1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দেদার মজা দিলেন মোদী

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২৯ এপ্রিল ২০১৯

সংসদীয় নির্বাচন যখন পুরোদমে চলছে, টিভিতে একটি দীর্ঘ অরাজনৈতিক সাক্ষাৎকার দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী৷ তাঁর রকমসকম দেখে খুব আমোদ পেয়েছেন সাংবাদিকরা৷

https://p.dw.com/p/3HbwK
Neu-Delhi: Premierminister Narendra Modi während eines Gesprächs mit dem Schauspieler Akshay Kumar
ছবি: IANS

হিন্দি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা অক্ষয় কুমার৷ তিনি সাক্ষাৎকার নেবেন ভারতের সবথেকে ক্ষমতাধর মানুষ, দেশের সরকারপ্রধান নরেন্দ্র মোদীর৷ এবং সেই সাক্ষাৎকারটি হবে আদ্যন্ত অরাজনৈতিক৷ দেশের সবথেকে বড় গণতান্ত্রিক ঘটনা, অর্থাৎ, সাধারণ নির্বাচন যখন পুরোমাত্রায় চলছে, তখন তথাকথিত এক ‘‌অরাজনৈতিক'‌ কথাবার্তা কেন, কী প্রয়োজনে, সে নিয়ে ধন্দ থাকলেও একজন অভিনেতা এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর জুটিটাই যেহেতু রীতিমতো আগ্রহজনক, লোকে নির্ধারিত সময়টা খরচ করলো সাক্ষাৎকারটি দেখতে৷ এবং দেখা শেষ করেই হাসিতে লুটোপুটি খেলো সোশাল মিডিয়ায়, সংবাদমাধ্যমে৷ এমন মজাদার কথোপকথনে কোনো সরকারপ্রধান শেষ কবে অংশ নিয়ে লোককে আনন্দ বিতরণ করেছেন, সেই ইতিহাস খুঁজে দেখা হলো৷ এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীর একেকটি জবাব নিয়ে রঙ্গ-ব্যঙ্গ হলো দেদার৷ সাক্ষাৎকারের প্রথম প্রশ্নটি বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রতিনিধির আম-প্রীতি নিয়ে!৷ অক্ষয়কুমার হাসিমুখে জানতে চাইলেন, আপনি আম খেতে ভালোবাসেন, আম কি আপনি কেটে খান, না চুষে খান?‌ 

‘অরাজনৈতিক'‌ কথোপকথনের মাধ্যমে মোদী আসলে আত্মপ্রচারই করলেন:রাজীব ঘোষ

‘‌‘এই ধরনের কোনো প্রশ্ন দিয়ে যদি সাক্ষাৎকার শুরু হয়, তাহলে সেটা যা হয়, তাই হওয়ার৷'‌'‌ বলছেন বাংলা দৈনিক আজকাল-এর বার্তা সম্পাদক রাজীব ঘোষ৷ কিন্তু তার মতে, বারাণসী লোকসভা কেন্দ্রে মনোনয়নপত্র পেশ করার আগে যখন আর মাত্র একদিন সময় আছে, এবং নির্বাচন ইতিমধ্যে শুরু হয়ে যাওয়ায় নির্বাচনি আচরণবিধিও জারি হয়ে আছে, এই ‘‌অরাজনৈতিক'‌ কথোপকথনের মাধ্যমে মোদী আসলে আত্মপ্রচারই করলেন৷ খবরে থাকতে চাইলেন৷ টেলিভিশনে দিনভর জায়গা দখল করে রাখার এই নকশাটা গোড়া থেকেই ছিল৷ খুব বুদ্ধি করে সেটা বাজারে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে৷ ‘‌‘‌কিন্তু দেশের প্রধানমন্ত্রীর এটা শোভা দেয় না৷'‌'‌ বললেন রাজীব ঘোষ৷

সাক্ষাৎকারের ছুতোয় আত্মপ্রচারের পাশাপাশি সুকৌশলে প্রতিপক্ষকে খাটো করার পুরনো চালও ফের চেলেছেন নরেন্দ্র মোদী৷ যেমন বলেছেন, তিনি অনেক রাত অবধি কাজ করেন৷ তাঁর আগে যিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনি সন্ধে পাঁচটা-ছটা বাজলেই বাড়ি চলে যেতেন!‌ অর্থাৎ, তাঁর পূর্বসুরি ড. মনমোহন সিংয়ের কাজে মন ছিল না, বোঝাতে চেয়েছেন মোদী৷ অথবা বলেছেন, আগে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে সবাই খুব গম্ভীর থাকত৷ তিনি আসার পর এখন খোলা হাওয়া৷ সবাই রঙ্গ-রসিকতা করে৷ বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠতা বোঝাতে গিয়ে বলে বসেছেন, প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার সঙ্গে নাকি তাঁর তুই-তোকারির সম্পর্ক৷ তাতে হেসে আকুল হয়েছে সোশাল মিডিয়া৷ অনেকেই জানতে চেয়েছে, ইংরেজি ভাষায় আপনি, তুমি আর তুইয়ের তফাৎটা কীভাবে করা হয়, সেটা যদি কেউ বুঝিয়ে দিতে পারে!‌

পরিচালক হিসেবে অক্ষয়কুমার নয়, মোদীকে পেলে খুব খুশি হবে:অনিকেত চট্টোপাধ্যায়

একসময়ের সাংবাদিক, এখন চিত্র পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায় সিরিয়াস ছবির পাশাপাশি বেশ কিছু মজার ছবিও করেছেন, যার মজাদার সংলাপ দর্শকের মুখে মুখে ফিরেছে৷ তিনি কি এই সাক্ষাৎকার থেকে মজার কোনো খোরাক পেলেন, বা পরের ছবির জন্য রসদ? অনিকেত ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‌‘‌অনেকগুলো দিক থেকে এটা মজার৷ এক হচ্ছে, সাক্ষাৎকারটা শুরুই হচ্ছে, আপনাকে কিছু অরাজনৈতিক প্রশ্ন করব৷ কখন এই প্রশ্নটা করা হচ্ছে?‌ যখন দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ঘটনাটা চলছে, সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে, তখন৷ এটা খুব হাস্যকর এক বৈপরিত্য৷'‌'‌ অনিকেত বলছেন, দ্বিতীয় মজার খোরাক হলো, কোনো সিরিয়াস, গভীর প্রশ্ন করা হয়নি প্রধানমন্ত্রীকে৷ অথচ সেটা করাই যেতো, রাজনীতি বাদ দিয়েও৷ তবে অনিকেত বলছেন, তৃতীয় বিষয়টি বেশ সাঙ্ঘাতিক৷  ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন অক্ষয়কুমার, যিনি ক্যানাডার নাগরিক৷ ভারতীয় নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়ে তিনি ক্যানাডার নাগরিক হয়েছেন৷ তাঁকেই বেছে নেওয়া হয়েছে একজন দেশপ্রেমিক, অসম্ভব জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার নিতে৷ ‘‌‘একজন পরিচালক হিসেবে অক্ষয়কুমার নয়, মোদীকে পেলে আমি খুব খুশি হবো৷'‌'‌ বললেন অনিকেত চট্টোপাধ্যায়৷ তাঁর মন্তব্য, ‘‌‘‌‌যা কিছু প্রাচীন, যা কিছু অর্বাচীন, সমস্ত কিছুকে নিয়ে নিজের কোটরে থাকতে চায়, এরকম কোনো চরিত্র আমি যদি কোনোদিন পাই আমার গল্পে, তা হলে আমি পছন্দ করব আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেই!‌'‌'‌

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান