1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নে পোল্যান্ড চুক্তি সই

১৬ ডিসেম্বর ২০১৮

২০১৫ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে হওয়া জলবায়ু চুক্তি কিভাবে বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়ে পোল্যান্ডে একমত হয়েছে ২০০টি দেশের অংশগ্রহণকারীরা৷ কিন্তু আইপিসিসি'র প্রতিবেদনের ফল মানার বিষয়ে একমত হতে পারেনি দেশগুলো৷

https://p.dw.com/p/3AD5i
Polen, COP24-Präsident Michal Kurtyka während einer Abschlusssitzung der COP24-Klimakonferenz 2018 in Katowice
ছবি: Reuters/K. Rempel

জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় পোল্যান্ডের কাটোভিৎসে শহরে অনুষ্ঠিত এই জলবায়ু সম্মেলনে দুই সপ্তাহ দর কষাকষির পর অবশেষে এক অবস্থানে এসে দাঁড়াতে পারলো দেশগুলো৷

গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণ কিভাবে কমানো যায় এবং কার্বন নিঃসরণ কমাতে পরিকল্পনা কিভাবে নিয়মিত আপডেট করা যায়, সে বিষয়ে একটি ১৫৬ পৃষ্ঠার ‘রুলবুক' বা নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে৷

যেসব বিষয়ে ঐকমত্য

নীতিমালায় বিভিন্ন বিষয়ে বিশদ আলোচনা রয়েছে৷ তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় হলো :

১) প্রতিটি দেশকে তাদের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমণ নিয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন দিতে হবে এবং নিঃসরণ কমাতে তাদের চেষ্টাও পরিকল্পনার কথাও সেখানে তুলে ধরতে হবে৷

২) অপেক্ষাকৃত দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোকে নিঃসরণ কমাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অর্থ সহায়তা দিতে হবে৷ এছাড়াও, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সেসব দেশে এরইমধ্যে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে৷

যেসব ইস্যুতে বিতর্ক

কিছু বিষয়ে একমত হতে পারেনি দেশগুলো :

১) কার্বন ক্রেডিটের মাধ্যমে কিভাবে একটি কার্যকর বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়, সে বিষয়ে এখনো সমাধান হয়নি৷ ব্রাজিলসহ কিছু দেশ পুরোনো ব্যবস্থা অনুসারে অব্যবহৃত কার্বন ক্রেডিট জমিয়ে রাখার সুবিধা চায়৷ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরের বৈঠকের জন্য তুলে রাখা হয়েছে৷

২) আইপিসিসি প্রতিবেদনের ফল মেনে নিতেও একমত হতে পারেনি দেশগুলো৷ সৌদি আরবসহ আরো বেশ কিছু দেশ প্রতিবেদনটি ‘সঠিক সময়ে শেষ' হওয়ায় স্বাগত জানালেও, এর ফল নিয়ে জানিয়েছে দ্বিমত৷

২০১৫ সালের প্যারিস সম্মেলনে নেয়া সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সারা বিশ্বের প্রায় ৯০০ বিজ্ঞানী মিলে গত অক্টোবরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন৷ জাতিসংঘের সংস্থা ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ' বা আইপিসিসির প্রকাশ করা এই রিপোর্টে, শিল্প বিপ্লব শুরুর আগের চেয়ে তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে ক্ষতির পরিমাণ কীরকম হতে পারে, তার একটি চিত্র তুলে ধরা হয়৷ এছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রিতে সীমাবদ্ধ রাখতে হলে আগামী ১২ বছরের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন অর্ধেক কমাতে হবে বলে মত প্রকাশ করা হয়৷

৩) কার্বন নিঃসরণ নিয়ে মূল লক্ষ্য কী, সে বিষয়েও কোনো অবস্থানে পৌঁছায়নি দেশগুলো৷ তবে এ বিষয়ে সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সম্মেলনে আলোচনা করার ব্যাপারে একমত হয়েছে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো৷

‘দারুণ এক পদক্ষেপ'

পোলিশ পদার্থবিদ এবং জলবায়ু সম্মেলনের সভাপতি মিশাল কুর্টিকা বলছেন, ‘‘এত সুনির্দিষ্ট এবং প্রযুক্তিগত একটি বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছানো সহজ না৷ ফলে এই চুক্তিতে সবাই একমত হওয়ায় আমরা কয়েক হাজার পদক্ষেপ একসাথে এগিয়ে গেলাম৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সবাইকে ভবিষ্যতের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো সাহসী হতে হবে৷ মানবজাতির স্বার্থে আমাদের আরো এমন পদক্ষেপ নিতে হবে৷''

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করা অ্যাকশন গ্রুপগুলো চুক্তিকে ‘স্বাগত' জানালেও দেশগুলোর মধ্যে তেমন একটা ‘গরজ' না দেখার কথা জানিয়েছে

গ্রিনপিসের নির্বাহী পরিচালক জেনিফার মরগ্যান বলছেন, ‘‘যেসব দ্বীপরাষ্ট্র এবং দরিদ্র দেশগুলো জলবায়ুর পরিবর্তনে ধ্বংস হতে বসেছে, তাদের সাথে ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন' রোধ করতে চাওয়া বা ‘দ্রুত কাজ করতে অনাগ্রহী' দেশগুলোর এক দায়িত্বহীন বিরোধ আমরা দেখেছি৷''

জলবায়ু বিজ্ঞানীদের সংগঠন- ইউনিয়ন অব কনসার্নড সায়েন্টিস্টসের আলডেন মেয়ার বলছেন, ‘‘রুলবুকের কিছু বিষয় এখনো চূড়ান্ত হওয়া বাকি৷ কিন্তু এর মাধ্যমে প্যারিস চুক্তি শক্ত ভিত্তি পেল এবং ভবিষ্যৎ কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট চাইলে যুক্তরাষ্ট্র যাতে আবার চুক্তিতে যোগ দিতে পারে, সে পথও উন্মুক্ত রইলো৷''

এডিকে/এসিবি (এএফপি, এপি, রয়টার্স, ডিপিএ)

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য