পাকিস্তান-আফগানিস্তান
৮ জুন ২০১২বিনা ঘোষণাতেই দক্ষিণ এশিয়া সফররত মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেটা বৃহস্পতিবার পৌঁছে যান কাবুল৷ আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে পাশে নিয়ে কাবুলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে প্যানেটার বক্তব্যে পাকিস্তানের আফগান সীমান্তবর্তী এলাকায় সন্ত্রাসবাদীদের ‘সেফ হেভেন' বা সুখের স্বর্গের বিরুদ্ধে বেশ কড়া ভাষায় মন্তব্য শোনা গেল৷ প্যানেটার মতে, যতদিন পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রশাসন তাদের সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলিকে নিয়ন্ত্রণ না করবে বা তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ না করবে, ততদিন আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা কোনভাবেই সুনিশ্চিত হবে না৷
তালেবানের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত জঙ্গি সংগঠন হাক্কানি গোষ্ঠীর প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্যানেটা বলেন, আফগানিস্তানে যে সমস্ত হামলা দেখা যাচ্ছে সাম্প্রতিক অতীতে, তার অধিকাংশের নেপথ্যেই দেখা গেছে এই হাক্কানি গোষ্ঠীর উপস্থিতি৷ যারা পাকিস্তানকে নিরাপদ স্বর্গ হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে আর বারে বারে আফগানিস্তানের মাটিতে হামলা করে পালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তানে৷ এরকম চলতে থাকলে অ্যামেরিকা কেন, কোন দেশের পক্ষেই আফগানিস্তানের নিরাপত্তা রক্ষায় সাফল্য পাওয়া সম্ভব নয়৷
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেটার এটি ছিল চতুর্থ আফগানিস্তান সফর৷ সাম্প্রতিক সময়ে ন্যাটোর চালকবিহীন ড্রোন বিমান হামলায় আফগানিস্তানে সাধারণ নাগরিকদের মৃত্যুকে ঘিরে যে জলঘোলা চলছে, প্যানেটার সাংবাদিক সম্মেলনে সে প্রসঙ্গ অবশ্যি ওঠে নি শুক্রবার৷ তবে পাকিস্তানের সমালোচনায় প্যানেটাকে মুখর হয়ে উঠতে দেখা যায় এদিন৷
আসলে বিন লাদেন কাণ্ডের পর থেকেই পাকিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক খুব যে একটা ভালো যাচ্ছে একথা বলা যাবে না৷ যেখানে যেভাবে সম্ভব পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী সম্পর্কের ইঙ্গিত দিতে ছাড়ছে না যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন৷ প্যানেটা একাই নয়, কাবুলের তরফ থেকেও পাকিস্তানের সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়া নিয়ে বিশেষ করে পার্বত্য এলাকার সন্ত্রাসী ডেরাগুলি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ শোনা যাচ্ছে৷ এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনেও তার ব্যত্যয় হয়নি৷ তবে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদ দমনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাফল্যের কথাও এদিন উল্লেখ করেছেন প্যানেটা, সেইসঙ্গে জানিয়েছেন, আগামীতেও এ বিষয়ে সহযোগিতা বজায় রাখবে ওয়াশিংটন৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় (এএফপি/ রয়টার্স)
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন