ফিলিপাইনে টাইফুনের ছোবলে নিহত আড়াই শতাধিক
১৭ ডিসেম্বর ২০১১ফিলিপাইনের আবহাওয়া দপ্তরের হিসাবে, ২০১১ সালের ১৯তম মারাত্মক ঝড়ো হানা টাইফুন ওয়াশি৷ দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ এই দ্বীপপুঞ্জটিতে প্রায় প্রতি বছরই ২০টি বড় মাপের ঝড়-তুফান আঘাত হানে৷ শুক্রবার রাতে অধিকাংশ মানুষ যখন ঘুমে মগ্ন, এমন সময়ই ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস ভাসিয়ে নিয়ে গেছে মিন্দানাও দ্বীপের অধিবাসীদের৷ অনেকেই ঝড় ও প্রবল বেগে আসা জলোচ্ছ্বাসের আঘাতে ভেসে গেছে সমুদ্রের মাঝে৷
কিছু ভিডিও ফুটেজে গাড়িগুলোকে শক্ত দেওয়াল কিংবা বাড়ির উপরে হুমড়ি খেতে দেখা গেছে৷ আর পানি কিছুটা কমে আসার পর কাগাইয়ান ডে ওরো এবং ইগান শহরের রাস্তাঘাটে দেখা যাচ্ছে ময়লা, আবর্জনা এবং দুমড়ে-মুচড়ে থাকা গাড়ি ও বাড়ি-ঘরের ভগ্নস্তূপ৷ সরকারি হিসাবে, প্রায় বিশ হাজার সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার মানুষদের উদ্ধার তৎপরতায়৷
রেড ক্রসের উদ্ধার তৎপরতা
ফিলিপাইন জাতীয় রেড ক্রস জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২৫৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে৷ রেড ক্রসের মহাসচিব গেন্ডলিন পাঙ জানান, ‘‘এখনও প্রচুর সংখ্যক মানুষ নিখোঁজ থাকায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে৷'' উদ্ধারকাজে নিয়োজিত সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে কাগায়ান ডে ওরো নগরীর কাউন্সিলর আলভিন বাকাল জানিয়েছেন, শুধুমাত্র ঐ শহরেই ১০৭ জনের প্রাণহানি ঘটে৷ এছাড়া ইগান নগরীর মেয়র লরেন্স ক্রুজ জানান, টানা ১২ ঘণ্টা ধরে চলমান বৃষ্টির মধ্যে এবং ঝড়ের আঘাতে তাঁর নগরীতে নিহত ১৪৪ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷
নিহত প্রখ্যাত রেডিও সাংবাদিক এনি আলসোনাডো
মেয়র ক্রুজের ভাষ্য মতে, এই দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির প্রখ্যাত রেডিও সাংবাদিক এনি আলসোনাডো৷ তিনি মানুষদের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়ে নিজেও জলের তোড়ে ভেসে গেছেন বলে জানিয়েছেন ক্রুজ৷ একই নগরীর সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল ব়্যান্ডল্ফ কাবাংবাং জানিয়েছেন, ঐ শহরের অন্তত আড়াইশ' মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছে৷ এছাড়া মিন্দানাও এর মনকায়ো শহরে ভূমিধসে পাঁচ জন খনি শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছে৷ আর নেগ্রোজ দ্বীপে ২১ জনের প্রাণহানির কথা জানিয়েছে রেড ক্রস৷
এক লাখ মানুষ গৃহহীন
দেশটির সমাজ কল্যাণ দপ্তরের হিসাবে, টাইফুন ওয়াশির আঘাতে অন্তত এক লাখ মানুষ গৃহহীন হয়েছে৷ বাস্তুহারা মানুষদের সাময়িকভাবে ইগান ও কাগায়ান ডে ওরো নগরীতে কয়েক ডজন আশ্রয় শিবিরে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম