1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

খাশগজি হত্যার প্রমাণ চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

১৮ অক্টোবর ২০১৮

স্বেচ্ছা নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাশগজিকে সৌদি আরবের এজেন্টরা হত্যা করেছে বলে তুরস্ক যে দাবি করছে, তার পক্ষে প্রমাণ চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷

https://p.dw.com/p/36lmP
ছবি: picture-alliance/AP Photo/V. Mayo

এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় রিয়াদকে সহায়তা করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি৷

এক সময় সৌদি রাজ পরিবারের ঘনিষ্ঠ খাশগজি পরে রাজতন্ত্রের এই দেশটির শাসকদের সমালোচনায় মুখর হন৷ এক পর্যায়ে তিনি স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান যুক্তরাষ্ট্রে৷ গত ২ অক্টোবর বিয়ের জন্য কাগজপত্র সংগ্রহ করতে তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর থেকে তিনি নিখোঁজ৷ তাঁকে সেখানে হত্যা করে টুকরো টুকরো করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তুরস্ক৷ তাদের দাবি, অডিও-ভিডিও আছে তাদের কাছে৷

তাদের কাছে এসব তথ্য-প্রমাণ চাওয়ার কথা জানিয়ে ট্রাম্প বুধবার বলেন, ‘‘আমরা তাদের এটা দিতে বলেছি, যদি তা সত্যিকারে থেকে থাকে৷’’

তুরস্কের কর্মকর্তারা সৌদি আরবের বিরুদ্ধে খাসোগজিকে হত্যার কথা বলে এলেও তা অস্বীকার করছেন মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশটির কর্মকর্তারা৷ এই অঞ্চলে ওয়াশিংটনের সবচেয়ে বড় মিত্র সৌদি আরবকে এ হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে৷

অভিযোগ অস্বীকার করে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আসলে কী ঘটেছে তা আমি জানতে চাইছি৷’’

এ সপ্তাহে সৌদি আরব ও তুরস্ক সফর করা পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও'র কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় থাকার কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷

তুরস্ক বলছে, খাসোগজিকে নির্যাতনের প্রমাণ রয়েছে তাদের কাছে৷ কনস্যুলেটে ঢোকার পরপরই তাঁকে হত্যা করা হয় বলে অডিও-ভিডিও পর্যালোচনায় পেয়েছেন তারা৷ তুরস্কের দৈনিক ইয়েনি সাফাকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের কাছে অডিও রেকর্ডিং আছে, যাতে এই সাংবাদিককে নির্যাতন, প্রথমে তাঁর হাতের আঙুল কাটা এবং তারপর মাথা কেটে ফেলার কথা উঠে এসেছে৷

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা ডয়চে ভেলের জুলিয়া হানকে বলেন, সাংবাদিককে হত্যা করার প্রমাণ আছে এবং সেগুলো সৌদি কনস্যুলেটে তল্লাশিতে পাওয়া তথ্য-উপাত্তের সঙ্গে মিলে গেছে৷

এই সপ্তাহের প্রথম দিকেই ইস্তানবুলে সৌদি আরবের ওই কনস্যুলেটে ঢুকে তল্লাশি চালান তুরস্কের কর্মকর্তারা৷ তবে ওই তল্লাশির আগেই সৌদি আরবের এজেন্টরা সেখান থেকে তথ্য-প্রমাণ সরানোর চেষ্টা করে বলে সন্দেহের কথা উঠে এসেছে তুরস্কের সংবাদমাধ্যমে৷

খাশগজি যেদিন কনস্যুলেটে যান, সেই ২ অক্টোবর মধ্যরাতে একটি প্রাইভেট বিমানে ইস্তানবুলে আসেন একদল সৌদি নাগরিক৷ ওই দিনই পরে তারা ইস্তানবুল ছাড়েন৷ এদের মধ্যে একজনকে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে শনাক্ত করেছেন তুরস্কের কর্মকর্তারা৷

খাশগজির শেষ লেখা

ওয়াশিংটন পোস্ট বুধবার খাশগজির লেখা ‘শেষ কলাম’ প্রকাশ করেছে, যাতে আরব বিশ্বজুড়ে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার দুর্দশার কথা তুলে ধরে ওই অঞ্চলে অবাধ মত প্রকাশের সুযোগ চেয়েছেন তিনি৷ উত্তর আফ্রিকা ও আরব দেশগুলো নিয়ে তিনি লেখেন, ‘‘সরকারি ভাষ্যই সেখানে জনগণের ভাবনা ঠিক করে দেয়৷ অনেকে তা বিশ্বাস না করলেও অধিকাংশই ওই ভুল বক্তব্যে বিভ্রান্ত হন৷’’

আরব বিশ্বে স্বাধীন সাংবাদিকতার পক্ষে স্পষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য পশ্চিমাদের সমালোচনা করেন খাশগজি৷

‘‘আরব সরকারগুলোকে ক্রমবর্ধমান হারে সংবামাধ্যমকে চুপ করিয়ে দিতে পারার স্বাধীন সাম্রাজ্য দেওয়া হয়েছে৷ এক সময় সাংবাদিকরা মনে করতেন, ছাপা পত্রিকার ক্ষেত্রে সংবাদ যে নিয়ন্ত্রণ ও সেন্সরশিপের মুখে পড়ছে, তা থেকে মুক্তি দেবে ইন্টারনেট৷ কিন্তু এই সরকারগুলো, যাদের অস্তিত্ব তথ্য নিয়ন্ত্রণের ওপর নির্ভর করে, তারা আগ্রাসীভাবে ইন্টারনেট আটকে দিয়েছে৷ তারা স্থানীয় সাংবাদিকদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি বিশেষ সংবাদ প্রকাশকদের ক্ষতি করতে বিজ্ঞাপনদাতাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে৷’’

এএইচ/এসিবি (এএফপি, এপি)