বাস স্টপে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা দপ্তরের গোপন নথি
২৭ জুন ২০২১ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার৷ দক্ষিণ পূর্ব লন্ডনের কেন্ট বাস স্টপের পেছনে প্রায় অর্ধশত পৃষ্ঠার নথি খুঁজে পান এক ব্যক্তি৷ পরে তিনি যোগাযোগ করেন ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির সাথে৷ নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেগুলো তুলে দেন সংবাদমাধ্যমটির হাতে৷
আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর অপারেশনের সমাপ্তির পরও দেশটিতে যুক্তরাজ্যের সম্ভাব্য সামরিক উপস্থিতির বিস্তারিত পরিকল্পনার উল্লেখ রয়েছে এতে৷ তবে সবচেয়ে সংবেদনশীল বিষয়টি রাশিয়াকে নিয়ে৷ গত সপ্তাহে রাশিয়ার দখলকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপে আকষ্মিকভাবে হাজির হয় ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ এইচএমএস ডিফেন্ডার৷ এতে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কী প্রতিক্রিয়া হতে পারে সেই সংক্রান্ত সংবেদনশীল আলোচনা ছিল নথিতে৷ বিবিসির বরাত দিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এপি৷
এদিকে, নথি প্রকাশের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়৷ এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে তথ্যের নিরাপত্তার বিষয়টিকে তারা ভীষণ গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে৷ তবে নথিগুলো হারানোর বিষয়ে গত সপ্তাহেই তারা অবহিত হয়েছিল বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়৷
এই ঘটনায় ব্রিটেনের রাজনৈতিক অঙ্গনও সরব হয়ে উঠেছে৷ দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি এটিকে মন্ত্রীদের জন্য লজ্জাকর ও উদ্বেগজনক হিসেবে অভিহিত করেছে৷ দলটির প্রতিরক্ষা নীতি বিষয়ক প্রধান জন হিলি বলেন, মন্ত্রীদের এই নিশ্চয়তা দিতে হবে যে তারা জাতীয় নিরাপত্তাকে খাটো করে দেখেন না৷ এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার উপরও জোর দেন তিনি৷
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী নথিতে ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ ডিফেন্ডার সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু ইমেইল ও পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন রয়েছে৷ চলতি মাসে জাহাজটি ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ নোঙ্গর করে৷ ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে অঞ্চলটি দখল করে নেয় মস্কো৷ যদিও ব্রিটেনসহ বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের অধিভুক্ত হিসেবেই স্বীকৃতি দিয়ে আসছে৷
গত বুধবার রাশিয়া জানিয়েছে, ব্রিটিশ জাহাজটিকে তাড়া করে তারা সতর্কতামূলক গুলি ও বোমা বর্ষণ করেছিল৷ যদিও এমন তথ্য অস্বীকার করে ব্রিটেন বলেছে, রাশিয়ার জলসীমানা নয় আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন মেনে ইউক্রেনের জলসীমানা অতিক্রম করেছিল ডিফেন্ডার৷ এই ঘটনায় মস্কো ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকেও তলব করেছিল৷
বিবিসি জানিয়েছে, গোপন নথির তথ্য অনুযায়ী রাশিয়া কড়া প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে সেটি জেনেই জাহাজটি পাঠিয়েছিল ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা দপ্তর৷
এফএস/এআই (এপি, রয়টার্স)