বিলুপ্তির আশঙ্কায় হাঙ্গর
৭ অক্টোবর ২০১২হাঙ্গর মানেই মূর্তিমান আতঙ্ক৷ ডিপ ব্লু সি, রেজিং শার্ক, জ'জ- হাঙ্গর নিয়ে যত ছবি হয়েছে তার বেশির ভাগেই প্রাণীটিকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন এরা মানুষের চিরশত্রু, সুযোগ দিলে ওরা মেরে ফলবে, তাই আগেভাগে ওদের মেরে ফেলাই নিরাপদ৷ অথচ এক হাজারেরও বেশি প্রজাতির হাঙ্গর রয়েছে বিশ্বে, তাদের মধ্যে খুব কম হাঙ্গরই মানুষের জন্য বিপদজনক৷ বেশির ভাগ হাঙ্গর বরং মানুষের বন্ধু৷ যেসব রাক্ষুসে মাছ ভোজনবিলাসী মানুষের প্রিয় মাছগুলো খেয়ে ফেলে, হাঙ্গরেরা তাদের খায়৷ সুতরাং সহজ কথা হলো, হাঙ্গর না থাকলে রাক্ষুসে মাছ বংশবিস্তার করবে মহাসুখে আর তাতে একদিন হয়তো মাছ খাওয়া কঠিন হয়ে যাবে মানুষের জন্য৷
কিন্তু সহজ এ কথাটাই বোঝে কজন! বিশ্বজুড়ে চলছে হাঙ্গরনিধন৷ সারা ফাওলার ভেবে পান না এ হত্যাযজ্ঞ কীভাবে থামানো যাবে৷ ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচারের কর্মী সারা ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘বিশ্বে হাঙ্গরের এক হাজারেরও বেশি প্রজাতি রয়েছে৷ তবে এখন সবগুলোরই অস্তিত্ব হুমকির মুখে৷''
হাঙ্গর-হত্যা বন্ধ করার চেষ্টা চলছে৷ কিন্তু এশিয়ার কয়েকটি দেশ উল্টো কোনো কঠোর আইন যাতে না হয়, সেই চেষ্টায় লিপ্ত৷ চীন আর জাপানও চায় না কঠোর নিষেধাজ্ঞা আসুক৷ অথচ চীনকে মনে হচ্ছিল হাঙ্গর-হত্যায় খুব সক্রিয়, কেননা, ক'দিন আগে সে দেশে হাঙ্গরেরর ডানার সুপ নিষিদ্ধ হয়েছে৷
হাঙ্গর সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে৷ সে এলাকার কমপক্ষে ৪০ ভাগ হাঙ্গরের অস্তিত্ব এখন বিপন্ন বলে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে৷ হাঙ্গরের বিপদের আরেকটা বড় কারণ হলো, এরা সবসময় ঘুরে বেড়ায়৷ আজ এখানে তো কাল আরেক জায়গায়৷ কোথায় গিয়ে বংশ বিস্তার করবে তা বলা মুশকিল৷ তাই সব দেশ হাঙ্গরের অস্তিত্ব রক্ষায় সমান উদ্যোগী না হলে বিলুপ্তির আশঙ্কা দূর হবার নয়৷ এ বিষয়গুলোই বড্ড বেশি ভাবাচ্ছে৷ মানুষের সঙ্গে একটা জায়গায় মিল আছে বলেও হাঙ্গরকুল এখন বিপদে৷ মানুষের মতো তারাও এক সঙ্গে খুব বেশি সন্তানের জন্ম দিতে পারে না, পারলে হয়তো মানুষের ক্ষুধা মিটিয়েও আরো কিছুকাল টিকে থাকতে পারতো!
প্রতিবেদন: নাওমি কনরাড/এসিবি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ