জার্মানিতে বিদেশিদের ওপর গাড়িহামলা
২ জানুয়ারি ২০১৯বছরের শেষ দিন মধ্যরাতের পরই পুলিশের কাছে খবর আসে, ৫০ বছর বয়সি এক চালক বোট্রোপ শহরে এক পথচারীর ওপর তাঁর গাড়ি চালিয়ে দিয়েছেন৷ তবে শেষ মুহূর্তে সরে গিয়ে সে হামলা থেকে বাঁচেন পথচারী৷
এরপর চালক শহরতলীর দিকে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একদল পথচারীর ওপর গাড়ি তুলে দেন৷ এ ঘটনায় আহত হন অন্তত ৮ জন পথচারী৷ আহতদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷ এরপর পাশের শহর এসেনেও বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা একদল যাত্রীর ওপর গাড়ি তুলে দিয়ে আহত করার চেষ্টা করেন ঐ ব্যক্তি৷ এর পরপরই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে৷
পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে ৪৬ বছরের এক সিরীয় নারী, তাঁর স্বামীএবং ১৬ ও ১৭ বছর বয়সি দুই মেয়ে রয়েছেন৷ এছাড়া, আফগানিস্তান থেকে আসা ২৯ বছরের এক নারী ও তাঁর ৪ বছরের ছেলে, ১০ বছর বয়সি এক সিরীয় মেয়ে এবং তুর্কি বংশোদ্ভূত এক জার্মানও রয়েছেন আহতদের মধ্যে৷
রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় একাধিক হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন জানালে বিচারক তা মঞ্জুর করেন৷
আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে বোট্রোপ শহরের মেয়র বের্ন্ড টিশলার জানিয়েছেন, ‘‘এই ঘটনায় তিনি ‘আতঙ্কিত ও মর্মাহত'৷ বোট্রোপ শহর প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পূর্তিতে যে উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছিল, তা এরই মধ্যে বাতিল করা হয়েছে৷''
বিদেশি-বিদ্বেষ
পুলিশ জানিয়েছে, আক্রমণকারী ব্যক্তিও এসেনের বাসিন্দা৷ আটকের পর থেকে নানারকম বর্ণবাদী মন্তব্য করছেন ঐ ব্যক্তি৷ পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীর মানসিক স্বাস্থ্যহীনতার প্রমাণ পেয়েছে তাঁরা৷
নর্থ রাইন ওয়েস্ট ফেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হার্বার্ট রয়েল জানিয়েছেন, ‘‘চালকের পরিষ্কার লক্ষ্য ছিল ‘বিদেশিদের হত্যা করা'৷'' এই ঘটনাকে ‘খুব ‘গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে' বলেও জানান তিনি৷
এ বিষয়ে জোর তদন্ত শুরুর কথা জানিয়ে রয়েল বলছেন, তাঁর রাজ্যে এ ধরনের কোনো অপরাধকে ছাড় দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না৷
রাজ্য সরকারের প্রধানমন্ত্রী আরমিন লাশেট আহতদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বিদেশি-বিদ্বেষ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন৷
এক টুইটে তিনি বলেন, ‘‘নববর্ষের প্রথম দিনে ২০১৯ সালের জন্য আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার৷ ডানপন্থি সহিংসতার বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে৷''
বিল্ড পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোরেস্ট সেহোফার বোট্রোপের এই হামলার ঘটনায় তাঁর ‘উদ্বেগের' কথা জানিয়েছেন৷
পার্লামেন্টে গ্রিন পার্টির স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র আইরিন মিহালিক জার্মান মিডিয়া গ্রুপ আরএনডিকে জানিয়েছেন, ‘‘চালকের মানসিক অবস্থা যাই হোক, তিনি ছাড়া আর কেউ হামলার পেছনে আছে কি না, তা কর্তৃপক্ষের খুঁজে বের করা উচিত৷''
এডিকে/ (ডিপিএ, এএফপি)