‘সংকট শুধু কাশ্মীরীদের নয়, বাংলাদেশেরও'
১৬ আগস্ট ২০১৯শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের গেইটে আয়োজিত সমাবেশের পরে ডয়চে ভেলেকে জনাব কাশেমী বলেন, ‘‘আমাদের এই আওয়াজ কাশ্মীরীদের সাহস জোগাবে। আমরা তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আমরা চাই সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ ফেরত আনা হোক। না হলে কাশ্মীরের জনগন স্বাধীনতার আন্দোলন শুরু করুক। বাংলাদেশের জনগণ তাদের পাশে থাকবে। আমরা তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। আমাদের প্রতিবাদ অব্যহত থাকবে।''
কি ধরনের সহযোগিতা করবেন? জানতে চাইলে নূর হোসেন কাশেমী বলেন, ‘‘এখন তো আমরা প্রতিবাদ করছি। এই প্রতিবাদ অব্যাহত রাখব। সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করব। পরে যদি কিছু করতে হয়, সেটা সময়ই বলে দেবে।'' সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এখনও সরকারকে আমরা কিছু বলিনি। প্রয়োজন হলে বলব। বাংলাদেশের মানুষ কাশ্মীরের জনগনের সঙ্গেই আছে, থাকবে।''
শুক্রবার যে সমাবেশটি হয়েছে সেটি ‘কাশ্মীরী সংহতি পরিষদ' এর নামে। সেখানে মূলত হেফাজতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরাই ছিলেন। ঈদের আগে একইভাবে সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এছাড়া বেশ কয়েকটি সংগঠন বিবৃতি পাঠিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। এর বাইরে ঢাকায় খুব একটা মিছিল সমাবেশ দেখা যায়নি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগরের (দক্ষিন) আমীর মাওলানা ইমতিয়াজ আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ অবৈধভাবে কাশ্মীরীদের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে মোদী সরকার। এজন্য বাংলাদেশের জনগণকে প্রতিবাদমুখর হতে হবে। আমরা সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছি, সামনে আরো বড় আন্দোলন করা হবে। আমরা সরকারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। প্রতিবাদ জানিয়েছি।''
সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি-না? জানতে চাইলে জনাব আলম বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে এখনও সরকারের কোন আলোচনা হয়নি। সরকারতো এটা নিয়ে ইতিমধ্যেই কাশ্মীরীদের বিরুদ্ধে অবস্থা নিয়েছে। সরকার বলছে, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কোনভাবেই এটা ভারতে অভ্যন্তরণীন বিষয় না। তারা আরো বলেছে, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ লাগলে আমরা ভারতের পক্ষেই থাকব। এর মানে কি দাঁড়ায়? ভারত যা করছে সব ঠিক? আমরা তাদের সমর্থন করে যাচ্ছি। এটা বলে বাংলাদেশ সরকার ঠিক কাজ করেনি।''
ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশে মুফতী ফজলুল করীম বলেন, ‘‘আমরা ভারতবিরোধী নই, ভারতের নীতি নৈতিকতা ও আদর্শের বিরোধী। মোদির এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভারতের সর্বস্তরের জনগণ এবং বুদ্ধিজীবীগণ প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, মোদির এই নীতি ভারতের গণতন্ত্রকে গলা কাটার শামিল এবং এতে করে ভারতই টুকরো টুকরো হবে। মোদি মুসলমানদের অধিকার কেড়ে নিয়ে তাদের উপর জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে। কাশ্মীর সাতচল্লিশের পর থেকে অগ্নিগর্ভ। বারবার রক্ত ঝরছে সাধারণ মানুষের। কাশ্মীরের আপামর জনতার মতামতকে উপেক্ষা করে ভারতের সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন করে সংকট সৃষ্টি করছে। কাশ্মীরের জনগণের মৌলিক অধিকার চরম হুমকির মুখে। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিশ্বনেতাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। তা না হলে ভবিষ্যতে এই সংকট আরো বড় আকার ধারণ করবে।''
প্রসঙ্গত, কাশ্মীর ইস্যুতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখনও কোন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘‘এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশ কোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।''