1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাংসের বিকল্প হিসেবে সয়াবিনভিত্তিক খাদ্য

২৫ নভেম্বর ২০১৯

বিশ্বের অনেক প্রান্তে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাংস খাবার প্রবণতা বাড়লেও সার্বিকভাবে মাংস খাবার প্রবণতা কমছে৷ বিকল্প হিসেবে টোফু ও সয়াবিনভিত্তিক খাবারের চলও বাড়ছে৷ জার্মান এক কোম্পানি বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3TfPR
ছবি: DW

কাঠকয়লার চুলা থেকে পোড়া, খয়রি রংয়ের সসেজ জার্মানির মানুষের বড়ই প্রিয় খাবার৷ অথবা ভালো করে স্মোক করা মাংস, অনেকে যেমনটা পছন্দ করেন৷ মোটকথা, মাংস তাদের বড়ই পছন্দের খাবার৷ জার্মানরা বছরে গড়ে প্রত্যেকে প্রায় ৬০ কিলো মাংস খান৷ গোটা বিশ্বে ৩৪ কিলোর গড় হারের তুলনায় এই পরিমাণ অবশ্যই বেশি৷ কিন্তু কারি সসেজের দেশেও পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে৷

ফ্রাইবুর্গ শহরে চাষিদের হাটে সসেজের সম্ভারের মাঝে এক সবুজ ফুড ট্রাক রয়েছে৷ সেখানে অদ্ভুত আকারের সসেজ বিক্রি হচ্ছে৷ তবে মাংস নয়, সেগুলির উপাদান টোফু৷ টাইফুন টোফু কোম্পানির বিপণন বিভাগের প্রধান ইয়ুলিয়ান ফোয়রব্যার্গ-হেক পেশাগত কারণেই সেগুলি চেখে দেখছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মতে, এটা একটা সামগ্রিক প্রবণতা৷ উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্যগ্রহণের প্রবণতা বেড়েই চলেছে৷ আরো মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম সেই উদ্যোগে যোগ দিচ্ছে৷ কেউ এটাকে গ্রেটা-এফেক্ট বলছে৷ অনেকে নিজেদের ভোগের অভ্যাস নিয়ে প্রশ্ন তুলছে৷ উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিনের মধ্যে তাই বিশাল সম্ভাবনা লুকিয়ে রয়েছে৷ টোফুর বেড়ে চলা চাহিদার ফলে সেটা স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷’’

জার্মানির জনসংখ্যার মধ্যে খাঁটি ভেগানদের সংখ্যা মাত্র এক শতাংশের মতো৷ নিরামিষাশীদের অনুপাত সেই তুলনায় বেশি – ছয় থেকে দশ শতাংশের মতো৷ জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ মাংস খাওয়া কমানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেছে৷ সেটাই হলো সবচেয়ে বড় পরিবর্তন৷

এমন প্রেক্ষাপটে মাংসের বিকল্পের গুরুত্ব বাড়ছে৷ ফলে সয়া বিন এখন তারকার মর্যাদা পাচ্ছে৷ সয়া বিনের মধ্যে এত প্রোটিন রয়েছে যে, শুধু গবাদি পশুর খোরাক হিসেবে তা ব্যবহার করার অর্থ হয় না৷ সয়া বিন প্রক্রিয়াজাত করে টোফুর জন্য উপযুক্ত করে তোলা হচ্ছে৷ পরের ধাপে উত্তাপ যোগ করে ও চাপ দিয়ে এমন এক মণ্ড তৈরি করা হবে, যেটিকে যে কোনো আকার দেওয়া সম্ভব৷ স্টেফান হাউক মনে করেন, ‘‘এটা সূচনামাত্র৷ আমাদের কোম্পানি মানুষের পরিচিত খাদ্যের আদলে নিজস্ব টোফু সসেজ তৈরি করেছে৷ ফলে মানুষ আরো সহজে মাংসের বদলে পরিচিত দেখতে এই সসেজ খেতে পারেন৷ কিন্তু এবার নিজস্ব গুণাগুণসম্পন্ন খাদ্য সৃষ্টি করা জরুরি৷’’

মাংস নয়, তরুণদের পছন্দের তালিকায় টোফু!

কিন্তু উদ্ভিদভিত্তিক বিকল্পকে কি মাংসের মতো দেখতে হতেই হবে? নিরামিষাশীদের মধ্যে সেই বিতর্ক এখনো চলছে৷ তিরিশ বছরেরও বেশি সময় আগে টাইফুন টোফু কোম্পানি পত্তনের সময়েও সেই প্রশ্ন গুরুত্ব পেতো৷

পারিবারিক এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ১০০ টন টোফু উৎপাদন করে৷ উৎপাদন ক্ষমতার তুলনায় এই পরিমাণ অত্যন্ত কম৷ বিশেষ করে বর্তমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে এটা বিস্ময়কর বটে৷ কিন্তু ঘটনা হলো, সার্টিফাইড অরগ্যানিক টোফু অনেকটাই হাতে তৈরি করা হয়৷ তাছাড়া বিশ্বের অন্য অনেক অঞ্চলের তুলনায় জার্মানিতে টোফুর ব্যবহার কম৷ স্টেফান হাউক মনে করিয়ে দেন, ‘‘এশিয়া হলো মাতৃভূমি বা সব ধরনের সয়া পণ্যের মাতৃ-মহাদেশ৷ টোফু অনেক পণ্যের মধ্যে একটি৷ সেখানে অনেক শতাব্দী ধরে টোফু খাবার চল রয়েছে৷ তাই এটি মানুষের অন্যতম প্রধান খাদ্য হয়ে উঠেছে৷ প্রায়ই প্রাণিজ খাদ্যের সঙ্গেও এর মিশ্রণ ঘটে৷ এশিয়ায় টোফু ও মাছ, টোফু ও মাংস খাদ্যতালিকায় স্থান পায়৷’’

বাস্তবে এশিয়ায় খাবার প্লেটে মাংসের পরিমাণ বেড়েই চলেছে৷ যেমন, চীনে মাংস খাওয়া ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে৷ মানুষের হাতে টাকা এলেই টেবিলে মাংসের পরিমাণ বেড়ে যায়৷ চীনাদের মাথাপিছু মাংস খাবার পরিমাণ এর মধ্যেই জার্মানদের ছাড়িয়ে গেছে৷

তবে মাংস খাওয়া কমানোই বর্তমান প্রবণতা হয়ে উঠছে৷ ফলে গণস্বাস্থ্য ও জলবায়ুর উন্নতির সম্ভাবনা বাড়ছে৷

মারিয়ন হ্যুটার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য