1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শুভেন্দুর জমিতে লড়াই শুরু মমতার

স্যমন্তক ঘোষ নতুন দিল্লি
৭ ডিসেম্বর ২০২০

ব্ল্যাকমেল করবেন না। নাম না করে মেদিনীপুরের সভা থেকে শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

https://p.dw.com/p/3mJM0
ছবি: DW

২০০৭ সালে নন্দীগ্রাম আন্দোলনে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্ভবত সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সেনাপতি ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই পর্ব থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মেদিনীপুরে শুভেন্দুকে ছাড়া সম্ভবত একটিও সভা করেননি মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার সেই ঘটনাই ঘটল। পরিবহন মন্ত্রীর পদ থেকে শুভেন্দু পদত্যাগকরার পর তাঁর খাস তালুকেই জনসভা করলেন মমতা। গেলেন না অধিকারী পরিবারের একজন সদস্যও।

পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা কণিষ্ক পণ্ডা। তিনি শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী। সোমবার ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, শুভেন্দু অধিকারী কলকাতায়। ফলে তৃণমূলনেত্রীর সভায় যাওয়ার প্রশ্নই ছিল না। শিশির অধিকারীর (শুভেন্দুর বাবা) পায়ে অস্ত্রপচার হওয়ার জন্য তিনি সভায় যেতে পারেননি। শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দুও সভায় বিশেষ কারণে যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন কণিষ্ক।

অধিকারী পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, তৃণমূল শুভেন্দুকে সভায় যোগ দেওয়ার কথাই বলেননি। ফলে তাঁর সেখানে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। অন্য দিকে তৃণমূলের জন্যও এ দিনের সভা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, শুভেন্দুকে ছাড়াও যে অধিকারী গড়ে দল সভা করতে পারে, তা প্রমাণ করা জরুরি। সে কারণেই তড়িঘড়ি মমতা মেদিনীপুরে সভার পরিকল্পনা করেন বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি।

শুভেন্দু অধিকারী এর আগে জানিয়েছিলেন, রোববার সাংবাদিক বৈঠক করে পরবর্তী পদক্ষেপ তিনি জানাবেন। কিন্তু রোববার তা তিনি করেননি। শুভেন্দুর অনুগামীরা নাম প্রকাশ করা যাবে না এই শর্তে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, শনিবার রাতে মেদিনীপুরের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে শুভেন্দু বৈঠক করেছেন। এরপর তিনি কী করবেন, তার একটি রূপরেখাও দিয়েছেন। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠদের একাংশের বক্তব্য, ভোটের আগে শুভেন্দু কী করবেন, তা নিয়ে তাঁরাও খানিক অস্বস্তিতে। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিলে একরকম, তিনি আলাদা দল তৈরি করে লড়ার পরিকল্পনা করলে তা হবে আরেকরকম। সে কারণেই তাঁরাও বার বার শুভেন্দুকে নানা প্রশ্ন করছেন। সে কারণেই শনিবার রাতে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন শুভেন্দু। চলতি সপ্তাহে নিজের পরিকল্পনা সাংবাদিকদের তিনি জানাতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।

Indien Nandigram Denkmal Opfer der Polizeigewalt in 2007 Mamata Banerjee
মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী। সম্পর্ক যখন ভালো ছিল। ছবি: DW/Prabhakar Mani Tewari

মমতা অবশ্য শুভেন্দুকে ছেঁটে ফেলেছেন বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতৃত্ব সম্প্রতি ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, অভিষেক-শুভেন্দু বৈঠক পর্যন্ত মমতা ভেবেছিলেন, বরফ গলার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু ওই বৈঠকের পর দিনই শুভেন্দু বলেছিলেন, তাঁর পক্ষে একসঙ্গে কাজ করা কঠিন। তারপরেই শুভেন্দুকে ছেঁটে ফেলার পরিকল্পনা করেন মমতা। সূত্র জানাচ্ছে, একটি অনুষ্ঠানে শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারীকে মমতা বলেছেন, 'ছেলেকে সামলান'। যদিও প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

শুভেন্দু যাই করুন, তা যে একা করবেন না, তাও এখন অনেকটাই স্পষ্ট। গোটা অধিকারী পরিবারই তাঁর সঙ্গে আছে বলে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য। অন্য দিকে, সপ্তাহান্তে বাঁকা কথা বলতে শুরু করেছেন তৃণমূলের আর এক মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু প্রশংসাও করেছেন। তা হলে কি তিনিও শুভেন্দুর সঙ্গে যোগ দেবেন, রাজনৈতিক মহলে এ প্রশ্ন উঠছে।

মমতা এ দিন মেদিনীপুরের সভায় অতীতের কথা বলেছেন। মেদিনীপুরে তিনি কত আন্দোলন করেছেন, সে কথা বলেছেন। নাম না করে শুভেন্দুর প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেছেন, ''কেউ কেউ নির্বাচনের আগে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু কেউ কিছু করতে পারবে না।''

শুভেন্দু ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, মমতা যেখানে সভা করলেন, শুভেন্দুও সেই মাঠে সভা করতে পারেন। মমতার সভা থেকেও মেদিনীপুরে তিনি বেশি লোক জড়ো করার চেষ্টা করে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেন।

ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি স্যমন্তক ঘোষ
স্যমন্তক ঘোষ ডয়চে ভেলে, দিল্লি ব্যুরো