মৈত্রীর প্রতীক
২৪ আগস্ট ২০১২১০০ কোটি টাকা ব্যয় করে ত্রিপুরার ফেনী নদীর ওপর ১৫০ মিটার দীর্ঘ সেতু ত্রিপুরার দক্ষিণের সীমান্ত শহর সাব্রুমকে যুক্ত করবে ঢাকা থেকে ৩০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে বাংলাদেশের সীমান্ত শহর রামগড়কে৷
এই নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে ভারি মাল বহনে সময় ও খরচ অনেক কম হবে৷ শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ হয়ে মিয়ানমার ও অন্যান্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির যোগাযোগোর পথ সুগম হবে৷ এজন্য ভারতকে চট্টগ্রাম, মংলা ও আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহারের অনুমতিও দিয়েছে বাংলাদেশ৷
ফেনী সেতু নির্মাণে বাংলাদেশের আর্থিক তথা বাণিজ্যিক লাভ কতটা হবে, এই প্রসঙ্গে ত্রিপুরা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের কর্মকর্তা স্বপন মিত্র ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘ভারত যে টাকা খরচ করবে তাতে বাংলাদেশের রাজস্ব আসবে শ্রমিক থেকে, কন্টেনার থেকে৷ এর ওপর বাংলাদেশ শুল্ক ধার্য করতে পারে৷ বলাবাহুল্য, এই সেতু নির্মাণে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প লাভবান হবে৷
উল্লেখ্য, কলকাতা থেকে আগরতলার দূরত্ব শিলং-গুয়াহাটি হয়ে দাঁড়ায় ১৬৫০ কিলোমিটার৷ আর বাংলাদেশ হয়ে গেলে আগরতলা-কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৩৫০ কিলোমিটার৷ ফেনী সেতুর প্রবেশপথ যুক্ত হবে আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়ক ৪৪-এর সঙ্গে৷ পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে সাব্রুম পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে৷ শেষ হবে ২০১৪ সালে৷
বাংলাদেশের স্বার্থের কথা বলতে গিয়ে ত্রিপুরা সরকারের আধিকারিক স্বপন মিত্র ডয়চে ভেলেকে বললেন, ‘‘দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ বলতে বাংলাদেশ যদি কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করে তাহলে ত্রিপুরার কাঁচামালের ভাণ্ডার কাজে লাগাতে পারবে৷ বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল ত্রিপুরায় এসে সে বিষয়ে সমীক্ষা করে গেছেন৷ আগরতলা থেকে ঢাকার দুরত্ব বেশি নয়৷ বাংলাদেশের শিল্পপতিরা ত্রিপুরায় বিনিয়োগ করলে ভালো বাজার পেতে পারেন৷
এছাড়া, বাংলাদেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের সমস্যা রয়েছে৷ অথচ ত্রিপুরায় আছে মজুত গ্যাসের বিপুল ভাণ্ডার৷ সর্বোপরি এই ফেনী সেতু ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীবন্ধনের এক প্রতীক হয়ে থাকবে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ