মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংসদে সংঘাতের দামামা
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯মঙ্গলবার ব্রিটিশ সংসদের অধিবেশন শুরু হচ্ছে৷ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক বিতর্কিত পদক্ষেপের মাধ্যমে সেই অধিবেশনের সময়কাল সঙ্কুচিত করা সত্ত্বেও বিরোধীরা চুক্তিহীন ব্রেক্সিট নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে চান৷ ক্ষমতাসীন টোরি দলের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দানা বাঁধছে৷ হাতে গোনা কয়েকজন সংসদ সদস্যও বিরোধীদের উদ্যোগে সমর্থন দিলেও ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে৷ এমন প্রেক্ষাপটে দুই শিবিরই সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে৷
প্রধানমন্ত্রী জনসন সোমবার তড়িঘড়ি করে ডাকা মন্ত্রিসভার এক বৈঠকের পর ব্রেক্সিটকে ঘিরে একাধিক মন্তব্য করেছেন৷ তাঁর দাবি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বোঝাপড়ার সম্ভাবনা বেড়ে চলেছে৷ তবে সেই প্রচেষ্টা বিফল হলেও তিনি কোনো অবস্থায় ৩১শে অক্টোবরের নির্ধারিত সময়সীমা বাড়াতে প্রস্তুত নন৷ তাঁর মতে, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রয়োজনে চুক্তি ছাড়াই ব্রিটেন ইইউ ত্যাগ করবে৷
নিজের দলের মধ্যে বিদ্রোহের আশঙ্কার মুখে সংসদ সদস্যদের প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে জনসন আগাম নির্বাচনের ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ টোরি দলের কয়েকজন নেতা জানিয়ে দিয়েছেন, সংসদে যারা সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন, তাঁরা আর দলের মনোনয়ন পাবেন না৷ এমনকি তাঁদের দল থেকে বহিষ্কারও করা হতে পারে৷ সংবাদ সংস্থা ডিপিএ সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, যে সংসদে সরকারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ হলে জনসন অক্টোবর মাসেই নির্বাচন ডাকতে পারেন৷ সে ক্ষেত্রে ১৪ই অক্টোবর নির্বাচনের তারিখ স্থির হতে পারে৷ তবে এই সিদ্ধান্তের জন্যও সংসদে কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থনের প্রয়োজন হবে৷
সংসদে বিরোধী পক্ষ চলতি সপ্তাহেই সম্মিলিতভাবে এক প্রস্তাব অনুমোদনের উদ্যোগ নিচ্ছে৷ তার আওতায় ১৯শে অক্টোবরের মধ্যে ইইউ-র সঙ্গে চুক্তি নিয়ে ঐকমত্য সম্ভব না হলে ব্রেক্সিটের সময়সীমা আরও ৩ মাস পেছানো হবে৷ উল্লেখ্য, ১৭ ও ১৮ই অক্টোবর ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে ব্রেক্সিট নিয়ে বোঝাপড়ার বিষয়ে ফয়সালা হয়ে যাবে৷ আগামী বছরের ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত সময় কাজে লাগিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বোঝাপড়া নিশ্চিত করতে হবে৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেই লক্ষ্যে সংসদে প্রাথমিক ভোটে বিরোধীদের জয় হলে প্রধানমন্ত্রী আগাম নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে৷ কারণ এই ভোটাভুটির পরেই বিরোধী লেবার দল সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ মাত্র একটি আসনের ব্যবধানে সরকারি জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় সরকারের পরাজয়ের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷
বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী জনসনের দৃঢ় অবস্থান অনেক ভোটারের মনে ধরছে৷ কিন্তু ব্রেক্সিট কার্যকর হবার আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে শেষ পর্যন্ত কোন শিবির সমর্থন পাবে, সে বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়ে যাচ্ছে৷ কোনো পক্ষই যথেষ্ট সমর্থন না পেলে নতুন করে রাজনৈতিক অচলাবস্থার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি )