প্রাণের অনুসন্ধান
২৫ জানুয়ারি ২০১৪হাইডেলব্যার্গের মাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর অ্যাস্ট্রোনমি-র‘জ্যোতির্বিজ্ঞান ভবন'৷ ভারতীয় গবেষক এবং অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট সিদ্ধার্থ হেগড়ে মহাশূন্যে প্রাণের চিহ্ন অনুসন্ধান করার একটি পন্থা উদ্ভাবন করেছেন৷ হেগড়ের পন্থায় ভবিষ্যতে ঠিক সেই সব গ্রহে মহাকাশ যান পাঠানো হবে, যেখানে হেগড়ের পন্থা অনুসরণ করে কৌতূহলোদ্দীপক কিছু একটা পাওয়া গিয়েছে৷
হেগড়ে মহাশূন্যের বিভিন্ন গ্রহের উপর নজর রাখেন৷ তাঁর এই পর্যবেক্ষণ থেকে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা নক্ষত্র থেকে আলো সংগ্রহ করে স্পেকট্রোস্কোপি দিয়ে তার বর্ণালী বিশ্লেষণ করি৷ বর্ণালীর রংগুলি পরস্পরের সঙ্গে মিলিয়ে দেখি৷ তারাটি কী ধরনের গ্যাস দিয়ে তৈরি, এ ভাবে আমরা তার হদিশ পাই৷ সেই তথ্য দিয়ে আমরা বিভিন্ন গ্রহের আবহমণ্ডল সম্পর্কে জানতে পারি৷''
আমাদের এই পৃথিবী মিল্কি ওয়ে ছায়াপথের অংশ৷ কিন্তু ছায়াপথে কোটি কোটি অন্যান্য নক্ষত্র রয়েছে৷ এছাড়া সব গ্রহকে নিয়ে গবেষণা করা হয়নি; কাজেই তাদের সম্বন্ধে বিশেষ কিছু বলা সম্ভব নয়৷ সিদ্ধার্থ বলেন, ‘‘আমরা যদি অন্য কোনো গ্রহে প্রাণের সন্ধান পাই, এমনকি অতি সাধারণ জীবাণু অথবা কোষও যদি খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে সেটাই হবে একটা বিরাট অর্জন৷ সেভাবে আমার জানতে পারব যে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে আমরা একা নই৷''
স্পেনের রিও টিন্টো নদী, চিলি-র আটাকামা মরুভূমি কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্ক: এগুলি হল মানুষ কিংবা প্রাণীর জীবনধারণের পক্ষে অতি কঠিন ঠাঁই৷ এখানকার পরিবেশ হয় অতি গরম, নয়তো অতি বিষাক্ত – কিন্তু কিছু ব্যাকটেরিয়া এখানেও বেঁচে থাকতে পারে৷ সিদ্ধার্থ বলেন, ‘‘জীবন কীভাবে শুরু হয়েছে, আমরা জানি না৷ কিন্তু আমরা জানি যে, বহু প্রাণী এ সব জায়গায় প্রতিকূল পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারে – যেমন উচ্চ তাপমাত্রা, অম্ল কিংবা ক্ষার অথবা তেজস্ক্রিয়তা সহ্য করে৷ কিন্তু এ সব কিছু কীভাবে শুরু হয়েছে, তা আমরা জানি না৷''
একটি মহাকাশ অভিযানের ব্যয় কম নয়৷ মহাকাশে প্রাণের অনুসন্ধান করার এই ল্যাবোরেটরি প্রক্রিয়া সেই ব্যয় কমাতে সাহায্য করে: যেখানে প্রাণ নেই কিংবা ছিল না, সেখানে প্রাণের সন্ধান করে অর্থের অপচয় হয় না৷