1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল?

১ আগস্ট ২০১৭

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের হয়েছে৷ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এর ফলে বিচারপতি অপসারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল হলো, নাকি শুধু ষোড়শ সংশোধনীই অবৈধ ঘোষণা করা হলো৷

https://p.dw.com/p/2hW6X
Dhaka Bangladesch 7 von 19
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ চূড়ান্ত রায় দেয় ৩ জুলাই৷ তার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে মঙ্গলবার৷ ৭৯৯ পৃষ্ঠার এই রায়ে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল বহাল রাখা হয়েছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ৷

তিনি বলেন, ‘‘পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের মধ্য দিয়ে সব ধরনের বিতর্কের অবসান ঘটলো৷ কেউ কেউ বলছিলেন যে সংসদের নতুন করে আইন করতে হবে৷ কিন্তু রায়ে বলা হয়েছে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে পঞ্চদশ সংশোধনী বহাল করা হলো৷ তাই সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে বিচারপতি অপসারণে যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ছিল তা বহাল হয়ে গেল৷ এটা আগেই সংবিধানে ছিল৷ বাতিল করা হয়েছিল৷ আবার বহাল হলো৷''

পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের মধ্য দিয়ে সব ধরণের বিতর্কের অবসান ঘটলো: মনজিল মোরসেদ

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এখন বিচারক অপসারণের প্রশ্ন আসলে তা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমেই তা হবে৷ এটাই এখন চলমান বিধান হয়ে গেল৷''

তবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তা মানতে নারাজ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘মনজিল মোরসেদ তাঁর ব্যক্তিগত মতামত দিয়েছেন৷ সংসদ কি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চলে? কোর্ট ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ‘রিস্টোর' করার করা কথা বলেছে৷ কিন্তু সংসদ সেটা করবে কিনা, তা তাদের ব্যাপার৷ সংসদকে কোনো আইন করতে বা সংশোধন করতে আদালত আদেশ দিতে পারে না৷ কোনো দেশে দেয়ও না৷''

এখন একটা শূন্যতা সৃষ্টি হল: অ্যাটর্নি জেনারেল

তবে এর ফলে একটি সংকট সৃষ্টি হয়েছে, মানছেন অ্যাটর্নি জেনারেলও৷ তিনি বলেন, ‘‘একটা শূন্যতা সৃষ্টি হলো৷ এখন যদি সুপ্রিম কোর্ট সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে আর রাষ্ট্রপতি যদি তা অনুমোদন না করেন?''

তাহলে এই সংকট থেকে উত্তরণের উপায় কী? এখন বাস্তব অবস্থা কী? কী হতে যাচ্ছে? ধৈর্য্য ধরতে বললেন অ্যাটর্নি জেনারেল৷ ‘‘এ জন্য আমাদের আরো অপেক্ষা করতে হবে৷ দেখতে সংসদ কী করে৷ কোর্ট তাদের মতো চিন্তা করছে৷ সরকার সরকারের মতো চিন্তা করছে৷''

তবে মনজিল মোরসেদ বলছেন, ‘‘এটার জন্য সংবিধান সংশোধন করার দরকার নেই৷ এটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এখন সংবিধানে এ্যাকটিভ হয়ে গেছে৷ আর সংসদ যদি সেটা না মানে তাহলে সংবিধানের মূল ‘স্পিরিট'-ই তো বাধাগ্রস্ত হবে৷''

এই রায়ে নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা সংক্রান্ত ১১৬ অনুচ্ছেদও অবৈধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ রায়ে বলা আছে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক পদের কাউকে পদচ্যুত করতে হলে সেটা অবশ্যই তার চেয়ে উচ্চপদস্থদের সাথে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ ব্রিটিশ বিচারক লর্ড ডেনিংয়ের কথা উল্লেখ করে পূর্নাঙ্গ রায়ে বলা আছে, ‘‘যদি কাউকে বিশ্বাসই করতে হয়, তবে বিচারকদের করো৷''

বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধানে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে দেওয়া হয়েছিল৷ ১৯৭৫ সালের জানুয়ারি মাসে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে এই ক্ষমতা সংসদের হাত থেকে নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে দেয়া হয়েছিল৷ ১৯৭৮ সালে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান এক সামরিক ফরমানে বিচারপতিদের অপসারণে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বাতিল করেন৷ এ সময় বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে৷ ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা আবার সংসদের হাতে দেয়া হয়েছিল৷

প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে উল্লেখ করা হয়, প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের দুই সিনিয়র বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হবে৷

আইন ও বিচার বিভাগের দ্বন্দ্ব নিয়ে আপনার মন্তব্য লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য