পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ?
৭ জানুয়ারি ২০১৬পাকিস্তান ওদিকে বাংলাদেশের কূটনীতিক মৌসুমি রহমানকে প্রত্যাহার করতে বলেছে কোনো কারণ ছাড়াই৷ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি৷'' তাঁর কথায়, ‘‘মৌসুমী রাহমানকে প্রত্যাহারের কোনো কারণ দেখাতে পারেনি পাকিস্তান৷ এভাবে কূটনীতিক প্রত্যাহার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য ভালো নয়৷''
এর আগে ২৩শে ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানি কূটনীতিক ফারিনা আরশাদকে প্রত্যাহার করা হয়৷ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ যে, তিনি জঙ্গি অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত৷ এ কথা জানা যায় একজন আটক জঙ্গির জবানবন্দি থেকে৷ নিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা কখনই কোনো ডিপ্লোম্যাটিক ইমিউনিট ব্যবহার করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে সংকটে ফেলতে পারে – এমন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেব না এবং অতীতেও দেইনি৷''
বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের এই আচরণ নতুন কোনো ঘটনা নয়৷ এর আগে জাল টাকা ও মাদক ব্যবসা এবং বাংলাদেশবিরোধী বক্তব্যের জন্য পাকিস্তানের দু'জন কূটনীতিককে বাংলাদেশ থেকে প্রত্যাহার করা হয়৷ প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান কখনোই বাংলাদেশবিরোধী অবস্থানের কোনো পরিবর্তন করেনি৷ বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতাদেও ফাঁসির ঘটনায় তারা তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে৷ বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত নেতাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তান৷
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা অনেকদিন ধরেই পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানিয়ে আসছি৷ কারণ এই দেশটি বাংলাদেশবিরোধী অবস্থান কখনোই ত্যাগ করেনি৷ তারা বাংলাদেশে এখন জঙ্গিবাদ ছড়ানোর চেষ্টা করছে৷ জাল টাকা, মাদক চোরাচালান – এ সবও করা হচ্ছে দূতাবাসের মাধ্যমে৷''
তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না৷ তবে আমার মনে হয়, আন্তর্জাতিক চাপের কারণে সরকার সেটা করছে না৷ সম্পর্ক ছিন্ন করলে সার্ক, ওআইসি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ কিন্তু সেটা এখন আমাদের দেখার সময় নেই৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘যতি সম্পর্ক রাখতেই হয়, তাহলে পাকিস্তানকে একাত্তরের গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে৷ নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে৷ আমাদের পাওনা ফেরত দিতে হবে৷ এছাড়া পাকিস্তানি ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধী সেনা সদস্যের বিচার করতে হবে৷''
ওদিকে এরইমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে৷ তবে এটা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কোনো প্রভাব ফেলছে না৷ তাই শাহরিয়ারর কবির মনে করেন, ‘‘সরকারকে এখন পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷''
আপনার কী মনে হয় বন্ধু৷ বাংলাদেশের কি পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত? জানান নীচের ঘরে৷