ন্যূনতম মজুরি কেউই মানছে না
৫ নভেম্বর ২০১৩সোমবার দীর্ঘ বৈঠক এবং ভোটাভুটির পর, তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫,৩০০ টাকা বলে ঘোষণা করেন মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে রায়৷ ৪-২ ভোটে এই মজুরি নির্ধারণ হয়৷ মালিক পক্ষের দু' জন প্রতিনিধিই এই মজুরির বিপক্ষে ভোট দেন৷ তাঁরা সর্বশেষ ৪,৪৫০ টাকা মজুরি দিতে রাজি হন৷
নির্ধারিত ৫,৩০০ টাকার মধ্যে মূল বেতন ৩,২০০ টাকা, বাড়ি ভাড়া ১,২৮০ টাকা, চিকিত্সা ভাতা ৩২০টাকা, যাতায়ত ২০০ টাকা এবং খাদ্য ভর্তুকি ৩০০ টাকা৷
এর আগে ২০১০ সালে সর্বশেষ ৩,০০০ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়৷ এরপর তাজরীন ফ্যাশানস-এ আগুন এবং রানা প্লাজা ধসের পর, পোশাক শ্রমিকদের নিরপত্তা এবং মজুরি নিয়ে দেশে-বিদেশে প্রশ্ন ওঠে৷ তাই তিন মাস আগে নতুন করে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণে মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়৷ শুরুতে মালিকপক্ষ মাত্র ৬০০ টাকা বাড়িয়ে ৩,৬০০ টাকা মজুরির প্রস্তাব করে৷ আর শ্রমিকরা দাবি করেন ৮,১০০ টাকা৷
সোমবারের বৈঠকে মালিকরা শেষ পর্যন্ত ৪,৪৫০ টাকা ন্যূনতম মজুরি দিতে রাজি হন৷ শ্রমিকরা দাবি করেন ৭,৩০০ টাকা৷ অবশেষে নিরপেক্ষ প্রতিনিধিরা ৫,৩০০ টাকা প্রস্তাব করলে তা ভোটাভুটির মাধ্যমে পাস হয়৷
বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, এটা খসড়া, যা চূড়ান্ত হবে ৯ই নভেম্বর৷ তাঁরা চাইবেন, মজুরি যেন ৭,৩০০ টাকাই নির্ধারণ করা হয়৷ এ জন্য তাঁরা আন্দোলনে যাবেন না কি করবেন, তা শ্রমিক সংগঠনগুলো বৈঠক করে ঠিক করবে৷
এদিকে মালিক পক্ষের প্রতিনিধি আশরাফ জামাল দিপু ডয়চে ভেলেকে জানান যে, তাঁদের পক্ষে ৫,৩০০ টাকা মজুরি দেয় সম্ভব নয়৷ তাঁরা এর বিরুদ্ধে আপিল করবেন৷ কারণ, এই মজুরি দিলে তাঁদের পক্ষে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে৷
ওদিকে ২০১০ সালের মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান ইকতেদার আহমেদ ডয়চে ভেলেক জানান, শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি কমপক্ষে ৬,০০০ টাকা হওয়া উচিত৷ মজুরি কমিশনের উচিত ছিল, সোমবারই খসড়া প্রকাশ না করে মালিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে ৬,০০০ টাকা নির্ধারণ করা৷ তিনি বলেন, এভাবে ভোটাভুটি করে নয়, সমঝোতা এবং ঐক্যমতের ভিত্তিতে মজুরি নির্ধারণ করা উচিত৷ নয়ত তা কার্যকর করতে সমস্যা হবেই৷