷ ষোড়শ শতাব্দীতে ইউরোপীয় পর্যটকরা দেশ ভ্রমণ শেষে ফেরার সময় এ পানীয় সঙ্গে নিয়ে আসেন এবং এর সঙ্গে মিষ্টি সুগন্ধ মিশিয়ে পান করা শুরু করেন৷ সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা দাবি করেন যে, পৃথিবীতে প্রথম চকোলেটের প্রচলন শুরু হয় আজ থেকে প্রায় তিন হাজার একশ বছর আগে৷ তখন থেকেই নাকি কোকো একটি দামি পানীয় হিসেবে প্রচলিত হয়৷

১৮০০ সালের দিকে যন্ত্রের সাহায্যে কোকোর বীজ গুঁড়ো করে তাপে গলানো হতো এবং তারপর তা ঢালা হতো বিভিন্ন ধরণের ছাঁচে৷ তরল কোকো ঠান্ডা হয়ে শক্ত হলে তা পেতো ছাঁচের আকার৷ এরপর ১৯২৫ সালে ডেনমার্কের কনরাড ভন হাউটেন কোকো বীজ থেকে কোকো-মাখন তৈরি করেন এবং বীজকে পেস্টে পরিণত করে উচ্চ চাপে তরল কোকো ও কোকো-মাখন আলাদা করেন৷ এর কয়েক বছর পরেই ১৮৩১ সালে ব্রিটেনে ‘ক্যাডবেরি' নামে একটি চকলেট কোম্পানি চকলেট উৎপাদন শুরু করে – আজ তা বিশ্ব বিখ্যাত৷

১৮৭৫ সালে সুইজারল্যান্ডের নাগরিক ড্যানিয়েল পিটার প্রথম মিল্ক চকোলেট তৈরি করেন৷ ১৮৮০ সালের দিকে সুইজারল্যান্ডের রুডলফ লিন্ড চকলেটকে নরম ও চকচকে করার জন্য একটু বেশি মাত্রায় চকলেট মাখন মেশানো শুরু করেন৷ চকলেট মাখনকে তখন থেকে ৯৭ ডিগ্রি ফারেনহাইটে, অর্থাৎ আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় গলানো শুরু হয়৷ আর সেই কারণেই, আমাদের মুখের মধ্যে সহজেই গলে যায় চকলেট৷ বলা বাহুল্য, রুডলফ'এর আবিষ্কৃত চকলেটই ছিল প্রথম মজাদার চকলেট৷

১৯০৫ সালে ক্যাডবেরি ‘ডেয়ারি মিল্ক' নামে যে চকলেট বাজারে আনে তা দারুণ জনপ্রিয়তা পায়৷ আর সেই চকলেট আজো যে জনপ্রিয়, তা তো আর আপনাদের অজানা নয়! আরো একটা মজার তথ্য কি জানেন? মিউজিয়াম পাগল জার্মানরা এই চকলেটের জন্য আস্ত একটা মিউজিয়াম গড়ে তুলেছে৷ আর কোলন শহরেই রয়েছে সেই মিউজিয়াম৷

প্রতিবেদন: দেবারতি গুহ

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য