বিলকিস বানো: শাস্তিপ্রাপ্তদের আবার জেলে যেতে হবে
৮ জানুয়ারি ২০২৪২০২২ সালে বিলকিস বানোকে ধর্ষণ ও পরিবারের মানুষদের হত্য়া করার জন্য দোষী প্রমাণিত ১১ জনকে মুক্তি দেয় গুজরাট সরকার। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সোমবার জানিয়েছে, ''গুজরাট সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। দোষীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং জেলে যেতে হবে।''
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ''গুজরাট সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ঠিকভাবে মাথা লাগায়নি। বিলকিস বানোর ধর্ষণ ও পরিবারের মানুষদের হত্যার বিচার হয়েছিল মহারাষ্ট্রে। এক্ষেত্রে অপরাধীদের ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত মহারাষ্ট্র নিতে পারে, গুজরাট নয়।''
আদালত বলেছে, ''গুজরাট সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। এই অবস্থায় অপরাধীরা যদি জেলের বাইরে থাকে, তাহলে একটি বেআইনি নির্দেশকে আইনি মনে করতে হবে।''
বিচারপতিরা বলেছেন, ''আইনের শাসন সবসময়ই রক্ষা করতে হবে।'' বিচারতিরা সুপ্রিম কোর্টের ২০২২ সালের মে মাসের রায়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, এই রায়ে শাস্তিপ্রাপ্তদের গুজরাট সরকারের কাছে আবেদন জানানোর অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তাদের মতে, শাস্তিপ্রাপ্তরা জালিয়াতি করে এই নির্দেশ জোগাড় করেছিল। গুজরাট সরকারের উচিত, ওই নির্দেশের পর্যালোচনা করার জন্য আবেদন জানানো।
গুজরাট সরকার ১৯৯২ সালের অপরাধ মাফ করার নীতি অনুসারে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের আইন পাস হওয়ার পর ওই নীতি অনুসারে শাস্তিপ্রাপ্তদের ছাড়া যায় না।
এনডিটিভি জানাচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের ২০২২-এর নির্দেশের পর রাধেশ্য়াম শাহ নামে শাস্তিপ্রাপ্ত শাস্তি মাফ করার আবেদন জানান। তখন রাজ্য সরকার একটি প্যানেলের সঙ্গে পরামর্শ করে। সেখানে ক্ষমতাসীন বিজেপি-র নেতারাও ছিলেন। প্যানেল বলে, শাস্তিপ্রাপ্তরা 'সংস্কারী ব্রাক্ষ্মণ'। তারা ১৪ বছর জেলে খেটেছে। তারা জেলে ভালো ব্যবহার করেছে। তাই তাদের ছেড়ে দেয়া হোক।
ছাড়া পাওয়ার পর শাস্তিপ্রাপ্তদের বীরের অভ্যর্থনা জানানো হয়। তাদের বিজেপি সাংসদ ও বিধায়কদের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা যায়। রাধেশ্যাম শাহ আবার আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন বলে সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় অভিযোগ করা হয়েছিল। ।
সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগকারীদের মধ্যে ছিলেন তৃণমূলের সাবেক সাংসদ মহুয়া মৈত্র, সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সুহাসিনী আলি, সাংবাদিক রেবতী লাল, লখনউ বিশ্ববিদ্য়ালয়ের সাবেক উপাচার্য রূপরেখা ভার্মা ও অন্যরা।
জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)