পশ্চিমবঙ্গে মমতার ক্ষমতায় আসার ২০০ দিন
১৩ ডিসেম্বর ২০১১অনেক দিক দিয়েই ব্যতিক্রমী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বার বার নিজেকে প্রমাণ করছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রাজ্যে কোনও বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটলেও মন্ত্রীদের পাঁচ মিনিটের দায়সারা পরিদর্শন এবং দুঃখ প্রকাশই যেখানে ভূভারতের দস্তুর, সেখানে আমরি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের পর সকাল থেকে সন্ধে রাস্তায় দাঁড়িয়ে, জনতার মধ্যে থেকে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করলেন মমতা৷ তাঁর এই ভূমিকায় দরাজ প্রশংসা করতে বাধ্য হয়েছেন, এমনকি একদা মমতার কট্টর সমালোচক শিল্পপতি রতন টাটা৷
এহেন অন্য ধারার মুখ্যমন্ত্রী এবার নিজেই নিজের সরকারের মূল্যায়ন শুরু করেছেন৷ সোমবার কলকাতার টাউন হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে বসেছিলেন তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে৷ সেখানে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কাজকর্মের খতিয়ান নেওয়ার পাশাপাশি আলোচনা করেন, কী করলে সরকারি কাজে আরও গতি আসবে৷ মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রীদের প্রকারান্তরে বুঝিয়ে দেন, রাজ্য পরিচালনার কাজে কোনও গয়ংগচ্ছ ভাব তিনি বরদান্ত করবেন না৷
একইভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার টাউন হলে বৈঠক করলেন তৃণমূলের সমস্ত সাংসদ, বিধায়ক এবং পুর প্রতিনিধিদের সঙ্গে৷ ডাকা হয়েছিল কলকাতা সংলগ্ন পুরসভা এলাকার চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদেরও৷ জানা গিয়েছে, কলকাতাসহ বিভিন্ন শহর, জেলাশহরে পুর উন্নয়নের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য নিয়মিত খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী, নানা নির্দেশ পাঠান৷ এবার তিনি হিসাব নিতে চান, কোন কাজ কতদূর এগিয়েছে, কোথায় অসুবিধা, আরও কী অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়া যায়৷
এদিকে এদিন আমরি হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ পরিদর্শনে গেলে হাসপাতাল কর্মীদের একাংশ তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান৷ তাঁদের দাবি, হয় তাঁদের বিকল্প চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে, নয়তো বন্ধ করে দেওয়া হাসপাতাল আবার খুলতে দিতে হবে৷ মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তিও করা হয়৷
অন্যদিকে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে এদিন এক রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর করতে গেলে সংবাদকর্মীদের উপর চড়াও হয় পুলিশ৷ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক, আলোকচিত্রী প্রহৃত হন৷
প্রতিবেদন: শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক