দলিত রাজনীতি নিয়ে উত্তাল মহারাষ্ট্র
৪ জানুয়ারি ২০১৮মুম্বইয়ের ‘ভাইদাস' হলে বৃহস্পতিবার দলিত ছাত্র সগঠনের জাতীয় সভা হওয়ার কথা ছিল৷ সেখানে বক্তৃতা করার কথা ছিল গুজরাটের দলিত নেতা জিগনেশ এবং দিল্লির বামপন্থি ছাত্রনেতা উমর খালিদের৷ কিছুদিন আগে পুনের অন্য এক সভায় এই দু'জনই বক্তৃতা করেছিলেন৷ ব্রিটিশ আমলে ঘটা কোরেগাঁও যুদ্ধের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল সেখানে৷ সেখানেই তাঁরা উসকানিমূলক বক্তৃতা করেন বলে অভিযোগ৷ নতুন বছরের গোড়ায় মহারাষ্ট্রে দলিত সংগঠনগুলি বনধেরও ডাক দিয়েছিল৷ বনধকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে মহারাষ্ট্র৷ জায়গায় জায়গায় বাস পোড়ানো হয়৷ অশান্তিও হয় যথেষ্টই৷ সে কথা মাথায় রেখেই মুম্বই পুলিশ এদিনের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়৷
গুজরাটের বিধানসভা ভোটের কিছুদিন আগে থেকেই ভারতীয় রাজনীতিতে জিগনেশ মেওয়ানি আলোকবৃত্তে৷ দলিত আন্দোলনকে হাতিয়ার করে বিজেপি'র শক্ত ঘাঁটি গুজরাটে জায়গা তৈরি করেন তিনি৷ দেশের অন্যান্য বামপন্থি দল ও ছাত্র সংগঠনগুলি জিগনেশকে সমর্থন দেয়৷ গুজরাট নির্বাচনে অরুন্ধতী রায়ের মতো লেখকও জিগনেশকে প্রকাশ্যে সমর্থন দেন৷ কিন্তু একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জিগনেশ যে ভোটেও জিতে যাবেন, রাজনৈতিক মহল তা আশা করেনি৷ জিগনেশের জয় তাই ভারতের দক্ষিণপন্থি রাজনীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়৷ অন্যদিকে, জিগনেশের জয়কে বামপন্থি দলগুলি তাদেরই জয় বলে মনে করতে শুরু করে৷
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করে, এমন পরিস্থিতিতে জিগনেশকে আর বাড়তে দিতে চাইছে না দক্ষিণপন্থি রাজনীতি৷ যেনতেনপ্রকারেণ জিগনেশকে চুপ করানোই এখন তাদের রাজনৈতিক কৌশল৷ অন্যদিকে দলিত এবং বামপন্থি সংগঠনগুলি দেশ জুড়ে জিগনেশকে নিয়ে প্রচার চালানোর পরিকল্পনা করেছে৷ মহারাষ্ট্রের অনুষ্ঠানও ছিল তারই অংশ৷ অল ইন্ডিয়া ন্যাশনাল স্টুডেন্টসের তরফ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে রাস্তাতেই তারা সভা করবে৷ বক্তারাও সকলে হাজির থাকবেন বলে জানানো হয়েছে৷ এরপরেই সংগঠনের সদস্য এবং কোনও কোনও বক্তাকে আটক করে পুলিশ৷ জিগনেশ এবং উমর খালিদের বিরুদ্ধেও এফআইআর করা হয়৷
এসজি/এসিবি (রয়টার্স, টাইমস অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)