সমর্থন পেলেন ওবামা
৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের ব্যাপারে ৬০ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে সিনেট৷ শর্ত সাপেক্ষে এটি আরো ৩০ দিন বাড়ানো যেতে পারে৷ তবে সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী কোনো ধরনের স্থল হামলা চালাতে পারবে না৷ বুধবার সিনেটের বৈদেশিক পরিষদ এ ব্যাপারে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে৷ অনুমোদন পাওয়ার পর, ৯ সেপ্টেম্বর সব সিনেটরদের ছুটি থেকে ফিরে আসার পর এই খসড়া প্রস্তাবে ভোটাভুটি হবে৷
রিপাবলিকানদের পাশে পাচ্ছেন ওবামা
এরইমধ্যে বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য ওবামার প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছেন৷ এরা হলেন মার্কিন কংগ্রেসের স্পিকার জন বোয়েনার এবং হাউজে রিপাবলিকান দলের প্রধান এরিক ক্যানটর৷ এমনকি বোয়েনার এই ইস্যুতে সব রিপাবলিকানকে একজোট হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন৷
তবে মার্কিন জনগণের মতামত এক্ষেত্রে ভিন্ন৷ মঙ্গলবার প্রকাশিত দুটি জরিপে দেখা গেছে, বেশিরভাগ অ্যামেরিকানই সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপের বিপক্ষে৷
এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ যেভাবে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্রকে এখন ব্যবস্থা নিতেই হবে, কেননা, পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ দেশ উত্তর কোরিয়া এবং ইরান এই ইস্যুটির উপর নজর রাখছে এবং সিরিয়ার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তীতে তাদের কোনো ইস্যু মোকাবেলা কঠিন হয়ে পড়বে৷
সিরিয়ায় সামরিক অভিযান চালানো হবে কিনা সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আজই একটি জরুরি বিতর্কে বসতে যাচ্ছে ফ্রান্সের পার্লামেন্ট৷ যদিও পার্লামেন্টের অনুমোদন ছাড়াই হামলার নির্দেশ দেয়ার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের রয়েছে৷
পুরো ইউরোপের সমর্থন চাইছে ফ্রান্স
সিরিয়া সংকট সমাধানে এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স৷ জার্মান প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউকের সঙ্গে বুধবার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ বলেন, ইউরোপের দেশগুলোর অবশ্যই উচিত এই ইস্যুতে একজোট হওয়া৷ ফরাসি প্রেসিডেন্ট জানান, সিরিয়ায় সেনা অভিযানের ব্যাপারে মার্কিন কংগ্রেসে ভোটাভুটি হবে, তবে ফ্রান্স সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সহায়তা দেয়ার পক্ষে৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মিত্রতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জার্মান প্রেসিডেন্ট ইওয়াখিম গাউক তিন দিনের সফরে বর্তমানে ফ্রান্সে অবস্থান করছেন৷ তিনি এমন সময় এই সফর করছেন যখন সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালানোর জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সহযোগিতা চাইছে ফ্রান্স৷
সিরিয়ার জনগণের উপর রাসায়নিক অস্ত্র হামলার নিন্দা জানিয়ে জার্মান সরকার বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও সহযোগী দেশগুলোর মতো তাদেরও সন্দেহ যে ঐ হামলার পেছনে আসাদ সরকারের হাত রয়েছে, কিন্তু সেদেশে সামরিক হামলা চালানোর পক্ষে মত নেই তাদের৷ এই হামলার বিরুদ্ধে সঠিক পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান গাউক৷ তিনি বলেন, আদর্শগতভাবে মিত্র দেশগুলোর সাথে তাদের মতের ভিন্নতা নেই৷ সিরিয়ার নিরপরাধ মানুষের উপর এরকম জঘন্য রাসায়নিক হামলার নিন্দা জানান তিনি৷ গাউক জানান, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল মনে করেন, জি-২০ সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা একজোট হয়ে সিরিয়া ইস্যুতে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন৷
ফ্রান্সের তদন্ত সংস্থার সোমবারে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে লেখা হয়েছে, এই হামলা সরাসরি প্রেসিডেন্ট আসাদের নির্দেশেই হয়েছিল এবং এটি প্রকাশের পর ফ্রান্সকে সতর্ক করে দিয়ে আসাদ বলেছিলেন, হামলা চালানোর জন্য ফ্রান্স জোর করে তার উপর দোষ চাপাতে চাইছে৷
ওদিকে সিরিয়া ইস্যুতে আলোচনা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা শনিবার লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়ুসে একজোট হচ্ছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন কেরিরও সেখানে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে৷
গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিল আসাদবাহিনী
সিরিয়ায় সামরিক পদক্ষেপের ব্যাপারে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স তোড়জোর শুরু করেছে, তখন বসে নেই সিরিয়া সরকারও৷ সিরিয়া বিষয়ক ব্রিটিশ মানবাধিকার সংগঠন সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ১০ দিনের সংঘর্ষ ও সহিংসতার পর সিরিয়ার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর আরিহার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী৷
এপিবি/ডিজি (এএফপি, এপি, রয়টার্স)