রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনা, বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ
২৬ নভেম্বর ২০১৮ক্রাইমিয়া উপকূল থেকে রোববার ইউক্রেন নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ বাজেয়াপ্ত করে রুশ সেনারা৷ এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিকি হ্যালি৷
রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস এফএসবি বলছে, ‘‘কিয়েভ ইচ্ছাকৃতভাবে উসকানি দিতেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে৷'' ‘সঠিক সময়ে' সবই প্রকাশ করা হবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি৷
জাহাজ বাজেয়াপ্তের সময় দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে আহত তিন ইউক্রেনীয় সৈনিক এখন সুস্থ আছেন বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি৷
রোববার সকালে ক্রাইমিয়া এবং রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের মধ্যে কের্শ প্রণালী বন্ধ করে দেয় রুশ সেনারা৷রাশিয়ার দাবি, অনুমতি ছাড়াই ইউক্রেনের তিনটি জাহাজ তাঁদের সীমানায় প্রবেশ করেছে৷
দুটি গোলন্দাজ জাহাজ ও একটি টাগবোট কৃষ্ণ সাগরের ওডেসা থেকে কের্শ প্রণালী হয়ে আজোভ সাগরের মারিউপোল যাচ্ছিল৷
ইউক্রেনের নৌবাহিনী জানিয়েছে, রুশ কোস্ট গার্ডের একটি জাহাজ টাগবোটটিকে ধাক্কা দেয়৷ এর ফলে জাহাজের মূল কাঠামো ও ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷
তবে জাহাজ তিনটি বাজেয়াপ্ত করার পর কের্শ প্রণালী আবার উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে দেশটির সংবাদ সংস্থা আরআইএ৷
ইইউ, জার্মানি, ন্যাটোর প্রতিক্রিয়া
রাশিয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ করে উপযুক্ত ‘কূটনৈতিক আইনি ব্যবস্থা' নেয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে ইউক্রেন৷ এফএসবিকে এই নৌ চলাচল সম্পর্কে আগেই অবগত করা হয়েছিল বলেও দাবি ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের৷
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরশেঙ্কো সোমবার জানিয়েছেন, জরুরি অবস্থা জারির জন্য দেশটির পার্লামেন্টে প্রস্তাব তুলবেন তিনি৷ জরুরি অবস্থা জারি হলে, রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে পার্লামেন্টের অনুমতি ছাড়াই যুদ্ধাবস্থার সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো ক্ষমতা আসবে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটো দুই পক্ষকেই শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে, রাশিয়াকে আহ্বান জানানো হয়েছে কের্শ প্রণালীতে জাহাজ চলাচলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার৷
জার্মান উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিশায়েল রোঠ জার্মান পাবলিক রেডিওকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দুই পক্ষকেই এমন কোনো কাজ না করার আহ্বান জানিয়েছেন, যা ‘ভয়াবহ পরিণতি' ডেকে আনতে পারে৷
বাড়ছে উত্তেজনা
২০০৩ সালে এক চুক্তি অনুযায়ী, কের্শ প্রণালীর ওপর দুই দেশেরই অধিকার রয়েছে৷ কিন্তি ২০১৫ সালের পর থেকে রাশিয়া অঞ্চলটিতে প্রায় একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে৷
সবশেষ ঘটনার পর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা উত্তেজনা আরো বাড়ার আশংকা করছেন বিশ্লেষকরা৷
২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক মতামত অগ্রাহ্য করে ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া দখলে নেয় রাশিয়া৷ ক্রাইমিয়া পরবর্তীতে এক গণভোটের মাধ্যমে রাশিয়ায় যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়৷ এরপর থেকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা আরো বেড়ে গেছে৷
এডিকে/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)