1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজপাকিস্তান

নারী দিবস পালন নিয়ে পাকিস্তানে রক্ষণশীলদের প্রতিক্রিয়া

৭ মার্চ ২০২২

‘মাই বডি মাই চয়েস' স্লোগান দিয়ে ‘আওরাত আজাদি মার্চ' পালন করা নিয়ে পাকিস্তানে বিতর্ক বেড়েই চলছে৷ এমনকি এর আয়োজকেরা পড়ছেন রক্ষণশীলদের হুমকির মুখে৷

https://p.dw.com/p/487mW
২০২১ সালে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-এ ছবি: Aamir Qureshi/AFP/Getty Images

‘আওরাত আজাদি মার্চ' শুরুর আগ পর্যন্ত পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক নারী দিবস একটি তেমন কারো মনোযোগ পায়নি৷ বেশিরভাগ সময় বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও থেকে পালন করা হত৷ আওরাত আজাদি মার্চের কল্যাণে নারী দিবসের কুচকাওয়াজ এখন সারা দেশের হাজারো নারী, অধিকারকর্মী এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে সর্বজনীন অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে ৷ আর এই মার্চকে ঘিরে পাকিস্তানে এখন মূলধারা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷ অনেক মানুষ বিশেষ করে পুরুষেরা এটাকে পশ্চিমের অর্থায়নে চালিত একটি ‘অশ্লীল' ইভেন্ট বলে অভিহিত করেছেন৷

‘মাই বডি মাই চয়েস‘ স্লোগানের আয়োজকদের ধর্মীয় ও রক্ষণশীল গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকে থেকে প্রকাশ্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে৷

সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটি এসেছে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকারের থেকে, যা এনজিওগুলোকে দমন-পীড়ন করেছে৷ কর্তৃপক্ষ নারী অধিকার গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বিদেশি অর্থ গ্রহণ এবং দেশে পশ্চিমা মূল্যবোধের প্রচারের অভিযোগ এনেছে৷ ২০১৮ সালে, পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকার ১৮টি আন্তর্জাতিক এনজিওকে জোর করে বন্ধও করে দিয়েছে৷

নারী অধিকার গোষ্ঠী উইমেন ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সভাপতি ইসমত শাহজাহান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আওরাত আজাদি মার্চ কোন প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ সহযোগিতা পায় না৷ আমরা আমাদের স্বাধীনতার স্বার্থে অর্থ সংগ্রহ করি৷ সরকার এই আন্দোলনকে নষ্ট করতে চায়৷’’

নারী দিবস পালন 'পশ্চিমা ভাবনা'

আওরাত আজাদি মার্চ এর বিরোধী লেখক খলিল-উর-রহমান কামার ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘নারীবাদ একটি পশ্চিমা ধারণা ৷ নারী অধিকার কর্মীরা ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অর্থ পায়৷’’

২০১৯ সালের নারী মার্চের অংশগ্রহণকারীদের প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘নিজের খাবার নিজে গরম করুন', ‘আমার শরীর আপনার যুদ্ধক্ষেত্র নয়' এমন কিছু স্লোগান পাকিস্তানের রক্ষণশীলদের বিশেষভাবে ক্ষুব্ধ করে৷

খলিল-উর-রহমান কামার আরও বলেন ‘‘নারীরা যদি এই বেহায়া এবং নোংরা স্লোগানের ব্যবহার বন্ধ করে, আমি তাদের সবচেয়ে বড় সমর্থক হব ৷ তাদের জানা উচিত যে, তাদের বাবা ও স্বামীকে অসম্মান করে তারা তাদের অধিকার আদায় করতে পারবে না৷ নারীবাদিরা এই দেশটিকে ধ্বংস করছে ৷’’ 

নারীদের জন্য বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক দেশ পাকিস্তানের বর্তমান রীতিগুলো চ্যালেঞ্জ করার জন্য এই স্লোগানগুলো গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন অধিকার কর্মীরা ৷ এছাড়াও পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী শতকরা প্রায় ৭০ থেকে ৯০ ভাগ পাকিস্তানি নারী শারীরিক এবং মানসিক সহিংসতার শিকার হয় ৷ 

আওরাত আজাদি মার্চের অন্যতম সংগঠক তুবা সৈয়দ ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘পুরুষেরা নারীর শরীরকে তাদের সম্পত্তি বলে মনে করেন, নারীরা নিজেদের বা তাদের শরীর নিয়ে কথা বললে তারা বিরক্ত বোধ করেন৷’’  রাষ্ট্র, মিডিয়া এবং ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলো নারীবাদকে ‘টুইস্ট' করার অসম্মান করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানান তিনি৷ 

নারীবাদীদের প্রতি হুমকি বাড়ছে

বেশ কয়েক বছর ধরে, পাকিস্তানের ধর্মীয় দলগুলো আন্তর্জাতিক নারী দিবসে তাদের নিজস্ব নারীবাদ-বিরোধী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে৷ ডানপন্থি দল জমিয়ত উলেমা-ই ইসলাম (জেইউআই-এফ) গত বছর পাল্টা মিছিল করে এবং রাজধানী ইসলামাবাদে নারীদের মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের উপর পাথর ছুঁড়ে ৷ ধর্মীয় দলগুলোর নারী শাখাও নারীদের ইসলামি মূল্যবোধ প্রচারের জন্য ৮ মার্চ এ ‘হায়া দিবস'-এর  আয়োজন করে৷

ডানপন্থি জামায়াত-ই-ইসলামী দলের সামিয়া রাহিল কাজী ডিডব্লিউকে বলেন, ‘‘ইসলামে নারী ও পুরুষের আলাদা স্থান ও ভূমিকা রয়েছে৷ তার দল ১৯৯৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সমাবেশ করে আসছে৷ তাদের এ বছরে থিম ‘শক্তিশালী পরিবারই গঠন করে শক্তিশালী সমাজ৷’’

অধিকারকর্মী সৈয়দ মনে করেন, যে কোনো মিছিলের জন্য পাল্টা মিছিল অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ৷ গত বছর আওরাত আজাদি মার্চের অংশগ্রহণকারীদের উপর হামলার পর আয়োজকেরা এবার নিজেদের রক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছে৷

মাভরা বারি (ইসলামাবাদ)/এনএস 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান