প্রশ্নেই শনাক্ত করা যায় অবসাদ
২৫ জুলাই ২০১৩এঁদের মধ্যে বছরে কমপক্ষে ৯০০ জন আত্মহত্যার পথ বেছে নেন৷ তালিকার বাইরে এই সংখ্যাটা আরো অনেক বেশি হবে৷ ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সিদের মধ্যে দুর্ঘটনার পরেই আত্মহত্যায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটে৷ জানিয়েছে জার্মানির ফেডারেল পরিসংখ্যান দপ্তর৷ এছাড়া এর প্রায় ১০ গুণ বেশি ঘটে আত্মহত্যার প্রচেষ্টা৷
প্রায় ক্ষেত্রেই এই ধরনের দুর্ভাগ্য এড়ানো সম্ভব
অথচ প্রায় ক্ষেত্রেই এই ধরনের দুর্ভাগ্য এড়ানো সম্ভব, যদি অবসাদগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য করা যায়৷ এ জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত ‘থেরাপি'৷ ডিপ্রেশনের গভীরতা মাপার জন্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরীক্ষা করা যায়৷ এতে মানসিক অবস্থা যাচাই করার জন্য ২০টি প্রশ্ন রাখা হয়েছে৷ ডিপ্রেশনের রোগীদের (১৩ বছর বয়স থেকে) মানসিক অবস্থা ও পরিমাপ করা যায় এইসব প্রশ্নের মাধ্যমে৷
অংশগ্রহণকারীরা জানাতে পারেন গত দু'সপ্তাহে তাদের বিষন্নতা, হতাশা, ব্যর্থতার অনুভূতি, বিরক্তি, আনন্দহীনতা, অপরাধবোধ, অশান্তি, ইচ্ছাহীনতা, ক্লান্তি, যৌনতায় উৎসাহহীনতা, আত্মহত্যার চিন্তা ইত্যাদি অনুভূতি দেখা দিয়েছে কিনা৷
প্রতিটি প্রশ্নের চারটি সম্ভাব্য উত্তর দেওয়া থাকে৷ ‘না' থেকে ‘সবসময়'৷ এই পদ্ধতিতে কয়েক মিনিটের মধ্যে সংক্ষিপ্তভাবে রোগ নির্ণয় করা সম্ভব৷ ডিপ্রেশনের লক্ষণ বোঝা গেলে অনলাইন প্রোভাইডার সাধারণত চিকিৎসক বা থেরাপিস্টকে দেখানোর পরামর্শ দেয়৷
দ্রুত টেস্টে নিশ্চিত হওয়া
সম্প্রতি বার্লিনস্থ মাক্স প্লাঙ্ক ইন্সটিটিউটের কর্মীরা একটি দ্রুত টেস্টের প্রশ্নাবলী তৈরি করেছেন৷ যাতে মাত্র চারটি প্রশ্নের মাধ্যমে ডিপ্রেশনের পরিমাপ করা সম্ভব৷ ‘‘টেস্টের প্রশ্নগুলি সহজ সরল হওয়ায় অংশগ্রহণকারীদের পক্ষে তা বোঝা ও যোগাযোগ করাও সহজ হয়''৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান সমীক্ষাটির পরিচালক মিরিয়াম জেনি৷
এই প্রশ্নগুলি হলো:
- আপনি কী এই সপ্তাহে আগের চেয়ে বেশি কেঁদেছেন?
- আপনি কী এই সপ্তাহে নিজের ব্যাপারে হতাশ হয়েছেন বা নিজেকে ঘৃণা করেছেন?
- আপনি কী এই সপ্তাহে বিশেষ নিরাশার দৃষ্টিতে ভবিষ্যতকে দেখেছেন?
- আপনার কী এই সপ্তাহে নিজেকে একজন ব্যর্থ মানুষ বলে মনে হয়েছে?
এই প্রশ্নগুলির উত্তর ‘হ্যাঁ' হলে বোঝা যাবে যে ডিপ্রেশনের লক্ষণ আছে৷ হাউস ফিজিশিয়ান তখন একজন বিশেষজ্ঞকে দেখাতে পরামর্শ দেবেন৷
চিকিৎসকদের পক্ষেও সুবিধাজনক
এই টেস্টে কম সময় লাগে বলে চিকিৎসকদের পক্ষেও দেখাশোনা করা সুবিধাজনক৷ ‘‘ডাক্তারদের হাতে এখন আগের চেয়ে সময় কম৷ বিশেষ করে জরুরি অবস্থায় দ্রুত প্রশ্নোত্তরের ব্যবস্থা থাকাটা প্রয়োজন'', বলেন মিরিয়াম জেনি৷
১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সি ১৩০০ তরুণীর ওপর চালানো একটি সমীক্ষার ভিত্তিতে এই দ্রুত টেস্টের প্রশ্নগুলি করা হয়েছে৷ তাই শুধু এই বয়সি মেয়েদের জন্যই প্রযোজ্য এই প্রশ্নগুলি৷ মিরিয়াম জেনির ভাষায়, ‘‘পুরুষদের জন্য আমাদের কিছুটা ভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করতে হচ্ছে৷ বিশেষ করে কান্নার ব্যাপারে পুরুষদের ঘুরিয়ে প্রশ্ন করা প্রয়োজন৷ কেননা সামাজিকভাবে পুরুষরা কাঁদতে চান না বা কাঁদলেও স্বীকার করতে দ্বিধাবোধ করেন৷ তাই প্রশ্নগুলি বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে খাপ খাইয়ে তৈরি করতে হচ্ছে৷''
তবে রোগের চূড়ান্ত শনাক্তকরণ এইসব প্রশ্নের মাধ্যমে সম্ভব নয়৷ ‘‘এটা করতে পারেন কোনো মনঃরোগ বিশেষজ্ঞ বা থেরাপিস্ট'', বলেন মিরিয়াম জেনি৷