ব্রাজিলে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ
৯ জুন ২০১৪ফুটবল পাগল দেশ ব্রাজিলে ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে যে এত গোলমাল দেখা দেবে, এমনটা কে ভাবতে পেরেছিল! একে মূল প্রতিযোগিতার প্রস্তুতির ক্ষেত্রে সমস্যা এখনো দূর হয়নি৷ স্টেডিয়াম সহ অবকাঠামো নির্মাণের কাজে অস্বাভাবিক বিলম্ব দেখা দিচ্ছে৷ বিপর্যয় এড়াতে শেষ মুহূর্তে কাজের গতি বাড়ানো হয়েছে৷ অন্যদিকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ৷ শুধু গত কয়েক সপ্তাহেই সরকারি কর্মীদের ধর্মঘটে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল৷ পরিবহন কর্মী, পুলিশ ও শিক্ষকরা নিজেদের দাবি তুলে ধরতে পথে নেমেছিলেন৷
গত বৃহস্পতিবার সাঁও পাওলো শহরের মেট্রো ও লোকাল ট্রেনের কর্মীরা ধর্মঘট পালন করেছেন৷ অথচ ক'দিন পর এই শহরেই বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে৷ রিও ডি জানেরো শহরের শিক্ষকরা সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পথ অবরোধ করায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে যায়৷ এপ্রিল মাসে সালভাদোর শহরের পুলিশ দু'দিনের ‘ওয়াকআউট' করায় শহরে অপরাধের হার আচমকা বেড়ে গিয়েছিল৷ আরেকটি শহরে পুলিশ ধর্মঘটের ফলে ব্যাপক লুটতরাজ শুরু হয়ে যায়৷ এই সব ক'টি শহরেই বিশ্বকাপের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে৷
বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে ব্রাজিলের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিতে দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য মানুষের ঢল নামছে৷ প্রতিযোগিতা চলাকালীনও যদি এমন ধর্মঘট ও অবরোধ চলতে থাকে, তাঁরাও চরম দুর্ভোগে পড়বেন৷ সে ক্ষেত্রে চরম অরাজকতার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ সরকারি কর্মীদের সংগঠনও এ বিষয়ে কোনো আশ্বাস দিতে প্রস্তুত নয়৷ ফলে সংকটের পূর্বাভাষ পাওয়াও কঠিন হয়ে উঠছে৷ এমনকি সুপ্রিম কোর্টের ইনজাংকশন সত্ত্বেও ফেডারেল পুলিশ কর্মীরা বিশ্বকাপ চলাকালীন ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে৷
বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার পেছনে ব্রাজিলের সরকার কোটি কোটি ডলার ঢেলে আসছে৷ ফলে জনসংখ্যার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে৷ গত বছর থেকেই সরকারি ও সংগঠিত ক্ষেত্রে ধর্মঘট, বিক্ষোভ, অবরোধ চলে আসছে৷ বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে মানুষ দ্বিধাবিভক্ত৷ অনেকে মনে করছেন, দাবি-দাওয়া ন্যায্য হলেও বিশ্বকাপের মতো প্রতিযোগিতার সময় সরকারকে এভাবে ‘ব্ল্যাকমেল' করা মোটেই নৈতিক পথ নয়৷ কারণ এর সঙ্গে দেশের সম্মান ও ভাবমূর্তির বিষয়টিও জড়িয়ে আছে৷
এসবি/ডিজি (এপি, এএফপি)