ফের হুমকি ইরানের, প্রতিক্রিয়া অ্যামেরিকার
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১রোববার ইরান জানিয়েছিল, দেশের পরমাণু-কেন্দ্রে জাতিসংঘের নজরদারি বন্ধ করা হবে। সোমবার দেশের সুপ্রিম নেতা টেলিভিশনে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে ইরান ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম মজুত করবে। এবিষয়ে বিশ্বের কোনো দেশের বাধাই তারা মানবে না। অন্যদিকে, অ্যামেরিকা জানিয়েছে, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি নিয়ে অ্যামেরিকা আশাবাদী। পরমাণু চুক্তি আরো শক্তিশালী করতে চায় অ্যামেরিকা। তবে ইরানের খায়মখেয়ালি পদক্ষেপ মার্কিন প্রশাসন মেনে নেবে না। ইরান যাতে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ থাকবে অ্যামেরিকা।
সোমবার জেনেভায় জাতিসংঘের একটি বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মার্কিন বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। সেখানে তিনি জানান, অ্যামেরিকা চায় পরমাণু চুক্তি আরো জোরদার এবং শক্তিশালী হোক। পরমাণু চুক্তিতে নতুন করে যোগ দেওয়ার বিষয়ে অ্যামেরিকা আশাবাদী। কিন্তু একই সঙ্গে ইরানের হঠকারী পদক্ষেপকে অ্যামেরিকা সমর্থন করে না। ইরান যেভাবে পরমাণু অস্ত্র এবং ব্যালেস্টিক মিসাইল তৈরির হুমকি দিচ্ছে, অ্যামেরিকা তা বরদাস্ত করে না। ইরান যাতে কোনো ভাবেই ওই ধরনের অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, অ্যামেরিকা তা নিশ্চিত করবে।
ইরানও অবশ্য অ্যামেরিকার চোখরাঙানিকে পাত্তা দিচ্ছে না। সোমবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা টেলিভিশনে বলেছেন, প্রয়োজনে ইরান ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম মজুত করবে। এই মুহূর্তে তারা ২০ শতাংশ ইউরেনিয়াম মজুত করছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরির যা যা যথেষ্ট। ২০১৫ সালের চুক্তিতে বলা হয়েছিল ইরান চার শতাংশের বেশি ইউরেনিয়াম মজুত করতে পারবে না। ইরানের পার্লামেন্ট গত বছরের শেষে সেই নিয়মের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনে। নতুন আইন তৈরি হয়। যাতে বলা হয়, ২০ শতাংশ ইউরেনিয়াম মজুত করা হবে।
ওই একই আইনে বলা হয়েছিল, তিনমাসের মধ্যে পরমাণু চুক্তি এবং ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অ্যামেরিকা যদি স্পষ্ট সিদ্ধান্ত না নেয়, তাহলে দেশের পরমাণু কেন্দ্রগুলিতে জাতিসংঘের নজরদারি বন্ধ করে দেওয়া হবে। ২১ তারিখ সময়সীমা শেষ হয়েছে। জাতিসংঘের প্রতিনিধির সঙ্গে রোববার ইরানের দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। সেখানে একটি সাময়িক সমাধানসূত্র তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু অ্যামেরিকাকে এবার পরমাণু চুক্তি নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সোমবার মার্কিন বিদেশমন্ত্রী সে কাজেরই সূচনা করলেন।
বস্তুত, ইউরোপেরএকাধিক দেশ চাইছে, অ্যামেরিকা পরমাণু চুক্তিতে ফিরে আসুক। ইরানের সঙ্গে যে দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে তার অবসান হোক। ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসন পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পরেই এই সমস্যার শুরু হয়েছিল। বাইডেন প্রথম থেকেই সমস্যাটির সমাধানে আগ্রহী। কিন্তু ইরান যেভাবে একের পর এক হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে, তাতে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)