বর্ণবাদী হামলা
২২ আগস্ট ২০১২ঐ ঘটনার পর অ্যামেরিকানরা নতুন একটি শব্দ আবিষ্কার করেছিল বর্ণবাদী হামলা নিয়ে, ‘রস্টকিং'৷ অর্থাৎ জার্মানিতে বর্ণবাদী সেই হামলাটি এতটাই কুখ্যাত হয়েছিল গোটা বিশ্বের কাছে৷ এখনও মেকলেনবুর্গ ফোরপোমেন রাজ্যের সেই দিনটির ছবি অনেকের চোখে ভাসে৷ একটার পর একটা বাড়িতে আগুন জ্বলছে৷ আর তার সামনে উল্লাস করছে উগ্র নাৎসি সমর্থকরা৷ ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৯২ সালের ২২শে আগস্ট৷
রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা যে ভবনটিতে থাকতো, সেই ভবন লক্ষ্য করে হামলা চালায় নাৎসি সমর্থকরা৷ ভাঙচুর করে দরজা-জানালা, এরপর তাতে ধরিয়ে দেয় আগুন৷ একটার পর একটা বাড়িতে আগুন লাগার সেই ছবিতে হতবাক হয়ে পড়েছিল জার্মানির মানুষ৷ উগ্র জার্মানদের ঠেকাতে পুলিশ পাঠানো হয়, তবে সংখ্যায় তারা বেশি না হওয়ায় বর্ণবাদীদের ঠেকাতে পারেনি৷ সেই ঘটনারই কারণ নিয়ে গবেষণা করেছেন বার্লিনের ফ্রি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হাইয়ো ফুংকে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে তা হলো, রাজ্য ও শহর কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার পেছনে কিছুটা হলেও ইন্ধন জুগিয়েছিল এবং উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়নি৷ এই ধরণের সংঘবদ্ধ হামলার ব্যাপারে জানার পরও পরিস্থিতি দমনের জন্য রাজনৈতিক ইচ্ছারও অভাব ছিল বলে আমি মনে করি৷''
ভয়াবহ সেই বর্ণবাদী হামলা চালানো হলেও স্বস্তির কথা যে তাতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি৷ দুই রাত দুই দিন ধরে সেই তাণ্ডব চলে অভিবাসীদের ওপর৷ এখনও এই ঘটনা একটি রহস্যই হয়ে আছে৷ কারণ ঐ ঘটনায় ৪৪ জনকে গ্রেফতার করা হলেও, তাদের বেশিরভাগকেই হাল্কা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়৷ এই ঘটনার জন্য কর্তৃপক্ষের কাউকে জবাবদিহিও করতে হয়নি৷ সেই ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন ভিয়েতনাম থেকে আসা অভিবাসী থিন ডো৷ তিনি সেই ঘটনার কথা ভুলতে পারেন নি এখনও৷ তবে বর্তমানে এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা তিনি দেখেন না৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমার মনে হয় না রস্টকের মতো কোনো ঘটনা আবার ঘটবে৷ কারণ এখন এলাকাবাসী, পুলিশ আগের চেয়ে অনেক বেশি এই রকম দাঙ্গার ব্যাপারে সচেতন৷''
পর্যবেক্ষকদের মতে, বর্ণবাদী হামলা না ঘটলেও বৈষম্যমূলক আচরণ এখনও দেখা যায় জার্মানি সহ ইউরোপের অনেক দেশে৷
প্রতিবেদন: রিচার্ড ফুখস / আরআই
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ