পোশাক শিল্পে সংকট ঘনীভূত
২৪ জুন ২০১৩প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা ঝুঁকিপূর্ণ কোনো পোশাক কারখানার সঙ্গে কাজ করতে চায় না৷ বাংলাদেশের পোশাক কারখানায় পাঁচ বছর মেয়াদি নিরাপত্তা প্রকল্পে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার সহায়তা দিতে সম্মত ৫০টি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ‘প্রাইমার্ক' একটি৷ এই প্রতিষ্ঠানটি সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজার গার্মেন্টস থেকে পোশাক কিনত৷ প্রাইমার্ক বলেছে, তারা তাদের ব্যবসায়িক বিষয় নিয়ে আরো পাঁচ বছর হয়ত বাংলাদেশে থাকবে৷ কিন্তু তার মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তারা বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেবে৷
এর আগে গত ২৪শে এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের পর ‘ওয়াল্ট ডিজনি' বাংলাদেশ থেকে কোনো পোশাক না নেয়ার ঘোষণা দেয়৷ তারা বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৪০ কোটি মার্কিন ডলারের পোশাক কিনত, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা৷ আরো অনেক ক্রেতা বাংলাদেশ থেকে ভবিষ্যতে পোশাক নেবে কিনা – তা নিয়ে সংশয়ে আছে৷ ‘ওয়ালমার্ট'-ও বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কয়েকটি পোশাক কারখানা থেকে আর পোশাক নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে৷
সাভারের আশুলিয়ায় তাজরীন ফ্যাশানস-এ আগুনের পর, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে৷ এরপর সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর পরিস্থিতি আরো জটিল হতে থাকে৷ পোশাক কারাখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং কাজের পরিবেশ ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের জিএসপি সুবিধা এখন সুতোর উপর ঝুলছে৷ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা থাকবে কিনা – সে ব্যাপারে ওবামা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত জানা যাবে আগামী ৩০শে জুন ৷ বাংলাদেশ সরকার নেতবিাচক পরিস্থিতি এড়াতে মন্ত্রিসভায় ‘টিকফা' চুক্তির খসড়া অনুমোদন করেছে৷ তবে তাতেও জিএসপি রক্ষা হবে কিনা তা নিশ্চিত নয়৷
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নও চাপের মুখে রেখেছে বাংলাদেশকে৷ ইউরোপীয় পার্লামেন্টে রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাক কারাখানার নিরাপত্তা এবং শ্রমিকদের অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তারাও বাংলাদেশ থেকে পোশাক নেবে কিনা – তা নতুন করে ভেবে দেখবে৷
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-র সভাপতি আতিকুল ইসলাম ডয়চে ভলেকে বলেন, তারা আন্তর্জাতিক চাপ ও উদ্বেগের ব্যাপারে সচেতন৷ তিনি জানান, ক্রটিপূর্ণ কারখানা চলতে দেবেন না তারা৷ চলতি বছরের মধ্যেই তারা বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে চার হাজার পোশাক কারখানার ভবন, নিরাপত্তা এবং কর্মপরিবেশ গ্রহণযোগ্য মানে আনার কাজ শেষ করবেন৷ তাঁর আশা, বাংলাদেশের পোশাক কারখানাকে গ্রহণযোগ্য মানে নিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিশ্চয়ই যৌক্তিক সময় দেবে৷
বিজিএমইএ-র সহ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, সরকার, বিজিএমইএ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের পোশাক শিল্প নিয়ে যৌথভাবে কাজ করছে৷ তাই নিশ্চয়ই গ্রহণযোগ্য সময়ের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটবে৷