চাপ সৃষ্টি করতে চান মোদী
২১ মে ২০১৪মঙ্গলবার ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য কলকাতা থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকের খবরে বলা হয়, ‘মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে একটি পৃথক বিভাগ ও দপ্তর খোলা হবে৷ আর ঐ দপ্তরের প্রধান দায়িত্ব হবে আসাম, পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলোতে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ' ঠেকানোর রূপরেখা ও ‘অনুপ্রবেশকারী' চিহ্নিত করা৷ একইভাবে পাঞ্জাব, রাজস্থান ও কাশ্মিরে পাকিস্তানি অনুপ্রবেশ রোধ করাই এই দপ্তর খোলার উদ্দেশ্য৷
এই খবরে বাংলাদেশে স্বাভাবিকভাবেই আবারো নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে৷ তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নির্বাচনের আগে-পরের বিষয় নয়৷ মোদী মূলত তাঁর রাজনীতিই করছেন৷''
তিনি বলেন, ‘‘একদিকে তিনি বাংলাদেশ সরকারকে চাপে রাখতে চান ট্রানজিটসহ নানা সুবিধা আদায়ের জন্য৷ আবার অন্যদিকে তিনি চান পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামকে নিয়ন্ত্রণে আনতে৷ পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামে মোদীর ফরমুলা এবার কাজে লাগেনি৷ বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা বা ‘বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী' ইস্যু ব্যবহার করে তিনি একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি৷ পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির দুর্গ অক্ষত আছে৷ তাই মোদী এখন চাইছেন, ২০১৬ সালে রাজ্য সরকারের নির্বাচনে তাঁর ইস্যুগুলো কাজে লাগাতে৷''
অধ্যাপক আহমেদ বলেন, ‘‘শুধু বাংলাদেশ কেন ভারতের নাগরিকরাও বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেন৷ এছাড়া অবৈধ অনুপ্রবেশ করলে আইনি ব্যবস্থার বিধান আছে সব দেশেই৷ এক দেশের নাগরিকরা আরেক দেশে অনুপ্রবেশ করলে সেটা ব্যক্তিগতভাবে করেন৷ কোনো সরকার এটাকে উৎসাহিত করে না৷ তাই এটা নিয়ে মোদীর বাড়াবাড়ি রাজনীতিরই অংশ৷ বাংলাদেশ সরকারকে তা বুঝতে হবে৷ কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে সমমর্যাদার ভিত্তিতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য কাজ করতে হবে৷''
ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, ‘‘এ জন্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য থাকতে হবে৷ নয়ত এর সুযোগ নেবে মোদী সরকার৷ কারণ, বাংলাদেশে রাজনৈতি অনৈক্য তো সবাই জানে৷''
ড. আহমেদ বলেন, ‘‘ভারতের অনেক অভ্যন্তরীণ সমস্যা আছে৷ মাওবাদী, কাশ্মির, উত্তর-পূর্ব ভারত নিয়ে অনেক ঝামেলা আছে৷ তাই সামনের দিনগুলোতে কেন্দ্রের সঙ্গে মমতার লড়াই তীব্রই হবে৷''