রোহিঙ্গা শরণার্থী
৩ মার্চ ২০১৪
বিমস্টেক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোর প্রেসিডেন্ট প্যালেসে সোমবার দুপুরের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার এই আহ্বান জানান৷ জবাবে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট বলেন, শরণার্থীর বিষয়টি উভয় দেশের দ্বি-পাক্ষিক সমস্যা৷ দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার মধ্য দিয়ে নিজেদেরই এর সমাধান করা সম্ভব৷ প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমরের রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশকে অর্থনৈতকসহ নানা সমস্যায় ফেলছে৷ তাই মাতৃভূমিতেই তাঁদের ফিরে যাওয়া প্রয়োজন৷
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল জানান, রোহিঙ্গা সমস্যা ছাড়াও দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো জোরদার করার কথাও হয়েছে৷
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, তাঁর দেশের ব্যবসায়ীদেরও বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ আছে৷ দুই নেতা ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোর ও আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ নিয়ে কথা বলেছেন বলেও প্রকাশ৷
এছাড়া মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির সঙ্গে প্রথমবারে মতো বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ সোমবার দুপুরে মিায়ানমারের পার্লামেন্ট ভবনে গেলে দেশটির বিরোধী দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির চেয়ারম্যান, শান্তিতে নোবেল জয়ী সু চি তাঁকে আলিঙ্গনে বরণ করে নেন৷ আধ ঘণ্টার বৈঠক শেষে হাত ধরে শেখ হাসিনাকে গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি এই নেত্রী৷
ওদিকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার আহ্বানের ব্যাপারে ঢাকায় রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ব্যাপারে আমাদের মানবিক হতে হবে৷''
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাঁর অবস্থান জানিয়েছেন৷ রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বলেছেন৷ কিন্তু মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানরা নানা নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন৷ তাঁরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন৷ তাই এর মানবিক দিকটিও অনেক বড়৷''
তাই শান্তনু মজুমদার মনে করেন, রোহিঙ্গাদের ব্যাপরে রাষ্ট্রের অবস্থান এবং মানবিকতা এই দু'টি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়েই বাংলাদেশকে তার অবস্থান নিতে হবে৷ তিনি বলেন, এ জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও সম্পৃক্ত করে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে হবে মিয়ানমারকে৷
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এখন নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী ৩০ হাজার৷ কিন্তু এর বাইরে আরো ২ লাখের বেশি অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে বাংলাদেশে৷