হাঙ্গেরিতে গণভোট
৩ অক্টোবর ২০১৬শীতল যুদ্ধের কমিউনিস্ট শাসনের সময়েও পূর্ব ইউরোপে যে দেশটিতে সামান্য হলেও কিছুটা খোলামেলা পরিবেশ ছিল, সেই হাঙ্গেরির বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইইউ-র বাকি দেশগুলিতে গভীর দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে৷ ভিক্টর ওরবান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় এসেও গণতন্ত্রের কাঠামো দুর্বল করে চলেছেন৷ ইউরোপীয় মূল্যবোধের তোয়াক্কা না করে তিনি সংবাদমাধ্যমের অধিকার খর্ব করেছেন, বিরোধীদের কার্যকলাপ সঙ্কুচিত করেছেন৷
এবার ইউরোপে শরণার্থীদের ঢল সামলাতে ইইউ সব সদস্য দেশের মধ্যে বহিরাগতদের ভাগ করে দিতে যে কোটা ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন তিনি৷ আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ওরবান গণভোটের মাধ্যমে নিজের অবস্থান আরও জোরদার করতে চেয়েছিলেন৷ ৫ কোটি ইউরোর বেশি ব্যয় করে প্রচারণা চালানো হয়েছিল৷ তাতে বহিরাগতদের সম্পর্কে নানা ভুল ধারণা ও তথ্যও ছড়ানো হয়েছিল৷ কিন্তু রবিবারের গণভোটে ৪০ শতাংশেরও কম ভোটার অংশ নেওয়ায় ফলাফল অবৈধ ঘোষণা করতে হয়েছে৷
অসহায় শরণার্থীদের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেও ধনী বিদেশিদের স্বাগত জানাতে মোটেই আপত্তি নেই ওরবান প্রশাসনের৷ প্রলোভনের মাধ্যমেও সেই কাজ করতে প্রস্তুত সরকার৷
তবে যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৯৮ শতাংশেরও বেশি ইইউ নির্ধারিত কোটার বিরুদ্ধেই রায় দিয়েছেন৷ ফলে তাতেই সান্ত্বনা পেয়ে ওরবান গণভোটের ফলাফলকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ রবিবার সকালেই তিনি অবশ্য জানিয়ে দিয়েছিলেন, যে গণভোটের ফল যাই হোক না কেন, হাঙ্গেরির সংসদ ইইউ কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷ ইউরোপীয় আদালতেও কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ওরবান-এ সরকার৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক নেতৃস্থানীয় কর্তাব্যক্তিরা অবশ্য গণভোটর ফলাফলকে ওরবান-এর পরাজয় হিসেবে তুলে ধরছেন৷ লুক্সেমবুর্গ-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ আসেলবর্ন বলেন, হাঙ্গেরির মানুষ দেখিয়ে দিলেন, যে তাঁরা ওরবান-এর সরকারের তুলনায় অনেক বেশি ইউরোপপন্থি৷ ইউরোপীয় উদারপন্থি শিবিরের নেতা গি ফ্যারহোফস্টেট-ও একই সুরে ওরবান-এর সমালোচনা করেন৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, এপি)